শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন

গরমে ত্বকের রোগ-ব্যাধি

  • Update Time : শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২.৫২ পিএম

ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল

গরমকালে চর্মরোগে কম-বেশি সবাই ভোগেন। অপরিষ্কার ও ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস চর্মরোগের একটা অন্যতম কারণ। নিয়ম মেনে চললে রোগের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

ব্রণ : সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে এই রোগটি দেখা দেয়। তাই একে টিনএজারদের রোগও বলা যেতে পারে। ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এ রোগটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত, ঝাল, ভাজাপোড়া খাবারসহ চকোলেট, আইসক্রিম ও অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া কমাতে হবে। এ ছাড়া বেশি করে পানি ও শাকসবজি খেতে হবে।


সোরিয়াসিস : সোরিয়াসিস ত্বকের একটি জটিল রোগ। তবে এটি কেবল ত্বক নয়, আক্রমণ করতে পারে শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও। যেমন সন্ধি, নখ ইত্যাদি। সাধারণত ত্বকের কোষস্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়। সোরিয়াসিসে এই কোষ বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। ত্বকের কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার জায়গা জুড়ে এই সমস্যা দেখা দেয়। রোগ যত পুরনো হয়, ততই জটিল হতে থাকে। তাই দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার আওতায় আসা জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়।

আর্সেনিকের কারণে চর্মরোগ : আর্সেনিকযুক্ত পানি খেলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- ত্বকের গায়ে ছোট ছোট কালো দাগ কিংবা পুরো ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে, হাত ও নখের চামড়া শক্ত ও খসখসে হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ত্বকের বিভিন্ন স্থানে সাদা-কালো দাগ দেখা দেওয়াসহ হাত ও পায়ের তালুর চামড়ায় শক্ত গুটি বা গুটলি দেখা দিতে পারে। তবে চিন্তার বিষয় হলো, আর্সেনিকযুক্ত পানি পানের শেষ পরিণতি হতে পারে কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা লোপ পাওয়া; ত্বক, ফুসফুস ও মূত্রথলির ক্যানসার হওয়া; কিডনির কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া ইত্যাদি।


ঘামাচি : গরমের সময় ঘামাচি একটি সাধারণ সমস্যা। ঘামাচি সাধারণত তখনই হয়, যখন ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম বের হয় না এবং ত্বকের নিচে ঘাম আটকে যায়। ফলে ত্বকের উপরিভাগে ফুসকুড়ি এবং লাল দানার মতো দেখা যায়। কিছু কিছু ঘামাচি খুব চুলকায়। ঘামাচি সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। তবে ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সব সময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে।

দাদ : শরীরের যেকোনো স্থান ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একে দাদ বলে। এই আক্রমণ মাথার চামড়া, হাত-পায়ের আঙুলের ফাঁকে কিংবা কুঁচকিতে হতে পারে। এটি ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত স্থান চাকার মতো গোলাকার হয় এবং চুলকায়। প্রতিকার পেতে সাবান ও পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান প্রতিদিন ধুতে হবে। আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখা জরুরি।

একজিমা : একজিমা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা, যেখানে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। একেক ধরনের একজিমার লক্ষণ একেক ধরনের হয়। তবে সাধারণভাবে লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক; শুষ্ক, খসখসে ত্বক; ত্বকে চুলকানি; হাত ও পায়ের ত্বকের মধ্যে ছোট ছোট পানির ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলো একজিমার লক্ষণ। ডিটারজেন্ট, সাবান অথবা শ্যাম্পু থেকে একজিমার সংক্রমণ হতে পারে। অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠা-া ও স্যাঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়াও একজিমার কারণ।

ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
সহকারী অধ্যাপক (চর্ম ও যৌন)
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার, গ্রিন রোড, ঢাকা

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024