শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৩০ অপরাহ্ন

বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্পোর্টস অলিম্পিক: মাশরাফি

  • Update Time : সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৭.৩০ পিএম

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নির্ধারিত সময় গড়িয়ে আসে এক একটি বিশ্বকাপ। আর প্রতিবার সেই বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে প্রত্যাশার বেলুন উড়ায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু ফেরার সময় সঙ্গী হয় একরাশ হতাশা। আরও একটি বিশ্বকাপের পর্দা উন্মোচনের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

আগামী ১ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হতে যাচ্ছের টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের সব থেকে বড় এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে ইতিমধ্যেই মার্কিন মুল্লুকে পাড়ি জমিয়েছে টাইগাররা। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের মূল প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। ‘ডি’ গ্রুপে এই দুই প্রতিপক্ষ ছাড়াও আছে নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। ৮ জুন ডালাসে শ্রীলঙ্কা এবং ১০ জুন নিউইয়র্কে প্রোটিয়াদের সঙ্গে লড়বে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

এই দুই ম্যাচের উপরই মূলত নির্ভর করছে পরের রাউন্ডে যাওয়া, না যাওয়া। সাম্প্রতিক ছন্দ বিচারে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে পেরে উঠা কঠিন মনে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টেরই। দল ঘোষণার দিন প্রধান নির্বাচকই দেন সেই আভাস। তবে মাশরাফি মনে করেন নিজেদের সেরা দিনে এই দুই প্রতিপক্ষকেই হারানোর চিন্তা থাকা উচিত দলের। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তো জেতা উচিত। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে একবার সিরিজ জিতে এসেছে, যদিও ওয়ানডে ছিলো। দক্ষিণ আফ্রিকা—শ্রীলঙ্কার যেকোনো একটা জিততে হবে মনে হয়। আশা করি, ইনশাল্লাহ ভালো করবে।’

লাল সবুজ দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘ওদের (নেপাল—নেদারল্যান্ডস) সঙ্গে যদি হারার কথা চিন্তা করেন তাহলে তো কঠিন। দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার একটা জিতে আর ওগুলাকে হারিয়ে… দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার দুইটাই নয় কেন? দুইটাকেই চিন্তা করা যায় হারাতে পারে কিনা।’ যদিও আগের আটটি টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ ভালো কিছু করতে পারেনি। মূল পর্বে দুইটির বেশি ম্যাচ জেতেনি কখনো। মাশরাফির নেতৃত্বে ২০১৬ বিশ্বকাপে বাছাইয়ের আদলে চলা প্রথম পর্ব পার হয়ে মূল পর্বে বাংলাদেশ ছিল জয়শূন্য। এবার দল কতদূর যেতে পারবে সেই অনুমান এখনি করা কঠিন মাশরাফি কাছে, ‘কত দূর যেতে পারবে বলতে পারব না। তবে ভালো কিছু করুক এটাই আশা করছি, আমি নিশ্চিত আপনারাও সেটাই আশা করেন। আমি অবশ্যই চাইব বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসুক, বাস্তবিকভাবে ভাবতে হবে কেমন খেলছে ওখানে, উইকেট কেমন, কন্ডিশন কেমন। দল কেমন ছন্দে আছে, খেলোয়াড়রা কেমন ফর্মে আছে। প্রথম রাউন্ড পার করতে পারলে একটা ধারণা হবে।’

বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন মাশরাফি। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভবনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফি বিন মতুর্জা দেশের সকল খেলার গুরুত্ব প্রদান ও মর্যাদার কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় সব খেলার পক্ষে। আপনারাই (মিডিয়া) ক্রিকেটকে বেশি গুরুত্ব দেন। অন্য খেলাকেও গুরুত্ব দেয়া দরকার।’ অন্য খেলার গুরুত্বের বিষয়টি তিনি নিজেই বিশ্লেষণ করেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতে কিন্তু সারা বিশ্ব জানে না। আমরা যদি অলিম্পিকে একটা পদক জিততে পারি সারা বিশ্ব চিনবে। সেটা হবে বড় অর্জন। ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতার চেয়ে অলিম্পিক পদক জেতা অনেক বড়।’

বাংলাদেশের জন্য অলিম্পিক খুব বড় স্বপ্ন। দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডির বাইরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের তেমন কোনো সাফল্য নেই। ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়াডে বক্সার মোশাররফ ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। সেটাই বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত বড় অর্জন। ফলে অলিম্পিকের চিত্রটাও মাশরাফির জানা, ‘ক্রিকেট বিশ্বকাপ বড় স্পোর্টস নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্পোর্টস অলিম্পিক। সেখানে আমরা এখন হিটেই বাদ পড়ে যাচ্ছি। হিট থেকে ফাইনালে উঠতে হবে এরপর পদকের লড়াই।’
ক্রিকেট, ফুটবল বাদে দেশের অন্য সকল খেলোয়াড়দের আর্থিক অবস্থা খুব দুর্বল। অন্য ফেডারেশনগুলোও খেলোয়াড়দের সেভাবে আর্থিক সহায়তা করতে পারেন না। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক টানা দুই বারের জাতীয় সংসদ সদস্য। এবার তিনি সংসদের হুইপও।

ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যও তিনি। খেলোয়াড়দের সুযোগ—সুবিধা বৃদ্ধি ও ফেডারেশনের সামর্থ্য বাড়াতে নিজের উদ্যোগ গ্রহণের চেয়ে মিডিয়া ও ফেডারেশনের উপরই দায়িত্ব দিলেন বেশি। তিনি বলেন, ‘সংসদীয় কমিটিতে কোনো বিষয় আসলে আমি অবশ্যই আলোচনা করব। যা করার চেষ্টা করব। আপনারাই পারেন অন্য খেলাগুলোকে এগিয়ে নিতে। আজ যেমন কাবাডিতে এসেছেন তার মানে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আসলে সব কিছুর সমন্বয় দরকার। খেলাধূলায় বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিনিয়োগ আসতে লাগে ফোকাস। সেই ফোকাস আপনারা (মিডিয়া)। ফোকাস থাকলে স্পন্সর আসবে। ক্রিকেটের বোর্ডের অর্থ আছে, অন্য ফেডারেশনের সেভাবে নেই। সুবিধা থাকলে খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে। ট্রেনিং নিয়মিত, ইনজুরি হলে ব্যবস্থা। এই জিনিসগুলো থাকলে অন্য খেলায় আসবে। কাবাডিতে যেমন চলছে।’

অনেক ফেডারেশনে শীর্ষ পদে অনেক সংগঠক রয়েছেন যুগের পর যুগ। খেলার তেমন উন্নতি নেই। নেতৃত্বের সংকট নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে প্রশ্ন উঠে। ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনো খেলায় এগিয়ে আসার আগ্রহ আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে মাশরাফি বলেন, ‘আমি একা তো আর সব দায়িত্ব নিতে পারব না। নেতৃত্বের সংকট আছে বলে মনে করি না। সব ফেডারেশনের ব্যাপারে আমি জানিও না, যাইওনি। যেকোনো খেলায় ডাকলে আমি যাই।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024