শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

সবজির স্মরণকালের সর্বনিম্ম, আবার ভোজ্যতেল সংকট, বাড়ছে চালের দাম

  • Update Time : শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫, ৫.৫৪ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সাংরাশ

২০১৩-১৪ সালের পরে এ বছর কৃষক পর্যায়ে সবজির দাম সব থেকে কম

ভেজাল তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ -১৯০ টাকায়

রাজধানীতে মোটা চাল ৬০-৬২ টাকামাঝারি মানের চাল ৬৮-৭২ টাকা এবং উন্নতমানের চাল ৮৫-৯৮ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ কৃষকদের কাছে ১৮-২৬ টাকা প্রতি কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।


সবজির দাম এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছেযা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও কৃষকদের জন্য উদ্বেগজনক। বিশেষ করে আলু ও বিভিন্ন সবজির বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছেযা ২০১৩-১৪ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর

কৃষি অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী কৃষক পর্যায়ে এই অস্বাভাবিক কম ছিল। উদাহরণস্বরূপফুলকপি সর্বোচ্চ ৬ টাকা প্রতি পিসমূলা ৪ টাকা প্রতি কেজিটমেটো ১০-১২ টাকাশসা ৮-১০ টাকাশালগম ৮-১২ টাকাশিম ১৪-২২ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ১৮-৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

গত সপ্তাহে বাজারে ফুলকপির দাম রিকশাভ্যানে পরিবহনকারী বিক্রেতারা মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি করেছেনযেখানে কাঁচা বাজারে এর দাম ছিল ১৫-২৫ টাকা প্রতি পিস। একইভাবে বাঁধাকপিমূলাটমেটোশিমশালগমসহ অন্যান্য সবজির দামও ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে।

মূলার দাম প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকাশালগম ২৫-৩০ টাকাটমেটো ও শসা ৩০-৪০ টাকাশিম ৩০-৫০ টাকাধনেপাতা ৬০-৮০ টাকাকাঁচা মরিচ ৬০-৮০ টাকাএবং পাতা সবজি প্রতি আঁটি ৫-১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ঢাকার বাজারে আলুর দাম বর্তমানে ২০-৩০ টাকা প্রতি কেজিতবে উৎপাদনকারী জেলাগুলিতে এটি মাত্র ১০-১২ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম মানভেদে ৩৫-৫০ টাকা প্রতি কেজিতে নেমে এসেছেযেখানে কৃষকদের কাছে এটি ১৮-২৬ টাকা প্রতি কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

মোহাম্মদপুর কৃষি বাজারের বিক্রেতা মোহাম্মদ খোরশেদ জানানগত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে সবজির দাম তুলনামূলক অনেক বেশি ছিল। তখন আলুর দাম ছিল ৮০ টাকা প্রতি কেজি এবং টমেটো ২৬০-৩০০ টাকা প্রতি কেজি পর্যন্ত উঠেছিল।

অস্থায়ী সরকার আলুর বাজারে হস্তক্ষেপ করে আমদানি শুল্ক কমানো এবং ২ লাখ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর থেকেই দাম পড়তে শুরু করেছে। সরকার সম্প্রতি আলু আমদানির জন্য আরও নয়টি স্থলবন্দর উন্মুক্ত করেছেযা বাজারে আরও প্রভাব ফেলছে।

এদিকেদেশীয় সবজিআলু এবং পেঁয়াজ উৎপাদন ভালো হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। চলমান রবি মৌসুমে (নভেম্বর থেকে মার্চের মাঝামাঝি) ১ কোটি ৪১ লাখ টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেনএ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

সবজি উত্‌পাদক ও ব্যবসায়ীরা বলছেনঅর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় অভিজ্ঞতা না থাকায় এক ধরনের নার্ভাসনেস থেকে তারা ভবিষ্যত চিন্তা না করে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে কৃষকদের সর্বশান্ত হ বার পথে ঠেলে দিয়েছে

বাংলাদেশ কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলেনকৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের দাম তলানিতে নেমেছেঅথচ আমদানিকারকদের হাতে থাকা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছেই। গমচিনিভোজ্যতেলডাল এবং চালের দাম কয়েক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেনযেন অন্তত ৫০০ আমদানিকারককে বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ দেওয়া হয়যাতে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এমন একজন বলেনসবজি চাষিদের জন্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরিকারণ তারা জাতীয় খাদ্য উদ্বৃত্তে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তিনি প্রস্তাব করেন২০ লাখ সবজি চাষিকে ৫০০০ টাকা নগদ সহায়তা প্রদান করা উচিত।

এছাড়াওসবজি ও অন্যান্য নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্যের জন্য মানসম্মত কোল্ড স্টোরেজ ও কুল চেইন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

অন্যদিকে ভোজ্যতেলের বাজারে আবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ পরিশোধকরা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেফলে রাজধানীর অনেক মুদি দোকানে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল তেল ১৮৫-১৯০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করছেযেখানে খোলা সয়াবিন তেল ১৮০-১৮৫ টাকা এবং পাম তেল ১৭৫-১৮০ টাকা প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে।

সরকারের সাথে সমঝোতার পর গত ১৬ ডিসেম্বর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলযা ৮ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র দুই-তিন সপ্তাহ পর থেকেই সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়যা ভোক্তাদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকেচালব্রয়লার মুরগিগরুর মাংসখাসির মাংস এবং চাষের মাছের দাম আগের উচ্চ পর্যায়েই রয়ে গেছে। রাজধানীতে মোটা চাল ৬০-৬২ টাকামাঝারি মানের চাল ৬৮-৭২ টাকা এবং উন্নতমানের চাল ৮৫-৯৮ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024