সারাক্ষণ ডেস্ক
যেখানেই ঘুরতে যাওয়া হোক না কেন, ঘর সাজানোর জিনিস দেখেলই কিনতে ইচ্ছা করে? ঘর সাজাতে ভালো লাগে? কে না চান তার অফিস বা বাসা সুসজ্জিত হোক, আবার একই সাথে যাতে অফিস বা বাসার মধ্যে কোনও জায়গা নষ্ট না হয়। এ ডেকোরেটেশনকে বলা হয় ইন্টেরিয়র ডিজাইন। ডিজাইনারের কাছে ইন্টেরিয়র ডিজাইন যেন জীবনের ছন্দ!
সাধারণত ইন্টেরিয়র ডিজাইন বলতে ঘর গোছানোকে বুঝে থাকি। তবে শুধু ঘর গোছানেই নয়, ইন্টেরিয়র ডিজাইন আরো বড় অর্থে ব্যবহৃত হয়। বাড়ি, অফিস বা যে কোনও প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্থানকে কাজে লাগিয়ে আসবাবপত্র, লাইট, গৃহসজ্জা সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমেকে আরামদায়ক ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করাই ইন্টেরিয়র ডিজাইনের প্রধান কাজ।
একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, মিস ভিভিয়ান চেন বিশ্বাস করেন যে একটি বাড়িতে নির্মিত সব কিছুর একটি উদ্দেশ্য পূরণ করা প্রয়োজন। সব কিছুর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। “আমার কাছে এটি একটি নান্দনিক বইয়ের প্রচ্ছদ এবং কার্যকরী দিক বিষয়বস্তুর মতো। এই দুইয়ের সমন্বয়ে একটি আকর্ষণীয় বই তৈরি হয়। তিনি বাড়িতে গড়ে তুলেছেন স্টুডিও মুউ কনস্ট্রাকশন। স্টুডিওর তিনি ডিজাইন ডিরেক্টর। এই দর্শনটি তার সব প্রকল্প এবং অবশ্যই তার নিজের বাড়ি-স্টার্লিং রোডে একটি ৬৩৫ বর্গফুট কন্ডোমিনিয়াম ইউনিটকে পরিচালনা করে। সেখানে তার স্বামী মাইকেল চ্যান এবং তাদের কুকুর বাস করেন । তার স্বামী একই সাথে তার আর্থিক উপদেষ্টা।
এই দম্পতির বয়স ২০ থেকে ৩০-এর মধ্যে। প্রতিটি স্থান, ক্যাবিনেট এবং আসবাবপত্রের টুকরো দম্পতির দৈনন্দিন রুটিন এবং অভ্যাসের একটি নির্দিষ্ট প্রয়োজন মেটানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এমনকি নির্বাচন করা হয়েছে ঠিক কোথায় কেমন চাবি বসানো হবে। এছাড়া ভ্যাকুয়াম ক্লিনার এবং কোথায় পানি রাখার জায়গা হবে সেটাও ভিনটেজ স্টাইলে ডিজাইন করা হয়েছে।
তারা যখন ডেভেলপারের কাছ থেকে ইউনিটটি কিনেছিল, তখন ফিনিশ এবং ফিটিং সবই নতুন ছিল। তারা ওয়াল কেবিনেট ওয়ারড্রোব, রান্নাঘরের ক্যাবিনেট, বাথরুমের জিনিসপত্র এবং দরজা বজায় রেখেছিল। কিছু নতুন ছুতোরের কাজ এবং আলো যুক্ত করা হয়েছিল এবং বিদ্যমান টাইলসের মেঝেটি ভিনাইল দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়েছিল। যা অন্য দরজাগুলোর সাথে মিলে যায়।
বাকিরা ছিল স্টাইলিং। মিস চেন ফরাসি ভিনটেজ স্টাইল পছন্দ করেন। কিন্তু নিজের জায়গা না পাওয়া পর্যন্ত কখনও এটি চেষ্টা করার সুযোগ পাননি। তিনি বলেন, “যেহেতু এই প্রথম আমি এই ডিজাইন নিয়ে কাজ করছি, তাই আমাকে ওয়াইনস্কোটিংয়ের দিক, অনুপাত এবং অন্যান্য বিবরণ খুঁজে বের করতে হয়েছিল।” “ডেভেলপারদের দেওয়া ফিনিস এবং ফিটিং-এর সঙ্গে মিল রাখার চেষ্টা করাও ছিল একটি চ্যালেঞ্জ ।” তিনি বাড়ির মধ্যে ন্যূনতম আলগা আসবাব রাখার জন্য তাঁর স্বামীর পছন্দকেও বিবেচনা করেছেন। এবং যতদূর সম্ভব ওয়াল কেবিনেট বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি সবকিছুর জন্য একটি নির্দিষ্ট, বরাদ্দ জায়গা রাখতে চাই, যাতে আমি যখন বাড়ি আসি, তখন সব কিছু আগের মতোই থাকে।”
দ্বিতীয় বেডরুমটি তাঁর স্বামীর রেসিং সিমুলেটরগুলোর জন্য আলাদা করা হয়েছে এবং অতিথি কক্ষ হিসেবে ডাবল করা হয়েছে। বেশিরভাগ দেয়ালে নতুন ওয়াল ক্যাবিনেট, আসবাবপত্র এবং মেঝেতে ক্রিম এবং বাদামী রঙের মতো মাটির টোন প্রয়োগ করা হয়েছে। সংস্কার কাজে প্রায় ২০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। প্রায় এক মাস সময় লেগেছে।
এই দম্পতি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাড়িতে চলে আসেন। মিস চেন বলেন, নিজের বাড়িতে কাজ করা তাঁকে আরও ভালো ডিজাইনার হতে সাহায্য করেছে। “আমাদের বাড়ির নকশা করার সময় আমি নিজেকে যে প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এখন আমি আমার ক্লাইন্টদেরও জিজ্ঞাসা করি।” তিনি আরও বলেন, এটি তাকে প্রতিটি প্রকল্পে আরও স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে।
Leave a Reply