রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

জীবন আমার বোন (পর্ব-৫৭)

  • Update Time : শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪, ১২.০০ পিএম

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

এক সময় মুরাদের ওখানে পৌঁছালো খোকা।

মুরাদ বললে, ‘এসে ভালোই করেছিস, আমাকে শুধু শুধু ফিরে আসতে হ’তো তোর বাড়ি থেকে। এই একটু পরেই বেরুচ্ছিলাম।’

চা এলো এবং কিছুক্ষণ গুলতানি চললো। ঠিক ভালো লাগছিলো না খোকার, এমন কি এ কথাও একবার মনে উকি দিলো, আজ ঘর থেকে না বেরুলেই বোধ হয় ভালো ছিলো।

‘জমছে না, চল বাইরে বেরোই বরং’

‘একটু বোস, বড়বোন তোর সঙ্গে কথা বলবে।’

খোকার ভিতরে একটা হাইপোস্টাইল হল হুড়মুড় ক’রে ভেঙে পড়ে এ কথায়।

‘আমার সঙ্গে আবার কিসের আলাপ?’

‘কি জানি–‘ গা ছেড়ে দিয়ে আলগোছে বললে মুরাদ।

একটু পরেই লুলু চৌধুরী ঢুকলো ঘরে। এসে একটা বেতের চেয়ার টেনে বসলো। হেসে জিগ্যেশ করলে, ‘কেমন আছেন?’

‘ভালোই।’

‘আপনাদের ওদিকে কেমন, গণ্ডগোল আছে কোনো রকম?’

‘না, তেমন আর কই।’

‘বড্ড হৈচৈ আমাদের এই দিকটায়। কতো রকমেরই যে তোড়জোড়, একেবারে অতিষ্ঠ হ’য়ে গেছি!’

‘কোথায় আর! আমি তো দেখছি দিব্যি আরামেই আছেন আপনারা!’ ‘

তাই বুঝি মনে হচ্ছে?’

খোকার মনে হ’লো নীলাভাবীর সঙ্গে কোথায় একটা মিল আছে লুলু চৌধুরীর।

হঠাৎ কি মনে ক’রে মুরাদ উঠে গেল এই সময়। খোকা দেখলো তার মুখের দিকে স্থিরদৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।

‘একটা কথা জিগ্যেশ করবো আপনাকে, আপত্তি নেই তো?’

‘আপত্তি কিসের!’ খোকার ভিতরটা এইবার সত্যি কেঁপে ওঠে।

‘আমি কারো নাম ধ’রে বলবো না। আমার চলাফেরা গতিবিধি এইসব নিয়ে মুরাদের বন্ধুদের অনেকেরই শুনি দারুণ মাথাব্যথা। আজকাল নাকি সেটার প্রকোপ একটু বেশি রকমেরই দেখা যাচ্ছে, এটা কি সত্যি?’

খোকা আমতা আমতা ক’রে বললে, ‘এসব প্রসঙ্গ না তোলাই ভালো। মধ্যে থেকে আমি বিপদে প’ড়ে যাচ্ছি-

‘আপনি সঙ্কোচ করছেন কেন? আমি কিন্তু আপনাকে বাদ দিয়েই কথাটা পেড়েছি। আপনার কাছে একথা তোলার একটাই কারণ, ওর বন্ধুদের ভিতর একমাত্র আপনার সঙ্গেই আমার আলাপ আছে, আপনাকে ভালো ক’রে চিনি। ছিটেফোঁটা তো দূরের কথা, অন্যদের কাউকে চিনিই না, আর যেসব কথা শুনি তাতে চেনার খুব একটা ইচ্ছেও নেই। সঙ্কোচ করবেন না, আপনি স্বচ্ছন্দে বলুন!”

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024