রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন

জাতিসংঘে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন গুরুত্ব পাচ্ছেনা – গ্রেটা থানবার্গ

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪, ১.২৫ পিএম

অজনপ্রিয়

জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন

কাটোয়াইস, পোল্যান্ড, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

আমার নাম গ্রেটা থানবার্গ, আমার বয়স ১৫ এবং সুইডেন থেকে এসেছি। আমি জলবায়ুর উপরে ন্যায়বিচার সম্পর্কে কথা বলি।

অনেক মানুষই বলেন ,সুইডেন একটা ছোট দেশ এটি জলবায়ু সম্পর্কে বললেই কি আর না বললেই কি । কিন্তু আমি এটা শিখেছি যে কেউই একটা ভিন্ন জিনিষ ভাবতে বা করতে ছোট নয়। এবং কতিপয় শিশু যদি একসাথে স্কুল বিরতি দিয়ে বিশ্ব দরবারে হেডলাইনস হতে পারে ,তাহলে চিন্তা করুন এমন করে যদি আমরা সবাই একজোট হই তাহলে কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে একবার ভাবতে পারেন!

কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের স্পষ্টভাবে কথা বলতে হবে। সেটা শুনতে যতই খারাপ লাগুক। আপনি সবুজের কথা বলবেন, অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলতে পাবেননা কারন আপনি এসব বলতে ভীত। আপনি সামনে এগিয়ে যাবার কথা বলবেন সেই একই খারাপ ধারণা থেকে। এমনকি একটা অনুভূতিপূর্ণ কাজ হলো জরুরী থামানো।

এটির মতো করে বলার জন্যে আপনি এতটা উপযুক্ত হয়ে ওঠেননি। এমনকি আপনি আপনার সন্তানের কাঁধে যে বোঝা দিয়েছেন সেটি সম্পর্কেও বলার জন্যে যোগ্য হয়ে ওঠেননি। কিন্তু আমি জনপ্রিয় হতে আসিনি, আমি জলবায়ুর ন্যায্যতা পেতে এসেছি, আমি এই গ্রহের ন্যায্যতা পেতে এসেছি।

আমরা এখন আমাদের সভ্যতাকে বিসর্জন করছি কারন আমরা খুব অল্পসংখ্যক মানুষকে অসীম সম্পদের মালিক বানাতে বসেছি। আমরা আমাদের পরিবেশকে বিসর্জন দিতে চলছি যেখানে আমাদের দেশের মতো ধনী দেশগুলির লোকেরা সাচ্ছন্দ্যে বাস করতে পারে। কিন্তু এটা জানা দরকার যে, খুব অল্প মানুষের সাচ্ছন্দ্য বিশাল একটা জনগোষ্ঠির ভোগান্তির কারন হয়ে যাচ্ছে।

২০৭৮ সালে আমি আমার ৭৫তম জন্মদিন পালন করবো।

আমার যদি সন্তানাদি থাকে , তারা আমার সাথে সেদিনটি উৎযাপন করবে। হয়তো তারা তোমার সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করবে। হয়তো তারা আমাকে জিজ্ঞেস করবে, কেন তুমি কিছু করনি, যেখানে এখনো তোমার কিছু করার ছিল।আপনি বলছেন যে, সবকিছুর উর্ধ্বে আপনি আপনার সন্তানদের ভালবাসেন।কিন্তু তবুও আপনি আপনার সন্তানদের ভবিষ্যৎ চুরি করছেন।

আপনি যতক্ষণ না যেটির উপরে ফোকাস দেয়া প্রয়োজন সেটি না করে রাজনৈতিকভাবে কোনো ফল পেতে চাচ্ছেন ততক্ষণ সেখানে কোনো আশা নেই। আমরা একটা সমস্যাকে সমাধান করতে পারিনা যতক্ষণ এটিকে আমরা সমস্যা হিসেবে না ভাবি। আমাদেরকে জীবাষ্ম জ্বালানীকে শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসতে হবে এবং আমাদেরকে সমতার দিকে ফোকাস করতে হবে। এবং এই পদ্ধতিতে সমাধান খুবই সম্ভব এবং তারপর আমরা নিজেরাই এর সিস্টেম পরিবর্তন করতে পারবো।

আমরা এখানে বিশ্বনেতাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে আসিনি। আপনারা আমদের অতীতেও অবজ্ঞা করেছেন , ভবিষ্যতেও করবেন। আপনারা অজুহাত দেখানোর সময় ফুরিয়েছেন আর আমরা সময়কে হারিয়েছি। আমরা আপনাদেরকে শুধু এটুকু জানাতে এসেছি যে পরিবর্তন আসছে সেটা আপনার পছন্দ করেন আর নাই করেন।

 

আসল শক্তি আসলে জনগনের

আমাকে ভুল প্রমাণ করুন

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম, ডাভোস, ২২ জানুয়ারী , ২০১৯।

কিছু মানুষ বলছে, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যা করছি তা পর্যাপ্ত নয়।কিন্তু সেটি সত্য নয়। কারন পর্যাপ্ত না করার চেয়ে কিছু করা উচিৎ। কিন্তু সত্য হলো , প্রকৃতপক্ষ্যে আমরা কিছুই করছিনা।

হ্যাঁ। অনেক মানুষ তাদের করবার ক্ষমতার চেয়েও অনেক বেশী কিছু করছে কিন্তু সেটি খুবই কম এবং সেগুলো কোনো পার্থক্য গড়ে তোলার জন্যে তেমন কিছু নয়।

কিছু মানুষ বলছে জলবায়ু সমস্যা আমরা সবাই মিলে সৃষ্টি করেছি। কিন্তু সেটি একটি আলাদা সহজ সত্য। কারন যেখানে সবাই অপরাধী সেখানে কাউকে একক অপরাধী বলা যায়না।কিন্তু কেউ হয়তো দোষী।  কিছু মানুষ, কতিপয় কোম্পানী এবং কতিপয় সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিকরা একদম সঠিকভাবেই জানেন যে, কি অকল্পনীয় পরিমাণ অর্থের অপচয় তারা করছেন।

শুধু তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে আরো মজবুত করতে এবং ভবিষ্যৎকে আরো সুন্দর করতে এসব করছেন। আপনি এক মুহুর্তের জন্যেও এটা বিশ্বাস করতে চাইনা যে, তোমর এটা করতে পারো। কিন্তু আমি সবাইকে এই অবস্থার কথা সবাইকে জানাতে চাই।

আমি তোমাদের বলতে চাই তোমরা আমাকে ভুল প্রমাণ করো। তোমাদের সন্তানদের জন্যে , তোমাদের গ্রান্ড চিলড্রেনদের জন্যে। এই সুন্দর জীবনের জন্যে , এই সুন্দর গ্রহের জন্যে।

আমি সবাইকে ইতিহাসের ডানদিকটায় দাঁড়াতে বলছি। আমি সকল পেশার মানুষকে এই পৃথিবীর ১.৫ ডিগ্রি মাত্রার মাঝে পেতে অঙ্গীকার রাখতে চাই।তোমরা কি সেই অঙ্গীকার করবে? তোমরা, এই পৃথিবীর সকল মানুষ  কি আমার সাথে অংশগ্রহণ করতে অঙ্গীকার করবে ?

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024