নিজস্ব প্রতিবেদক
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে শ্রমিকদের অধিকার দিন দিন বাড়বে, কমবে না। সোমবার (২২ এপ্রিল) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোন দেশ আমাদের কী দেবে আর কী দেবে না—সেটার ওপর নির্ভর করে শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে না। তাঁর সরকারের লক্ষ্য শ্রমিকরা যে অধিকার ভোগ করছে, তার থেকে বেশি যাতে তারা পায়, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরতে গিয়ে আনিসুল হক বলেন, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের জিজ্ঞাসা ছিল, থ্রেসহোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার) কমানো নিয়ে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের দিকে এটি ছিল ৩০ শতাংশ। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সাথে বৈঠকের পর এই থ্রেশহোল্ড ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলাম, এটা আরও কমানো হবে, তবে ধীরে ধীরে। এবার বাংলাদেশ শ্রম আইনে যে সংশোধনী আনা হচ্ছে, তাতে প্রথমে প্রস্তাব ছিল থ্রেসহোল্ড ২০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে কিন্তু সেখানে শর্ত ছিল, এটা শুধু যেসব কারখানায় তিন হাজার বা তার চেয়ে বেশি শ্রমিক কর্মরত, তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে। কিন্তু এখন সেই সীমাও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংশোধনী পাস হলে সকল কারখানার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ থ্রেশহোল্ড প্রযোজ্য হবে।
আগামী বাজেট অধিবেশনের শেষের দিকে বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন বিল পাস হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘তারা (মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল) মূলত বাংলাদেশের শ্রম আইন, শ্রমিকদের অধিকার এবং তা নিয়ে আমরা কী কাজ করছি, তা নিয়ে আমার সাথে আলোচনা করেছেন। তাদের গুরুত্বপূর্ণ যে প্রশ্ন ছিল, সেটা হচ্ছে—বাংলাদেশ শ্রমিক আইনের যে সংশোধন হচ্ছে, সেটার বর্তমান পরিস্থিতি কী, কী করা হচ্ছে? এগারোটা ব্যাপারে তাদের জানার ইচ্ছা ছিল এবং এ ব্যাপারে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, তা তাদের জিজ্ঞাসায় ছিল।’
বাংলাদেশের শ্রম আইন ও অধিকারের বিষয়ে শোনার পর মার্কিন প্রতিনিধিদল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই আলোচনার পর মার্কিন প্রতিনিধিরা আমাকে বলেছেন, তারা সন্তুষ্ট হয়েছে।’
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএসটিআরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চ, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের লেবার অ্যাটাসে লিনা খান সহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের সচিব হাফিজ আহমেদ চৌধুরী সহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply