রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজারে মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ডিলিট না করায় বন্ধুকে হত্যা

  • Update Time : বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪, ৭.১৬ পিএম

জাফর আলম
কক্সবাজারে মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ডিলিট না করায় বন্ধু মামুনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসী ভাড়া করে হত্যার এই মিশন বাস্তবায়ন করা হয়। হত্যার পর রেল লাইনের পার্শ্বে ফেলে রাখা হয় নিহত মামুনের মরদেহ।বিষয়টি জানতে পেরে ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব ১৫। তদন্তে ওঠে আসে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীর নাম।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকালে শহরতলীর লিংকরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড নিহত মামুনের বন্ধু ঘাতক মো. শাহেদ হোসেন (৩০) কে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।বুধবার (১০ জুলাই) সকালে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।গ্রেপ্তার মো. শাহেদ হোসেন ঈদগাঁও মাছুয়াখালী সিকদার পাড়ার মো. মতিউর রহমানের ছেলে। বর্তমানে সে শহরের ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকায় থাকতো।র‌্যাব জানায়, সদরের খরুলিয়ার মৃত নবী হোসেনের ছেলে নিহত আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩০) একজন ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী।

লিংক রোড বাজারে তার যৌথভাবে ভিশন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রয়ের একটি শো—রুম রয়েছে। ওই শো—রুমে মামুন তার বন্ধু মো, শাহেদ হোসেন ও শাহেদ হোসেনের ভগ্নিপতি জসিম উদ্দিনের শেয়ারের ভিত্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।যে কারণে মামুনকে হত্যা করা হয়: কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ের একটি মেয়ের সাথে ঘাতক শাহেদ হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক চলাকালে তারা দুইজনেই কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও শাহেদের মোবাইলে ধারণ করে রাখে। মেয়েটির সাথে প্রেমের সম্পর্কের অবনতি হলে শাহেদের মোবাইলে থাকা তাদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিওগুলো ডিলিট করার জন্য বলা হয়।এতে কৌশলে শাহেদ ছবি ও ভিডিওগুলো বন্ধু মামুনের মোবাইলে সংরক্ষণ রাখার জন্য প্রেরণ করে।

পরে ওই মেয়ের সামনে শাহেদের মোবাইল থেকে ছবি ও ভিডিওগুলো ডিলিট করা হয়। পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিওগুলো বন্ধু মামুনের কাছ থেকে ফেরত চাই শাহেদ। কিন্তু এসব ছবি ও ভিডিও শাহেদকে দিতে অস্বীকার জানায় মামুন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামুনকে হত্যার জন্য ছক আঁকে শাহেদ। যেভাবে হত্যা করা হয় মামুনকে: পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৬ জুলাই রাত অনুমান ৮ টার দিকে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে শাহেদ। এসময় মামুনকে বলা হয় এক জায়গায় যাওয়ার জন্য শহরের ভিশন শো—রুম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাহারছড়া বাজারে আসার জন্য।

শাহেদের কথায় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মামুন বাহারছড়া বাজারে পৌঁছালে দুইজনেই মোটর সাইকেলযোগে ঈদগাঁও কালিরছড়া বাজারের একটু আগে পৌঁছালে শাহেদ বন্ধু মামুনকে মোটরসাইকেল থামাতে বলে।মোটর সাইকেল থামানোর পরপরই ঈদগাঁওর শীর্ষ ডাকাতা মাছুয়াখালীর আলী আহমদ প্রকাশ চুনতি মৌলভীর ছেলে শাহীন ওরফে লালুর নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী মামুনের মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে শাহেদকে বুঝিয়ে দেয়। এসময় তাদের এক লক্ষ টাকা প্রদান করে শাহেদ।পরে মামুনের মোবাইলটি শাহেদ ভেঙে চুরমার করে পানির ডুবায় ফেলে দিয়ে চলে যায়।

অপরদিকে শাহেদের নির্দেশে ডাকাত শাহীনের নেতৃত্বে কে মামুনকে হত্যা করে হাত,পা বেঁধে রেললাইনের পার্শ্বে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। গত ৭ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে রামু রশিদ নগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ খাদেমের পাড়া এলাকার রেললাইনের পূর্বপার্শ্বে হাত,পা বাঁধা অবস্থায় মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়।র‌্যাব আরও জানায়, এই মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এসব তথ্য বের হয়ে আসে। যার প্রেক্ষিতে ক্লুলেস এই হত্যার রহস্য উন্মোচন করে মূল পরিকল্পনাকারী নিহত মামুনের বন্ধু শাহেদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব ১৫।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024