অন্যভাবে বলতে গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়া এ প্রস্তুত এসব কিছুই নির্ভর করত উৎপন্নকারী কৃষক, নীলকুঠির শ্রমিক ও ফ্যাক্টরির ম্যানেজারের অভিজ্ঞতার উপর।
আশ্চর্যের ব্যাপার হল বঙ্গদেশের নীল সম্পর্কে যত নখীপত্র আছে তাতে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে রীতিমত অবহেলা করা হয়েছে। এই উৎপাদন প্রক্রিয়ার মধ্যে কতকিছু উদ্ভাবন করা হয়েছে সে সম্পর্কেও বিশেষ উল্লেখ নেই। এমন কি নীল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের উপর যে কি পরিমাণ জোর-জুলুম করা হত সে সম্পর্কেও বলা হয়েছে খুবই কম।
বঙ্গদেশের বইপত্র থেকে যা জানা যায় তা হল নীল উৎপাদনের কৃষি বিষয়ক বিষয়গুলি: নীল গাছ কেমন করে জন্মানো হত, জন্মানোর পর কি করে তা নীলকুঠিতে পৌঁছানো হত, কি প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের উপর নিপীড়ন চালানো হত এইসব। কিন্তু নীলকুঠিতে গাছগুলো নিয়ে যাবার পর সেখানে কি কি করা হত সে ব্যাপারে তারা বলতে গেলে নিশ্চুপ।
এই গ্রন্থে সংশ্লিষ্ট দারাকের রচিত রিপোর্টের দ্বিতীয় খন্ড বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এতে রয়েছে নীল প্রস্তুতের সম্পূর্ণ বিবরণ- নীলের বীজ থেকে শুরু করে একেবারে জমাট নীলের খন্ড তৈরির সব কিছু। নীল প্রস্তুতের খুঁটিনাটি কারিগরী পদ্ধতির বর্ণনা থেকে নিয়ে প্রস্তুতকরণ পদ্ধতির উন্নতির সুপারিশ পর্যন্ত।
১৮২৩ সালে নীলচাষের এই ইতিবৃত্ত থেকে বোঝা যায় যে তখন নীলকররা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে নীল প্রস্তুতের অনুকরণে বঙ্গদেশে নীল প্রস্তুত করছিলেন। তবে স্থানীয় পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিকের কথা বিবেচনা করে তারা কিছু পরিবর্তন ও যোগ-বিয়োগ করছিলেন। নীলের গুণগত মান উন্নত করার জন্য ও প্রস্তুত প্রক্রিয়া সহজ সরল করার জন্য তারা এ নিয়ে পরীক্ষা- নিরীক্ষা করেছিলেন।
Leave a Reply