নিজস্ব প্রতিবেদক
৪০ বছর পরও যাকে নিয়ে আজও বেলারুশ, উজবেকিস্তানের কোন ডিস্কোতে মাতামাতি হয়, তার নাম মিঠুন চক্রবর্তী।
রাশিয়ার কোন বৃদ্ধ যার নামে ছেলের নাম রেখেছে জিমি, সেই ডিস্কো ডান্সার মিঠুন চক্রবর্তী।
এখন কেমন আছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী?
গতকাল শুটিং সেটে অসুস্থ হয়ে পড়লে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ভারতীয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে।
৭৩ বছর বয়সী এ অভিনেতার শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে জানা যায়, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন অভিনেতা। অভিনেতার শরীরে ডান দিকটা খানিক দুর্বল হয়ে গিয়েছে।
হাত নাড়াতে কষ্ট হচ্ছে। তবে এখন তিনি পুরোপুরি সজ্ঞানে আছেন।
হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী শরীরের ডান দিকের ওপর ও নিচের অংশে ব্যথা নিয়ে সকালে কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন।
তার মস্তিষ্কের এমআরআইসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তার মস্তিষ্কের ইস্কেমিক সেরিব্রোভাসকুলার অ্যাকসিডেন্ট (স্ট্রোক) ধরা পড়েছে। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সচেতন এবং ভালো আছেন।
আপাতত অভিনেতাকে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। নিউরোলজি, কার্ডিয়োলজি এবং গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল দল গঠন করা হয়েছে। সেই মেডিক্যাল দলের কড়া পর্যবেক্ষণে রয়েছেন মিঠুন। বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কিভাবে তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি এগোবে। সকালেই এমআরআই করানো হয়েছে অভিনেতার।
অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর প্রযোজনায় ‘শাস্ত্রী’ ছবির শুটিং চলাকালীন অসুস্থ বোধ করেন তিনি।
সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। গত মাসের শেষে শুরু হয় ‘শাস্ত্রী’ ছবির শুটিং। এই ছবির মাধ্যমেই প্রায় ১৬ বছর পর আবার বড় পর্দায় ফিরছে মিঠুন চক্রবর্তী এবং দেবশ্রী রায়ের জুটি।
বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম নেয়া মিঠুন অভিনয় দক্ষতায় কাঁপিয়েছেন টালিগঞ্জ। কলকাতা থেকে মুম্বাই গিয়েও অমিতাভ বচ্চনদের সময়ে হয়েছেন বলিউডের সুপারস্টার। এর বাইরেও অভিনয় করেছেন ভারতীয় বেশ কয়েকটি ভাষার সিনেমায়।
মিঠুন চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৫২ সালে ১৬ জুন বরিশালে। তার পারিবারিক নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী। কৈশোর এবং শৈশবে অনেকটা সময় বরিশালে কাটিয়েছেন মিঠুন। পড়েছেন বরিশাল জিলা স্কুলেও। সেখান থেকে পারিবারিক কারণেই বাবা বসন্ত কুমার চক্রবর্তী ও মা শান্তি রানী চক্রবর্তীর সঙ্গে কলকাতায় স্থায়ী হন মিঠুন।
কলকাতায় গিয়ে নতুন করে শিক্ষাজীবন শুরু করেন তিনি। সেখানকার ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তীতে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এর বাইরেও মিঠুন চক্রবর্তী গ্র্যাজুয়েশন করেন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এফটিআইআই) থেকে।
নকশাল আন্দোলনের কারণে কলকাতা ছেড়ে মিঠুন পাড়ি জমান মুম্বাইয়ে। সেখানে অর্থকষ্টে পড়ে অভাবে দিন কাটিয়েছেন, থেকেছেন অন্যের বাড়িতেও। কৌতূহলে ভর্তি হন পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। সেখানেই তিনি নজরে পড়েন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের।
তারপর তো ইতিহাস….
Leave a Reply