শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১৯ অপরাহ্ন

পায়রা, মোংলা বন্দরসহ ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত

  • Update Time : রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪, ১০.২৬ এএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “১০০ বিলিয়ন ডলারের কোনো নীতিচাপ নেই, ৫ বিলিয়ন ডলার এখন খুবই প্রতাপশালী”

বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সামলাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৭০ কোটি বা ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার। ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এ ঋণ প্রকল্পের শেষ কিস্তি ছাড় হবে ২০২৬ সালে। সাত কিস্তিতে ছাড় হওয়া এ ঋণ পেতে বহুজাতিক সংস্থাটির এক ডজনেরও বেশি শর্ত মেনে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করা, ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া, টাকার রেকর্ড অবমূল্যায়ন, আর্থিক খাত সংস্কার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, বাজেটের কাঠামোগত পরিবর্তনের মতো কঠিন শর্তও রয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যা আইএমএফের ঋণ প্যাকেজের মোট অর্থের কয়েক গুণ। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালের জুন থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরেরও কম সময়ে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ১০৫ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স হিসাবে পাঠানো প্রবাসীদের এ অর্থে টিকে আছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু সরকারের নীতি প্রণয়নে এত পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা জোগানদাতা প্রবাসীদের কোনো ভূমিকা নেই। নিজেদের ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও প্রবাসীরা ভুক্তভোগী হচ্ছেন পদে পদে অব্যবস্থাপনা, ঘুস, অনিয়ম-দুর্নীতির। এবার আইএমএফের পরামর্শে রেমিট্যান্সের ওপর কর আরোপের চিন্তাও করছে সরকার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি টিকে আছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে। এক বছর রেমিট্যান্স বন্ধ থাকলে মারাত্মক বিপদে পড়বে দেশের অর্থনীতি। এমন অবদান সত্ত্বেও প্রবাসীরা প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা পাচ্ছেন না। উল্টো রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান থেকেই প্রবাসীরা পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দেশের বাইরে থাকার কারণে প্রবাসীরা ভোটাধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।

এক বছর রেমিট্যান্স আসা বন্ধ থাকলে বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতিই ধসে যাবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন করেন, এত পরিমাণ অনিয়ম, দুর্নীতি, অপচয় সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি টিকে আছে কীভাবে? আমি বলি, কেবল প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের কারণেই এদেশের অর্থনীতি এখনো টিকে আছে। যেকোনো আয়ের জন্য বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু রেমিট্যান্সই হলো একমাত্র আয়, যার জন্য দেশের কোনো বিনিয়োগ নেই। বরং এ বাংলাদেশীরা যদি অভিবাসী না হতো, তাহলে বেকারত্বের চাপে অর্থনীতি ও শ্রমশক্তির অবস্থা ভয়াবহ হতো। ভারত ছাড়া বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশের মানুষ পৃথিবীর সব প্রান্তে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশীরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে ব্যবসা করে সফল হচ্ছে। তার মানে, একটু সুশাসন আর সুযোগ পেলে বাংলাদেশীরা যেকোনো ক্ষেত্রেই সফল হওয়ার সামর্থ্য রাখে।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সংগঠন আছে। কেবল প্রবাসীদের অধিকার আদায়ে এ ধরনের কোনো সংগঠনের কথা শুনিনি। প্রবাসীরা যদি একত্রিত হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেতন হয়, তাহলেই দেশের সরকার আইএমএফ বা অন্য যেকোনো শক্তির চেয়ে প্রবাসীদের বেশি গুরুত্ব দেবে। এখন শুনছি, রেমিট্যান্সের ওপর সরকার কর আরোপ করবে। এটি কীভাবে সম্ভব আমার বুঝে আসছে না। প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্র বাংলাদেশ সরকারের এখতিয়ারের বাইরে।’

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত দেড় কোটির বেশি বাংলাদেশী অভিবাসী হয়েছেন। তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। এ মুহূর্তে ঠিক কত পরিমাণ শ্রমিক বিদেশে আছেন, সরকারের সংস্থাগুলোর কাছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ধারণা করা হয়, বর্তমানে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী শ্রমিক বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ২০২৩ সালেই ১৩ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ জন বাংলাদেশী জীবিকার সন্ধানে অভিবাসী হয়েছেন। এর আগে ২০২২ সালে অভিবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন। অর্থাৎ গত দুই বছরে ২৪ লাখের বেশি বাংলাদেশী কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গেছেন। চলতি বছরের হিসাব আমলে নিলে এ সংখ্যা ৩০ লাখে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) প্রবাসী বাংলাদেশীরা ১ হাজার ৯১৮ কোটি বা ১৯ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছিল ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ও ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ শুধু ২০১৯ সালের জুন থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরেরও কম সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ১০৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টে (বিওপি) যুক্ত হয়। গত তিন বছর ধরেই বিওপি নিয়ে বিপদে আছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত বিওপির ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত এ ঘাটতি ৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল। বিওপির এ ঘাটতির কারণেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত ক্ষয় হচ্ছে। ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের গ্রস রিজার্ভ এখন ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

বৈদেশিক বাণিজ্যে সংকটের কারণেই আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। এ ঋণ নিয়ে দেনদরবার শুরু হয় ২০২২ সালে। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের সভায় বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন হয়। সাত কিস্তিতে ৪২ মাসে এ ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের গড় সুদের হার ২ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ ঋণ কর্মসূচি চলাকালীন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের শর্ত পরিপালন ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং গত বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার সংস্থাটির পর্ষদে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

আইএমএফের কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও কম ঋণ পেতে ডজনের বেশি শর্ত মেনে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার মতো কঠোর পদক্ষেপও রয়েছে। সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ থেকে ঋণের সুদহার এখন ১৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। আর ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার অংশ হিসেবে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতির বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে গত ৮ মে এক দিনের ব্যবধানে টাকার ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়। প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৭ টাকা ছাড়ায়। সরকারকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি বন্ধের শর্তও জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। এ শর্ত বাস্তবায়ন করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর চারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আইএমএফের পক্ষ থেকে রেমিট্যান্স, ইএমএফ সরকারি সিকিউরিটিজ, মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, পাবলিকলি লিস্টেড সিকিউরিটিজ, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি, বাতিল বা কমিয়ে আনার কথাও বলা হয়েছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানিয়েছে।

৫ বিলিয়ন ডলারেরও কম ঋণ প্রাপ্তির বিপরীতে আইএমএফের সব শর্ত মেনে নিচ্ছে সরকার। অথচ প্রতি বছর প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার জোগান দিয়েও প্রবাসীরা সরকারের নীতি প্রণয়নে উপেক্ষিত ও বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। অভিবাসনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে পাঁচ-ছয় গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। এত অর্থ ব্যয় করেও সেখানে অনেক বাংলাদেশী মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দেশের খাতসংশ্লিষ্টদের তেমন একটা উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। আবার অনেকেই অবৈধ অভিবাসনের মাধ্যমে মানব পাচারের শিকার হয়ে যাচ্ছেন মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। মালয়েশিয়া সরকার সে দেশে মানব পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে কিছু হলেও ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তা সেভাবে দৃশ্যমান নয়। আবার মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর সঙ্গে প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেট জড়িত বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অননুমোদিত-অবৈধ পন্থায় অন্যান্য দেশেও অভিবাসন নিচ্ছেন অনেকে। বিপৎসংকুল পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে অবৈধভাবে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের উৎস দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন শীর্ষে। এ পথে ইউরোপে অভিবাসন নিতে গিয়ে প্রতি বছর অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে।

অভিবাসন বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সি আর আবরার মনে করেন, প্রবাসীদের কণ্ঠ খুবই দুর্বল। তাদের পক্ষে জোরালোভাবে কথা বলার মতো শক্তিশালী কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এ কারণে সব ক্ষেত্রেই প্রবাসীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

সি আর আবরার বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো রেমিট্যান্স। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের সময় রেমিট্যান্সের গুরুত্ব আরো বেশি করে ফুটে উঠেছে। সরকারের দায়িত্ব হবে রেমিট্যান্সকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনায় নেয়া। একই সঙ্গে প্রবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করা। পাসপোর্ট ইস্যু, ভিসা প্রক্রিয়া, বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে বিরাজমান অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রবাসীরা সরকারের আন্তরিকতা ও সেবায় সন্তুষ্ট হলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহ বোধ করবে।’

 

 

প্রথম আলর একটি শিরোনাম “পায়রা, মোংলা বন্দরসহ ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত”

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রিমাল আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে ঘনীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৪ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের কাছের এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের ঘোষণা দেওয়ার পরই পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষর করা ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিচু এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের দেশের সব বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।‌

 

 

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “গাজায় নিখোঁজ ১৩ হাজার মানুষের ভাগ্যে কী ঘটেছে”

গাজায় যখন প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, তখনো ১৩ হাজারের বেশি মানুষের কোনো সন্ধান নেই, এক রকম নিখোঁজ তারা। এদের অনেকে হয়তো এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, কিন্তু অনেক মানবাধিকার সংস্থা বলছে বাকি অনেকেই সম্ভবত ‘গুমের’ শিকার হয়েছেন।

জেনেভা ভিত্তিক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের মতে, এই অভিযানে হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পাশাপাশি ১৩ হাজারের ওপর ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছে, তাদের কোনো সন্ধানই আর নেই। এই পরিসংখ্যানে কতজন হামাস যোদ্ধা ও কতজন সাধারণ নাগরিক আছে তা আলাদা করা নেই।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা সংস্থার অংশ গাজার সিভিল ডিফেন্সের হিসেবে ১০ হাজারের ওপর মানুষ শুধু এসব ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে। সিভিল ডিফেন্স বলছে তারা তাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চাপা পড়া শরীর উদ্ধারে কাজ করছেন, কিন্তু তাদের খুবই সাধারণ কিছু যন্ত্রপাতি আছে যাতে প্রায়শই মৃতের শরীরের কাছে পৌঁছানোটা কঠিন হয়ে যায়। এছাড়া আরেকটা শঙ্কাও আছে যে শরীর যদি ভবনের নিচে ওভাবেই পচা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়, তাহলে সামনে গরম যখন আরো বাড়বে তখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটতে পারে।

জাতিসংঘের মতে, গাজা উপত্যকা জুড়ে যে পরিমাণ ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছে তার পরিমাণ হবে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন টন আর এর নিচে যেরকম শরীর চাপা পড়ে আছে তেমনি প্রায় আরো সাড়ে ৭ হাজার টন অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ আছে, যা স্বেচ্ছাসেবক ও ত্রাণকর্মীদের জন্য আরেকটা ভয়াবহ হুমকি।

আহমেদ আবু ডিউক তার ভাই মুস্তাফাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন মাসের পর মাস ধরে। যুদ্ধের কারণে শরণার্থী হওয়া এই পরিবারটি এখন খান ইউনিসের দক্ষিণে নাসের হাসপাতালের সামনের উঠানে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু তারা যখন জানতে পারে যে কাছেই তাদের ঘর আগুনে পুড়ে গিয়েছে, সেটার অবস্থা জানতে ওখানে যান মুস্তাফা। এরপর তিনি আর কখনোই ফিরে আসেননি। আহমেদ বলেন, আমরা যতটা পারি খুঁজেছি, একসময় যেখানে তাদের বাড়ি ছিল সেটা এখন পুড়ে যাওয়া এক ধ্বংসস্তূপ। আশপাশের সব বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অনেক উঁচু উঁচু ভবন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স চালক মুস্তাফার খোঁজ চালাতে থাকে পরিবার, হামাস নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্সের দল ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যেসব মৃতদেহ উদ্ধার করেছে সেখানে এবং নিকটস্থ গণকবরগুলোতে, কিন্তু তার দেখা পাওয়া যায়নি।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে যে পরিমাণ মানুষ মারা গিয়েছে সেটি ৩৫ হাজারের বেশি, কিন্তু সংখ্যাটা শুধু হাসপাতাল থেকে যে মৃতের সংখ্যা জানা গেছে তার ওপর ভিত্তি করে। মুস্তাফাদের মতো এমন অনেক পরিবার আছে যারা আসলে জানে না গত সাত মাসে নিখোঁজ হওয়া তাদের প্রিয়জনেরা কোথায় আছে, কেমন আছে। আবদুর রহমান ইয়াঘি নিচে চাপা পড়া তার আত্মীয়ের শরীর বের করতে গিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরে তাদের পরিবারের একটি তিনতলা বাড়ি ছিল, ২২ ফেব্রুয়ারি যখন এতে মিসাইল আঘাত হানে তখন তার পরিবারের ৩৬ জন সদস্য সেই বাড়িতে ছিলেন। তিনি জানান, ১৭টা মৃতদেহ তারা উদ্ধার করতে পেরেছেন, এছাড়া শরীরের যেসব অংশবিশেষ পাওয়া গিয়েছে সেগুলো শনাক্ত করা যায়নি। আমরা বাড়িতে থাকা বেশির ভাগ শিশুর মৃতদেহ খুঁজে পাইনি বলেন তিনি।

মধ্য গাজার আরেকটা শহর আল জুয়াইদাতে আরেকটা পরিবার তাদের হারানো সন্তানের সন্ধানে রয়েছে। তাদের ভয় তাদের সন্তানকেও হয়তো ‘গুম’ করা হয়েছে। মোহাম্মদ আলির মা তার সন্তানের একটা ছবি হাতে নিয়ে ততদিন পর্যন্ত খুঁজেছেন যতদিন না তাকে কেউ বলেছে যে তার ছেলেকে আইডিএফ ধরে নিয়ে গিয়েছে। তারা বলছে যে শেষবার জীবিত অবস্থায় তার সঙ্গে দেখা হয়েছে কিন্তু তারা এরপর আর জানে না যে তার কি হয়েছে।

গত ২৩ ডিসেম্বর যখন উত্তর গাজার জাবালিয়ায় মারাত্মক বোমাবর্ষণ শুরু হয়, তখন এই পরিবারটি আশ্রয়ের খোঁজে নিজ বাসা ছেড়ে একটা স্কুলে এসে উঠে, আর সেদিন থেকেই মোহাম্মদের কোনো খোঁজ নেই। মোহাম্মদের স্ত্রী আমানি আলি বলেন, একপর্যায়ে ইসরাইলি সেনারা স্কুলেও ঢুকে পড়ে এবং নারী ও শিশুদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তিনি বলেন এরপর সেই রাতে সব পুরুষরা তাদের পরিবারের কাছে ফেরত আসলেও মোহাম্মদ আর আসেনি। সে কোথায় আছে, কেমন আছে কিছুই তারা আর জানেন না। আমানি বলছিলেন তিনি বুঝতে পারছেন না যে তার স্বামী কি মারা গিয়েছে নাকি তাকে আইডিএফ ধরে নিয়ে গিয়েছে, আর এ কারণেই তার বেঁচে থাকার একটা ক্ষীণ আশা এখনো রয়ে গিয়েছে তার।

আমানির বিশ্বাস, ‘যদি সে বেঁচে থাকত ও মুক্ত থাকত তাহলে সে ঠিকই আমাদের খুঁজে বের করত।’ হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিবারগুলোর জন্য একটা অনলাইন ফর্ম তৈরি করেছে যেখানে তারা মৃত ও নিখোঁজদের ব্যাপারে জানাতে পারে, যাতে করে ৭ অক্টোবর থেকে যারা নিখোঁজ তাদের ব্যাপারে একটা পরিপূর্ণ তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা যায়। তবে তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে না জানা পর্যন্ত অনেক পরিবারই তাদের প্রিয়জনকে খুঁজে ফিরবে।

 

 

The Daily Star বাংলার একটি শিরোনাম “শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে ভারত”

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে পশ্চিমবঙ্গ ক্রাইম ইনভেস্টিগেটিভ ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।

এ মামলার অন্যতম আসামি আক্তারুজ্জামান শাহীন এমপি আনোয়ারুল আজীমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ব্যবসায়িক অংশীদার। তিনি নিউইয়র্ক শহরে থাকেন এবং তার মার্কিন নাগরিকত্ব রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘মার্কিন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই, কিন্তু ভারতের আছে। আমরা শাহীনকে ভারতে প্রত্যর্পণের পরিকল্পনা করছি কারণ অপরাধটি আমাদের রাজ্যে ঘটেছে।’

এক রাষ্ট্রের নাগরিক অন্য দেশে কোনো অপরাধে জড়িত হলে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় সেই দেশটি ওই ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে তার রাষ্ট্রের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়।

এদিকে শাহীনকে আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, শাহীনকে পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত, নেপাল, ইন্টারপোল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে।

ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, আখতারুজ্জামান শাহীন মূল সন্দেহভাজন এবং পলাতক। তাকে বিচারের আওতায় আনতে ভারত, নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, শাহীনকে ফিরিয়ে আনতে একটি প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ চলছে। তার পরিবারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ইন্টারপোলসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের আগে অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড রয়েছে। ওই নারীর ব্যাকগ্রাউন্ডও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

হত্যাকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিগগিরই তা প্রকাশ করব।’

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি সূত্র জানায়, এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার পর গত ১৮ মে নেপালে যায় আক্তারুজ্জামান শাহীন। নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে তিনি দুবাই গিয়েছিলেন।

গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য এমপি আনোয়ারুল কলকাতায় গেলে ১৩ মে নিখোঁজ হন।

তদন্তকারীদের মতে, একজন বাংলাদেশি মডেলকে ‘হানি ট্র্যাপ’ হিসেবে ব্যবহার করে এমপি আনোয়ারুলকে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার আবাসিক কমপ্লেক্সের একটি আভিজাত্য ফ্ল্যাটে ডেকে নেন শাহীন। ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশের ১৫ মিনিটের মধ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

ফ্ল্যাটে প্রবেশ করা মাত্রই এমপি আনারকে ক্লোরোফর্ম দেওয়া হয়। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করেন জিহাদ হাওলাদার (২৪)। মরদেহ খণ্ড-বিখণ্ড করার পর কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।

গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি পুলিশ জিহাদকে গ্রেপ্তার করেছে। জিহাদ মুম্বাইতে কসাইয়ের কাজ করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও চারজনের সঙ্গে এমপি আনারকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।

সিআইডির একটি দল ভাঙ্গার কৃষ্ণমতি গ্রামে পুকুরে মরদেহের অংশ খোঁজার জন্য ডুবুরি নামিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ভাঙ্গার কাছে এমপি আনোয়ারুলের মরদেহের খণ্ডাংশ শনাক্তের চেষ্টা করছে।

ভাঙ্গার কাছে পোলারহাটে কয়েকটি পুকুরে ড্রোন, আন্ডার ওয়াটার ক্যামেরা এবং ডুবুরির সাহায্যে মরদেহের খণ্ডাংশ শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে ওই সিআইডি কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024