ফয়সাল আহমেদ
বর্তমান ঢাকা সহ বাংলাদেশের যে ভয়াবহ গরম এর ফলে একটা বড় অংশ মানুষ পানিবাহিত রোগ যেমন কলেরা ও ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগে ভুগছে। রোগীদের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে আজ দুপুর দুইটার সময় গিয়ে মহাখালী উদরাময় গবেষনা ও হসপিটালে [আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (icddr,b)]কথা হয় ডাক্তার, স্বাস্থ্য সেবিকা এবং রোগীদের সাথে।
প্রথমে কথা হয় একজন স্বাস্থ্য সেবিকার সাথে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক), তিনি বলেন আগের থেকে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে কিন্তু খুব বেশি বাড়েনি। হসপিটালকে মূলত এখন চাপমুক্তই বলা যায়। রোগীরা সুস্থ এবং সুন্দরভাবে থাকতে পারছে।
পরবর্তীতে কথা হয় হসপিটালে দায়িত্বরত ডাক্তার মোঃ সোহেল এর সঙ্গে । তার কাছে জানতে চাই গরমের কারণে শিশুদের ডায়রিয়া কলেরা কেমন বৃদ্ধি পেয়েছে?
তিনি বলেন, শুধু যে শিশুদের বেড়েছে বিষয়টা এমন না। শিশুরা, বয়স্করা উভয়ই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এটা যে অনেকবেশি তা অবশ্য নয়, স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেড়েছে।
তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন কলেরা রোগী হসপিটালে গেলে সাথে সাথে রোগ উপশমের জন্য কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়?
তিনি জানান, আমরা আগে দেখি রোগীর কন্ডিশন কেমন। রোগী’র অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেই রোগীকে হসপিটালে ভর্তি করে ট্রিটমেন্ট করবেন নাকি ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেবেন। তাছাড়া একটি রোগী আসার সাথে সাথে তার ট্রিটমেন্ট শুরু করে দেই, স্যালাইন, খাবার স্যালাইন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো দিয়ে ।
কোন ধরনের রোগী বা কোন বয়সের রোগী বেশি দেখা যাচ্ছে?
তিনি বলেন, এক মাস আগেও শিশুর সংখ্যা ছিল অনেক। কিন্তু বর্তমানে শিশুর সংখ্যা অনেকটাই কম। এখন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বেশি। এক মাস আগে শিশুর ছিল ৮০%। কিন্তু বর্তমানে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর সংখ্যা সমান সমান।
পরবর্তীতে ভর্তিরত কিছু রোগীর সাথে কথা বলি। প্রথমে কথা হয় দিলরুবা খানের সঙ্গে(৩২)। উনি বলেন,এখানকার ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো এবং উন্নত। তিন দিন হলো আমি এখানে ভর্তি হয়েছি। বেশ ভালো চিকিৎসা এবং সেবা পাচ্ছি। অন্যান্য হসপিটালে যেমন সিট পাওয়ার বা একটু বেশি সুযোগ সুবিধা নেওয়ার জন্য ঘুষ দিতে হতে হয় এখানে এমনটি করতে হয়নি আমার। বলতে গেলে দশটি টাকাও খরচ হয়নি। এখানে সকলকে সমান ভাবে সেবা প্রদান করা হয়। প্রথম দিকে অনেক খারাপ অবস্থা ছিলো আমার এখন বেশ ভালো আছি। আজ চলে যাব ।
রোগীর নাম জামাল (১১০)। কথা হয় ওনার ভাইয়ের সাথে, উনি বলেন বেশ ভালো সেবা যত্ন করছে ওনারা। অনেক পরিষ্কার পরিছন্ন উনাদের ব্যবস্থাপনা। এত বয়স্ক একটি লোকের ডায়রিয়া জনিত রোগের এত ভালো সেবা দিবে তা আমরা কখনো ভাবি নি। রোগী এখন বেশ ভালো আছে।
রোগীর নাম উমর (৯)। কথা হয় রোগীর মায়ের সঙ্গে, ডায়রিয়া হয়েছে তাই দুইদিন ধরে সেখানে ভর্তি আছে তার ছেলে। তিনি বলেন, এখন আমার ছেলে বেশ সুস্থ। আগামীকালের মধ্যে হয়তো চলে যাব।
Leave a Reply