সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৪ অপরাহ্ন

চিকিৎসা সেবায় ভোগান্তি বন্ধ ও মান উন্নয়নের দাবিতে মানব বন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৬.৪৭ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক 

চীন সরকারের অনুদানে দেশের শিল্প ও বানিজ্য নগরী চট্টগ্রামে পুর্নাঙ্গ বার্ন হাসপাতাল দ্রুত নির্মান ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় ওষুধ, ডায়াগনষ্টিক টেস্টে কমিশন বানিজ্য বন্ধ ও রোগীদের ভোগান্তি নিরসনে সেবান মানউন্নয়নে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(চট্টগ্রাম) ও যুব ক্যাব চট্টগ্রাম।

০৪ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ক্যাব যুব গ্রুপ আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চান্দগাও থানা সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, সদরঘাট থানা সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন চৌধুরী, চকবাজার থানা সভাপতি আবদুল আলীম, ক্যাব যুব গ্রুপের রাসেল উদ্দীন, সিদরাতুল মুনতাহা, রায়হান উদ্দীন, নাফিসা নবী, রাইসুল ইসলাম, এমদাদুল ইসলাম, ফয়েজ, ক্যাব মহানগরের সাজ্জাদ উদ্দীন, এডাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোহাম্মদ ফোরকান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ৫ম বর্ষের সাকিব হোসেন, আবরার আল ফয়সাল সিয়াম, ফজলে সোবহান সাকিব, অধিকার চট্টগ্রামের ওসমান জাহাঙ্গীর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, বন্দর সুবিধার কারণে গড়ে উঠেছে ইস্পাত কারখানা, সিমেন্ট, জাহাজ ভাঙা শিল্প, পোশাক কারখানা, রাসায়নিক কারখানা, জুতা কারখানা, কনটেইনার ডিপোসহ আমদানি, রপ্তানি ও ট্রেডিং ব্যবসার বহুমাত্রিক হালকা ও ভারী শিল্প কারখানা এবং প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এছাড়াও শুধুমাত্র চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় কোটি মানুষের বসবাস হলেও দেড় দশকেও চট্টগ্রামে পূনাঙ্গ বার্ন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয় নাই। যার কারণে অগ্নি ও বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার কোন সুযোগ-সুবিধা চট্টগ্রামে নাই। আগুনে পোড়া, গরম পানিতে ঝলসানো ও বৈদ্যুতিক শকে দগ্ধ রোগী প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মাত্র ২৬টি বেড আছে। যেখানে মাসে গড়ে ৯০০ থেকে ১০০০ রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপতুল। চমেক এদাঞ্চলের ৫ কোটির অধিক মানুষের একমাত্র রেফারেন্স/টার্সিয়ারি হাসপাতাল হলেও আগুনে পুড়ে যাওয়া বেশিরভাগ রোগীকে ঢাকায় বার্ন ইউনিটসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়।


বক্তাগন অভিযোগ করে বলেন, চমেক ক্যাম্পাসে ১৫০ শয্যার স্বতন্ত্র বার্ন হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হলেও হাসপাতাল নির্মানে জায়গা নিয়ে জটিলতা ও নানা কারণে চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র একটি বার্ন হাসপাতালটির নির্মান কাজ পুরোদমে শুরু করতে পারে নি। চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও পরিবেশগত প্রভাব পর্যালোচনা (ইআইএ) ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শুরু করা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার মুখে নির্মান কাজ স্থবির হলে চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থ ক্ষুন্ন হবে। দাতা সংস্থাও এই প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তাই যে কোন অজুহাতে চট্টগ্রামে পূর্নাঙ্গ বার্ন হাসপাতাল নির্মানে জটিলতা পরিহার করে দ্রুত হাসপাতাল নির্মানের দাবি জানান।

এরপর ক্যাব নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীনের কাছে ২১ দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেন। দাবিগুলোর মধ্যে আছে; হাসপাতালে সার্বক্ষণিক ভাবে তথ্যকেন্দ্র চালুর পাশাপাশি হাসপাতালের প্রতিটি গেইটে ম্যাপ/মানচিত্র স্থাপন করা, রোগীদের পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রলি/হুইল চেয়ারের জন্য আয়া/ওয়ার্ড বয়দের টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট করা, হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনসহ লোকজনের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা, ওয়ার্ডগুলোতে টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো, টয়লেট গুলো মেরামতের পাশাপাশি নিয়মিত পরিষ্কার করা, ফ্লোর/ওয়ার্ড নিয়মিত পরিষ্কার,  বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরো শক্তিশালী ও তদারকি জোরদার কর, লিফটগুলোর ক্যাপাসিটি বাড়ানো, চিকিৎসক/নার্স/স্টাফদের জন্য পৃথক লিফট স্থাপন করা, রোগীদের জন্য শয্যা বাড়ানো, প্রয়োজনে পোর্টেবল বেড়ের ব্যবস্থা করা, হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করা, আয়া ও ওয়ার্ডবয়দের চাকরী স্থায়ীকরণ করা ও তাদের পরিচয় পত্র নিশ্চিত করা, বেশি টাকা দিয়ে বাইরে টেস্ট করানো বন্ধ করা, MRI/CT scan, Echocardiography এর মতো বড় বড় টেস্টগুলোতে সিরিয়াল পাওয়া সহজ করা, দৈনিক টেস্ট এর পরিমাণ বৃদ্ধি করা, এর জন্য পর্যাপ্ত মেশিন ও রুম ব্যবস্থা করা, মেডিকেল কলেজ এলাকার হাসপাতালের ফার্মেসীগুলোতে ওষুধ প্রশাসনের তদারকি বাড়ানো ও  নায্য মূল্যের ফার্মেসীর পরিসর বাড়ানো, বিকেলের পর ওয়ার্ডগুলোতে পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক/স্টাফ এর সার্বক্ষণিক নিশ্চিত করা, হাসপাতালে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ করা, পরিচালনা কর্তৃপক্ষের নিয়মিত ও সুষ্ঠু তদারকি করা, দর্শনার্থীদের সময় নির্দিষ্ট করা, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা রোধ করা, হাসপাতাল ও এর চারদিকের এলাকায় মশক নিধন কর্মসূচি জোরদার করা, সেবপেতে ভোগান্তি হলে প্রতিকারের জন্য অভিযোগ জানানোর জন্য হটলাইন/হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার চালু করা, দিনের বেলায়ও মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভদের(এমআর) কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করা, আইসিইউর শয্যা বৃদ্ধি অন্যতম।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024