সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ভাষার গান’ নিয়ে আসছেন রিজিয়া ও দিঠি ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৫৮) আমেরিকা- ভারত সম্পর্ক ২১ শতকের বিশ্ব রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হবে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রেশন–সুবিধা চালুর প্রস্তাব ডেমোক্র্যাটরা মাস্ক ডেরেঞ্জমেন্ট সিনড্রোমে ভুগছে প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৯২) কিয়েভ রাশিয়ার সাথে শান্তি আলোচনা শুরুর আগে ‘নিরাপত্তা গ্যারান্টি’ চায় বুর্জোয়া নেতৃত্ব না থাকায় আমেরিকার ডেমোক্র্যাট দল এখন বিপাকে অ্যাপল এনক্রিপশণ সেবাকে বিপজ্জনক বলছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা মোবাইল ইন্টানেটের অব্যবহৃত ডাটা পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত করতে হাইকোর্টের রুল

অর্থনীতি কি সংকোচন মূলক মুদ্রানীতির ফাঁদে পড়ে গেছে

  • Update Time : সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৩.১৪ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

. ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি ১১.৬৬ শতাংশে পৌঁছায়। প্রায় দুই বছর ধরে একটি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও, মুদ্রাস্ফীতি দ্বিগুণ অঙ্কেই ছিল

রপ্তানি ও আমদানি উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটি অর্থনৈতিক সংকট ও সংকোচনমূলক নীতির প্রত্যক্ষ পরিণতি।

আইএমএফ-এর অর্থনীতিবিদরা তখনকার সমস্যাকে অতিরিক্ত ব্যয়ের ফলাফল হিসেবে ধরে নিয়ে চাহিদা নিয়ন্ত্রণের কড়া সুপারিশ করেছিল।

  সরকার পরিবর্তন হলেও মুদ্রানীতিতে কোনো বড় পরিবর্তন আনা হয়নি। এর আগের সরকারের মুদ্রানীতি, যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ এর সহায়তায় প্রণীত হয়েছিল, তা এখনও কার্যকর রয়েছে। বর্তমান গভর্নরও  যিনি আইএমএফ এর একজন পুরানো কর্মকর্তা তাই এ নীতি কার্যকর করতে তিনি যোগ্য ব্যক্তি। তিনি ইতোমধ্যে কিছু পরিবর্তন এনেছেন।  ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করার একটা চেষ্টা দেখা যাচ্ছে।

এই মুদ্রানীতি কার্যকরের সময় দুই বছরেরও বেশি। সাধারণত একটি মুদ্রানীতি এত দীর্ঘ সময় চালু থাকলে তার প্রভাব স্পষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো জনগণ যে আর্থিক স্বস্তির প্রত্যাশা করেছিল, তা আসেনি। অনেকেই এখন হতাশ হয়ে পড়ছে।

মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য হলো মুদ্রা ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এর জন্য মুদ্রাস্ফীতির হার একটি নিম্ন স্তরে, সাধারণত ২-৪ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা জরুরি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারও নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন, যাতে দেশীয় মুদ্রার মূল্য হ্রাস না পায়। পাশাপাশি, মোট দেশজ উৎপাদন (GDP)-এর প্রবৃদ্ধির হার একটি গ্রহণযোগ্য স্তরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে। তাই মুদ্রানীতির সাফল্যকে এই লক্ষ্যের বাস্তবায়নের ভিত্তিতেই মূল্যায়ন করা উচিত।

বাংলাদেশের ভোক্তা মূল্য সূচক ২০২২ সালের শুরু থেকে উর্ধমূখী ধারায় রয়েছে এবং এখনো তা অব্যাহত। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি ১১.৬৬ শতাংশে পৌঁছায়। প্রায় দুই বছর ধরে একটি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও, মুদ্রাস্ফীতি দ্বিগুণ অঙ্কেই ছিল। একই সাথে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে টাকার মূল্য ৪০ শতাংশের বেশি কমেছে। এটি পণ্যের দামের ওপর শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করেছে। মুদ্রানীতি যেন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনীতিকে উদ্দীপিত করা বা টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

মুদ্রাস্ফীতির চাপ ও বিনিময় হারের অবমূল্যায়নের ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়াতে এবং অর্থ সরবরাহ হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছিল। এটি স্পষ্টভাবে মাসিক কল মানি রেটের প্রবণতা থেকে বোঝা যায়, যা ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ট প্রচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের মধ্যে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন ও সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা থেকেও আয়ের নিম্নগতি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। রপ্তানি ও আমদানি উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটি অর্থনৈতিক সংকট ও সংকোচনমূলক নীতির প্রত্যক্ষ পরিণতি।

বর্তমান মুদ্রানীতির দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল সম্ভবত ২০২২ বা তার আগের অর্থনৈতিক তথ্যের ওপর, যখন অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে চাঙ্গা ছিল বলে ধরা হয়। আইএমএফ-এর অর্থনীতিবিদরা তখনকার সমস্যাকে অতিরিক্ত ব্যয়ের ফলাফল হিসেবে ধরে নিয়ে কড়া চাহিদা নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু বাস্তবে, অর্থনীতি ততক্ষনে সংকুচিত হচ্ছিল এবং ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয়ও বাড়ছিল। এই অবস্থায় সংকোচনমূলক নীতির প্রভাব মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট ছিল না এবং অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধির ফাঁদে পড়ে গেছে মনে অনেকে মনে করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024