শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৩০ অপরাহ্ন

কারণ ছাড়াই নারী এনজিওকর্মী চাকুরীচ্যুত : কারণ জানতে অফিস তালা

  • Update Time : শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৭.৫৮ পিএম

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার শামলাপুরে এক নারী এনজিও কর্মীকে কারণ ছাড়া চাকরিচ্যুতের অভিযোগ উঠেছে আইওএম (এমএইচপিএসএস)র সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার আবু জাফর মুহাম্মদ উদ্দিন ও সিনিয়র কাউন্সিল ফাহমিদা সুলতানা নিপুর বিরুদ্ধে। কারণ ছাড়া চাকরিচ্যুত এনজিওকর্মী জমিলা আক্তার (২৩), উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর নয়া পাড়া এলাকার মৃত হাবিব উল্লাহর মেয়ে। তিনি ১৭ আগস্ট ২০২০ থেকে এখন পর্যন্ত শামলাপুর এফডব্লিউসি, বাহারছড়ায় আইওএম এমএইচপিএসএস স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা হিসেবে নিযুক্ত আছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে , জসিম নামে এক ব্যক্তির সাথে জমিলা আক্তারের বিয়ে পারিবারিক ভাবে কাবিন রেজিস্ট্রি হলেও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এখনও হয়নি এবং জমিলা এখনও তার বাবার বাড়িতে থাকে। জসিম জমিলাকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে জমিলার পরিবার মোহরানা পরিশোধ করে নিয়ে যেতে বলে কিন্তু জসিম, জমিলাকে মোহরানা পরিশোধের মাধ্যমে নিতে চায় না এবং বারবার জমিলাকে তার পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে মোহরানা ছাড়া চলে যেতে বলে।

এ কারণে মো: জসিমের সঙ্গে জমিলার পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জসিম বারবার জমিলাকে জনসম্মুখে ছবি ও ভিডিও দেখানোর ভয় দেখিয়ে হয়রানি করে এবং জোরপূর্বক তাকে পরিবারের বিরুদ্ধে নিয়ে যেতে চায়। জমিলা তার পরিবারের বিরুদ্ধে মোহরানা ছাড়া জসিমের সাথে যেতে রাজি না হওয়ায় জসিম তাকে মাঠে কাজ করার সময় মাঠে গিয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করে। জমিলা তার স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হওয়ায় সে তার অফিসকে জানায় কিন্তু তার অফিস থেকে সে কোন ধরনের মানসিক সমর্থন পায়নি বলে জানান তিনি।জমিলা আরো জানান, গত ৩ মার্চ জালিয়াপালং ইউনিয়নের চেপটখালী এলাকায় জমিলা তার অন্য সহকর্মীদের নিয়ে মাঠে গেলে সেখানে জসিম তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তায় টেনে নিয়ে যেতে চায় এবং জসিমের বাড়িতে মোহরানা ছাড়া চলে যেতে বলে। অন্যথায় জমিলার পক্ষ থেকে তাকে তালাক দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। জসিমের মতে- জমিলা তাকে তালাক দিলে জসিম কর্তৃক জমিলাকে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।

জমিলার হয়রানির কথা যখন অন্য সহকর্মীরা ফাহমিদা সুলতানা নিপুকে জানায় তখন ফাহমিদা তাদেরকে বলে জমিলাকে সেখানে রেখে অফিসে ফিরে আসতে । জমিলার সহকর্মীগণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে জমিলাকে সাথে নিয়ে সবাই অফিসে আসেন। ফাহমিদা সুলতানা নিপু জমিলাকে বলেন, “ আপনি আপনার স্বামীর দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন তাই আপনার এখন মনমানসিকতা ভাল নেই তাই আপনার কয়েকদিন বিশ্রামের প্রয়োজন এবং আপনি কয়েকদিন বাড়িতে বিশ্রামে থাকুন, আমি আপনাকে পরে ফোন করব ডিউটিতে আসার জন্য- এই বলে জমিলার আইডি কার্ড এবং ইউনিফর্ম নিয়ে নেয়।তারপর থেকে জমিলা বাড়িতেই থাকলেও তাকে এখনো চাকরিতে যোগদানের জন্য ডাকা হয়নি। এ বিষয়ে ফাহমিদা সুলতানা নিপুর সাথে জমিলা যোগাযোগ করলে তিনি বলেন- জসিম যদি আমাকে বলে আপনাকে ডিউটিতে রাখতে তাহলে রাখব অন্যথায় আপনি যদি ডিভোর্স লেটার দেখান তাহলে আপনাকে অফিসে নিয়মিত করা হবে। জমিলা আরও জানান, আমি স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হচ্ছি আর আমার বিষয়টা পারিবারিক, যেটা পরিবার সমাধান করবে। নারী এনজিওকর্মী জমিলার অন্য সহকর্মীরা জানান, এই মুহুর্তে তার মানসিক সাপোর্ট দরকার, চাকরি বন্ধ রাখার কারনে তিনি দিন দিন মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ছে, কারন তার চাকরিটা খুব দরকার। এবিষয়ে জানতে ফাহমিদা সুলতানা নিপুকে কল দিলে তিনি জানান, আমি বিষয়টা দেখছি। আপাতত নিউজ না করতে বলে কল কেটে দেন তিনি। যেখানে বেনিফিসিয়ারিদের মানসিক সাপোর্ট দেয় এমএইচপিএসএস টিম সেখানে তাদের একজন সেচ্ছাসেবীকে চাকরিচ্যুত এবং তার পারিবারিক বিষয়ে কেন অফিস তাকে মানসিক ভাবে চাপ দিচ্ছে ? বা কোন কারনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তা জানতে আইওএম (এমএইচপিএসএস) এর সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার আবু জাফর মো: উদ্দীনকে কল দিলে তিনি তার কথা বলার অনুমতি নেই এবং কথা বলতে কমিনিউকেশন অফিসার তারেক মাহমুদের অনুমতি লাগবে বলে কল কেটে দেয়। এ বিষয়ে তারেক মাহমুদকে ইমেইল করলেও দীর্ঘ দুই সাপ্তাহ পরও কোনো উত্তর দেয়নি।অভিযোগ রয়েছে সিনিয়র কাউন্সিল ফাহমিদা সুলতানা নিপু সেচ্ছাসেবী নারীদের তার বাসার কাজে ব্যবহার করে এবং লোকাল সেচ্ছাসেবী ছেলেদের সাথে খুব বাজে আচরণ করে। কেউ তার কথার অমতে থাকলে তার উপর বিভিন্ন ভাবে চালানো হয় মানসিক নির্যাতন ও পান থেকে চুন ঘষলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024