সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. চাল আমদানী করতে হবে সাড়ে চার লাখ টন
২. বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে আমদানী বাধাগ্রস্থ হতে পারে
৩. ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রার মান কমে যাওযায় ব্যবসায়ীদের জন্যে আমদানী ব্যয়বহুল করে তুলেছে
৪. মূল্যস্ফীতি দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্যে খাদ্য সংকটে ফেলে দিচ্ছে
জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বর্তমান অর্থবছর ২০২৪-২৫ এর জন্য পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বেশি চাল ও গম আমদানী করতে হবে বেশি।
তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী সিরিয়াল বা শর্করা জাতীয় খাদ্য আমদানির মধ্যে বাংলাদেশে প্রধানত গম থাকে বেশি। যেহেতু বাংলাদেশ গম চাষকারী দেশ নয়। দেশের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ পূরণ করা হয় আমদানীর মাধ্যমে। পাশাপাশি সামান্য পরিমাণে চালা এবং ভুট্টাও আমদানী করা হয়ে থাকে বলেএফএও এর প্রতিবেদন বলা হয়েছে।
এফএও জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার বছরে চালের আমদানির প্রয়োজন ৪,৫০,০০০ টন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গমের আমদানি গড় ৬১ লাখ টনের কাছাকাছি পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ ২১ লাখ টন গম- আমদানির একটা পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গম শুধু মানুষের খাদ্য নয় পশুসম্পদ এবং মৎস্য শিল্পের জন্য খাদ্যের প্রয়োজনীয়তার জন্যেও গমের দরকার।
এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সিরিয়াল আমদানি গড় স্তরের চেয়ে অনেক কম ছিল, কারণ দেশের আমদানির সক্ষমতা হ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং মে ২০২২ থেকে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত জাতীয় মুদ্রা (টাকা) এর উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়নের কারণে সীমাবদ্ধ ছিল।
“যেহেতু বর্তমানে জাতীয় মুদ্রা দুর্বল এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কম, এ কারণে দেশটিতে ২০২৪-২৫ সালে তার আমদানির প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণরূপে পূরণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।”
অক্টোবর-ডিসেম্বরে খাদ্য নিরাপত্তা খারাপ হয়েছে
জাতিসংঘের সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রায় ২.৩৬ কোটি মানুষ ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উচ্চ মাত্রার তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয় যা এপ্রিল-অক্টোবর ২০২৪ সময়কালের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা১.৬৫ কোটি মানুষের তুলনায় বেশি।
খাদ্য নিরাপত্তার পরিস্থিতির অবনতি মূলত বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড় রেমালের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে, যা প্রায় ১.৯ কোটি মানুষকে প্রভাবিত করেছে এবং ফসল, পশুসম্পদ, খাদ্য মজুদ এবং কৃষি অবকাঠামোর গুরুতর ক্ষতি করেছে, এফএও বলেছে।
“এছাড়াও, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে গড়ের চেয়ে বেশি সিরিয়াল ফসলের ফলন সত্ত্বেও, যা খাদ্যের প্রাপ্যতা উন্নত করেছে, খাদ্যে প্রবেশাধিকারের বিষয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে, কারণ স্থায়ী উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুর্বল পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করে।”
এফএও জানিয়েছে, আগস্ট ২০২২ থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ স্তরে রয়েছে। অক্টোবর ২০২৪-এ, এটি ১২.৭ শতাংশ অনুমান করা হয়েছিল, যা উচ্চ উৎপাদন এবং পরিবহন খরচ, কম সিরিয়াল আমদানি – বিশেষ করে প্রধান খাদ্য গম – এবং টাকার তীব্র অবমূল্যায়নের কারণে আমদানিকে আরও ব্যয়বহুল করেছে।
Leave a Reply