সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. গত বছরের তুলনায় কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি
২. ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি কম হওয়ায় গত দুই মাসে ছোলার দাম বাড়ছে।
৩. আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম এখনও বেশি। অস্ট্রেলিয়ার ছোলা প্রতি টন ৭৮০-৮০০ ডলার দরে বিক্রি হচ্ছে, এর ওপর রয়েছে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ।
৪. আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে স্থানীয় বাজারে মসুর ডাল ও ছোলার মজুদ ও সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকার খুচরা বিক্রেতারা বর্তমানে ভালো মানের ছোলা প্রতি কেজি ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন, আর সাধারণ মানের ছোলার দাম ১২০-১৩০ টাকা, যা স্থানীয় মুদি দোকানগুলোর তথ্য অনুসারে জানা গেছে।
রমজানের প্রধান ইফতার উপকরণগুলোর মধ্যে অন্যতম ছোলার দাম রমজানের এক মাস আগেই ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশনের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত রমজানে ছোলার দাম প্রতি কেজি ১১০-১৩০ টাকার মধ্যে ছিল, ফলে এবারের মূল্যবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
শান্তি নগরের মুদি দোকানি আসাদুল জানান, গত সপ্তাহে ভালো মানের ছোলার দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা কমলেও এটি এখনও গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ টাকা বেশি। তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা সীমিত সরবরাহ রাখায় এবং উচ্চ মূল্যে পণ্য ছাড়ার ফলে দাম বেড়েছে।
মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী করিম খান বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি কম হওয়ায় গত দুই মাসে ছোলার দাম বাড়ছে। বর্তমানে আমদানিকারকরা সাধারণ ছোলা প্রতি কেজি ৯৫-৯৮ টাকা এবং ভালো মানের ছোলা ১২৫-১৩০ টাকা দরে সরবরাহ করছেন।
এছাড়া রমজানে জনপ্রিয় ‘ডাবরি’ জাতের সবুজ মটর প্রতি কেজি ৭৫-৭৮ টাকায় মৌলভীবাজারে বিক্রি হচ্ছে, তবে খুচরায় এটির দাম ৯০-৯৫ টাকা।
আবদুর রশিদ বলেন, খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি দামের তুলনায় অনেক বেশি মূল্য আদায় করছেন, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
তবে আমদানিকারকরা আশা করছেন, জানুয়ারি থেকে আমদানি বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে পারে।
চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ট্রেডার্সের ম্যানেজার বলেন, জানুয়ারিতে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টন ছোলা আমদানি হয়েছে এবং ফেব্রুয়ারিতে এ হার দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম এখনও বেশি। অস্ট্রেলিয়ার ছোলা প্রতি টন ৭৮০-৮০০ ডলার দরে বিক্রি হচ্ছে, এর ওপর রয়েছে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৪৩,০০০ টন ছোলা আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তবে জানুয়ারির জন্য খোলা এলসি-র পরিমাণ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে আমদানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিটিটিসির হিসাবে, রমজানে ছোলার সর্বোচ্চ চাহিদা প্রায় ৮০,০০০ টন। কমিশন পরামর্শ দিয়েছে যে, আমদানি খরচ মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং রাজস্ব ও আর্থিক নীতিগুলো স্থিতিশীল রাখতে হবে।
এ প্রসঙ্গে, বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।
বিটিটিসি আরও বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে স্থানীয় বাজারে মসুর ডাল ও ছোলার মজুদ ও সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে ছোলার দাম বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক ও অনৈতিক– বিশেষ করে রমজানের আগে।
Leave a Reply