শ্রী নিখিলনাথ রায়
এই সময়ে জগৎশেঠ বাটা দিয়া মুর্শিদাবাদ টাকশালে নিজের সমস্ত মুদ্রা মুদ্রিত করিতেন। ১৭৬০ খৃঃ অব্দে, কাশীমবাজারের অধ্যক্ষ ব্যাটসন সাহেব কলিকাতায় লিখিয়া পাঠান যে, জগৎশেঠ শতকরা এক দ্বিতীয়াংশ বাটা দিয়া আপনার মুদ্রা মুদ্রিত করিতেছেন। তজ্জন্য তাঁহার বিলক্ষণ লাভ হইতেছে। নবাব তাঁহার নিকট ঋণপাশে বন্ধ থাকায়, তাঁহাকে ঐরূপ অনুমতি প্রদান করিয়াছেন।
পলাশীর যুদ্ধের পরও জগৎশেঠের সহিত ইংরেজদের অর্থসম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হয় নাই। অনেক দিন পর্যন্ত সে সম্বন্ধ দৃঢ়ভাবেই ছিল। ১৭৬০ খৃঃ অব্দে মার্চ মাসে ঢাকার ইংরেজ অধ্যক্ষ কলিকাতায় লিখিয়া পাঠান যে, তাঁহাদের ঢাকার কোষাগারে অর্থের এরূপ অভাব উপস্থিত হইয়াছে যে, মাসিক ব্যয়- নির্ব্বাহ হওয়া সুকঠিন। এরূপ স্থলে কোম্পানীর কার্য্যের জন্য টাকা না পাঠাইলে অথবা জগৎ শেঠের নিকট হইতে টাকা লইবার অনুমতি না দিলে, অত্যন্ত বিপদ ঘটিবার সম্ভাবনা। ইংরেজেরা জগৎশেঠকে বরা- বরই সম্মান প্রদর্শন করিতেন।
অনেক স্থলে তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৭৫৯ খৃঃ অব্দের সেপ্টেম্বর মাসে নবাব জাফর আলি খাঁ (মীর জাফর) কলিকাতায় উপস্থিত হইলে, সঙ্গে জগৎশেঠ ও অন্যান্য কৰ্ম্ম- চারিগণ গমন করেন। ইংরেজেরা তাঁহাদের অভ্যর্থনার জন্য যথেষ্ট যত্ন করিয়াছিলেন।
নবাবের বাসস্থান ও কলিকাতার দুর্গ প্রভৃতি-উজ্জ্বল আলোকমালায় সুসজ্জিত এবং পতাকাশোভিত কৃত্রিম তোরণাদি দ্বারা সমস্ত কলিকাতা নগরীকে শোভাময়ী করা হইয়াছিল। তদ্ভিন্ন পান, ভোজন, নৃত্যগীত ও অন্যান্য আমোদ প্রমোদেরও সুবন্দোবস্ত করা হয়।
Leave a Reply