শশাঙ্ক মণ্ডল
দ্বিতীয় অধ্যায়
গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড টালা-ফলতা ঘাট ১৪ মাইল ডায়মন্ডহারবার রোড (দুর্গাপুর ডায়মন্ডহারবাব) ২৫ মাইল কলকাতা যশোর রোড বেলেঘাটা-চোঙদহ ২৮ মাইল উড়িষ্যা ট্রাঙ্ক রোড (সোনাডাঙ্গা) হুগলী নদীর অছিপুর ১৩ মাইল কাশিপুর দমদম রোড ২ মাইল আক্রা – মেটিয়াবুরুজ ৪ মাইল বারুইপুর – পার্করোড .৫০ মাইল অন্যান্য রাস্তার দায়িত্বে জেলা পরিষদ এই রাস্তাগুলি তিন ধরনের কাঁচা পাকা আর কিছু রাস্তা যা মাঝে মাঝে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জেলাপরিষদ নিত। ১৯০১/২-এ ১৫০ মাইল রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ জেলাপরিষকে করতে হত; এব্যাপারে ফেরী ফান্ডের টাকা এবং কয়েদীদের কায়িক শ্রম রাস্তায় নিয়োজিত হত। এই সময়ে টাকী রোডের বারাসাত থেকে বসিরহাট পর্যন্ত ২৬ মাইল পাকা রাস্তা আর বসিরহাট থেকে টাকী পর্যন্ত ৭.৫০ মাইল রাস্তা তখনও কাঁচা রাস্তা হিসাবে জেলা পরিষদ রক্ষণাবেক্ষণ করত। খোলাপোতা থেকে বাদুড়িয়া ৫ মাইল রাস্তা সে যুগে পাকা রাস্তা।
বারুইপুর থেকে বাখরাহাট রোড ১০.৫০ মাইল রাস্তা এ সময় পাকা হচ্ছে- রাস্তায় কালভার্ট তৈরি করা হচ্ছে। বারুইপুর ধবধবির পাকা রাস্তা প্রথম মহাযুদ্ধের পূর্বেই শেষ করা হয়েছে। ব্রিটিশ রাজত্বে জেলা পরিষদ সড়ক করছেন- তবে সে ব্যাপারে সীমিত আর্থিক ক্ষমতা নিয়েই কাজ করতে হত। জেলা শাসকরা স্থানীয় বিভিন্ন জমিদারদের উৎসাহ দিয়ে রাস্তা করার চেষ্টা চালাত। এ ধরনের অনেকগুলি রাস্তা সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে লক্ষ করা যাবে কিন্তুনদী এলাকায় কোন সড়ক ব্রিটিশ রাজত্বের শেষ ভাগেও গড়ে উঠতে দেখা গেল না।
আমাদের দেশে সর্বপ্রথম ১৮৪৫ খ্রীঃ -এ রেলপথ স্থাপনের তোড়জোড় শুরু হয়।
৪৬-এ কলকাতা থেকে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের প্রস্তাব ওঠে। প্রস্তাবের গমর্থনে বলা হল সমুদ্র থেকে কলকাতা পর্যন্ত যে পথ তার মাঝখানে ডায়মন্ডহারবারের অবস্থান। ডায়মন্ডহারবার থেকে কলকাতার নদীপথে অনেকগুলি চড়া পড়েছে। এর মধ্যে জেমস এবং মেরী চড়া দুটি ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে নদীপথকে জাহাজ চলাচলের পক্ষে অকেজো করে দিচ্ছে। জোয়ারের জলের জন্য জাহাজগুলিকে অপেক্ষা করতে হয়। সমুদ্র-আগত জাহাজগুলি ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত আসবে এবং সেখান থেকে রেলপথের মাধ্যমে মাল- পত্রাদি কলকাতায় আনা হবে।
বিপদসংকুল নদীপথ অতিক্রম করার ঝুঁকি নিতে হবে না- সময় বাঁচবে এবং দ্রুত মাল কলকাতায় পৌঁছুবে। ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির তৎকালীন বিখ্যাত ইঞ্জিনীয়ার মিঃ সীমস্ এর ওপর সরকার এই প্রস্তাব বিবেচনার ভার অর্পণ করলেন। মিঃ সীমস্ খিদিরপুর ডকের তুলনায় ডায়মন্ডহারবারে ডক তৈরি করলে কী কী সুবিধা হবে তা তাঁর রিপোর্টে উল্লেখ করলেন।
Leave a Reply