সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১.৩ মিলিয়ন টন কম হতে পারে।
২. ঘাটতির ফলে চালের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে সরু চালের মূল্য ১৪ শতাংশ, মাঝারি চালের মূল্য ১৭ শতাংশ এবং মোটা চালের মূল্য ৭ শতাংশ বেড়েছে।
৩. ১০ লাখ টন আমদানীর লক্ষ্য: এ পর্যন্ত ৩.৭৮ লাখ টন (৩৭.৮ শতাংশ) চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে
৪. ডিসেম্বর ২০২৪-এ সরকারি খাদ্য মজুত ছিল মাত্র ১১ লাখ টন, যা আগের সময়ের তুলনায় কম।
কৃষি মন্ত্রণালয় ২০২৫ অর্থবছরের জন্য ২২.৬ মিলিয়ন টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি। ২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে আমন উৎপাদিত ও আহরণ করা হয়েছে তবে এর আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য গত কয়েক বছরে ফসল উৎপাদন, বিশেষ করে চাল ও গমের উৎপাদন স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, আগস্ট ২০২৪-এর বন্যার কারণে আমন চাষ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে কম হতে পারে। বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১.৩ মিলিয়ন টন কম হতে পারে। যার ফলে চালের বাজারমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায়, বোরো চাষের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, মাথাপিছু চালের ভোগ কমছে – ২০১৬ সালে যেখানে ৩৬৭.২ গ্রাম ছিল, ২০২২ সালে তা কমে ৩২৮.৯ গ্রামে দাঁড়িয়েছে। তবে, চালের বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ইঙ্গিত করে যে, শিল্পক্ষেত্রে কাঁচামাল হিসেবে চাল ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
চাল ও গম আমদানি
২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে চালের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে মোট ২.৮ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই বেসরকারি খাতের মাধ্যমে। বাজারের অস্থিতিশীলতা বিবেচনায় সরকার ৭ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করেছে, যা ২০১৮ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ হবে।
চালের ঘাটতির ফলে চালের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে সরু চালের মূল্য ১৪ শতাংশ, মাঝারি চালের মূল্য ১৭ শতাংশ এবং মোটা চালের মূল্য ৭ শতাংশ বেড়েছে।
চাল ও গম সংগ্রহ
সরকার ২০২৫ অর্থবছরে ১০ লাখ টন আমন ধান, সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা ২০২৪ অর্থবছরের তুলনায় বেশি। তবে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সংগ্রহ কম হয়েছে – এ পর্যন্ত ৩.৭৮ লাখ টন (৩৭.৮ শতাংশ) চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
সরকারি খাদ্য মজুত
ডিসেম্বর ২০২৪-এ সরকারি খাদ্য মজুত ছিল মাত্র ১১ লাখ টন, যা আগের সময়ের তুলনায় কম। খাদ্য মজুতের এই হ্রাস প্রধানত চালের মজুত কমে যাওয়ার কারণে হয়েছে।
সার সরবরাহ
দেশীয় সার উৎপাদন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। ২০১০ অর্থবছরে যেখানে ১১.৪ লাখ টন সার উৎপাদিত হতো, ২০২৪ অর্থবছরে তা কমে ৬.৬ লাখ টনে নেমে এসেছে। আমদানি করা সারের সরবরাহও কমেছে, ফলে কৃষকেরা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ২-১১ টাকা বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
উৎপাদন ব্যয়
চাল উৎপাদনের ব্যয় সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। উচ্চ সার, কীটনাশক, বীজ, সেচ, জমি ভাড়া, শ্রম ও যন্ত্রপাতির ব্যয় এই বৃদ্ধির মূল কারণ।
Leave a Reply