শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ অপরাহ্ন

নীলের বিশ্বায়ন – নীল ও ঔপনিবেশিক বাংলায় গোয়েন্দাগিরি (পর্ব-৩৩)

  • Update Time : শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪, ১০.০০ পিএম

পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল

অনুবাদ : ফওজুল করিম


দ্বিতীয়তঃ বাংলাদেশের নীলকরদের অভিজ্ঞতার উপর এজন্যে নির্ভর করা যায় না যে নতুন পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই যখন নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেবে তা সমাধান করার তাত্ত্বিক জ্ঞান বাংলাদেশের নীলকরদের নেই। এই ধরনের তাত্ত্বিকজ্ঞান ও কৃষিকাজ ও রসায়ন সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবে নতুন প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা সম্ভবতঃ তারা করতে পারবে না। এ অবস্থায় তাদের নতুন শিল্পোদ্যোগ ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিকজ্ঞান সম্পন্ন নীলকর বাংলাদেশে নেই। তাদের মধ্যে কেউ যে সেনেগালে কোনো ফরাসী উপনিবেশে একই কাজ করতে যাবে সে সম্ভাবনাও নেই।

সেনেগালে বাণিজ্যিকভাবে নীল চাষ করা যায় কিনা তা দেখার জন্য সরাসরি সেনেগালে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করাই ছিল তার প্রস্তাব। তিনি মনে করতেন একবার সফল হওয়া গেলে একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত কৃষিবিদ সেনেগালে নীলগাছ আবাদের সমস্যাবলীর উপযুক্ত সমাধান করতে পারবেন। অবশ্যই তিনি বাংলাদেশের নীলকরের চেয়ে ভাল কাজ করবেন কেননা বাংলাদেশের নীলকর সেখানকার রীতিনীতি চালু করার চেষ্টা করবেন সেনেগালে যা নাকি সেখানে হয়ে পড়বে অপ্রয়োজনীয়।

সেনেগালে ইউরোপীয় বাজারের জন্য নীল উৎপাদনের কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না যদি না এই প্রকল্পে সেনেগাল সরকার ব্যাপকভাবে পুঁজি বিনিয়োগ না করে। তার হিসাব অনুযায়ী মধ্যমশ্রেণীর একটি নীলকুঠির (১২ থেকে ১৫টি চৌবাচ্চা) জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে পাঁচজন প্রধান কর্মচারী (একজন ইউরোপীয় ম্যানেজার, দুজন ইউরোপীয় সহকারী দুজন অধঃস্তন কর্মচারী) কয়েকশত সাধারণ শ্রমিক এবং বার্ষিক বায় নির্বাহের জন্য ৯০ হাজার ফ্রাঁ (ভবন, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য পুঁজির সুদ ব্যতিত)।

পিয়ের পল দারাক ১৮২৩ সালের মাঝামাঝি তার রিপোর্ট পেশ করেন। জুলাই মাসে তিনি বোর্দোতে পৌছেন। সেখানে পৌঁছে প্যারিসে মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন যে চন্দননগরের প্রশাসক তাঁকে রিপোর্টটি সরাসরি সেনেগালে পাঠাতে বলেছিলেন। কিন্তু দারাক মনে করেছিলেন রিপোর্টটি সরাসরি সেনেগলে পাঠানো উচিত নয় কারণ তা হয় তো নৌবাহিনীর মন্ত্রীর মনঃপুত হবে না। মন্ত্রণালয়ের বিবেচনা ও অনুমোদনের জন্য দারাক রিপোর্টটি পাঠালেন প্যারিসে।” নীলের রিপোর্টটিতে যা বলা হয়েছে তা বাস্তবে বুঝতে সুবিধা হবে বলে দারাক নীলগাছ জলে ভেজানোর কয়েকটি ট্যাঙ্ক-এর মডেল সঙ্গে এনেছিলেন। কিন্তু এগুলি ভারি ও প্যারিসে পাঠানো ব্যয়বহুল হবে মনে করে এবং সেগুলো সেনেগালে পাঠানো উচিত মনে করে এগুলো তিনি বোর্দো থেকে আর প্যারিসে পাঠাননি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024