শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫০ অপরাহ্ন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৪৬)

  • Update Time : রবিবার, ৫ মে, ২০২৪, ১১.০০ পিএম

শ্রী নিখিলনাথ রায়

 

করিয়া থাকেন। ওয়ারেন হেষ্টিংস হরকচাঁদকে যে অনুগ্রহ দেখাইবেন বলিয়া ব্যক্ত করিয়াছিলেন, লর্ড কর্ণওয়ালিস্ তাহা অবগত হইয়া হরকচাঁদের উপকার করিতে প্রতিশ্রুত হন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, হরকচাদেরও সহসা মৃত্যু হওয়ায় কর্ণওয়ালিস্ হরকচাঁদের অপ্রাপ্তবয়স্ক পুত্রদিগের প্রতি কোন কার্য্যের ভার প্রদান করিতে সাহসী হন নাই।

হরকচাঁদের মৃত্যুর পর তাঁহার দুই পুত্র ইন্দ্রচাঁদ ও বিষণচাঁদ পিতৃ- সম্পত্তি তুল্যাংশে বিভাগ করিয়া লন। ইন্দ্রচাঁদ ব্রিটিশ গবর্ণমেন্টের নিকট হইতে জগৎশেঠ উপাধি লাভ করেন। তিনিই শেষ জগৎশেঠ। তাঁহার পর আর কাহাকেও জগৎশেঠ উপাধি দেওয়া হয় নাই। ইন্দ্রচাদ উপাধিপ্রাপ্তি-উপলক্ষে অনেক ধূমধাম করিয়াছিলেন এবং তজ্জন্য তাঁহাকে অনেক অর্থ ব্যয় করিতে হয়। তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে জগৎশেঠ- দিগের গৌরব একেবারে অন্তর্হিত হয়।

ইন্দ্রচাঁদের পর, তাঁহার পুত্র গোবিন্দচাঁদ শেঠদিগের গদীতে আরোহণ করেন। তিনি অত্যন্ত অমিতব্যয়ী ছিলেন। পৈতৃক যাহা কিছু সম্পত্তি ছিল, গোবিন্দচাঁদ তৎসমস্ত অপব্যয়ে নষ্ট করিয়া ফেলেন। ক্রমে তিনি আপনাদিগের বহুকালের রক্ষিত রত্নালঙ্কারাদি বিক্রয় করিতে আরম্ভ করেন। তাহাতেও জীবিকানির্ব্বাহ কঠিন হইয়া উঠিলে, বৃত্তির জন্য ব্রিটিশ গবর্ণমেন্টের শরণাগত হন।

ডিরেক্টারগণ অনেক নাসিকা- কুঞ্চনের পর মুর্শিদাবাদের এজেন্ট মেজর জেনারেল রেপারের ও ভারতগবর্ণমেন্টের অনুরোধে ১৮৪৩ খৃঃ অব্দে গোবিন্দচাঁদের জীবনাবধি মাসিক ১২০০ শত টাকা বৃত্তি নিদ্দিষ্ট করিবার অনুমতি প্রদান করেন। তাহার পর বিষণচাঁদের পুত্র কিষণচাঁদ স্বতন্ত্র বৃত্তির জর আবেদন করিলে, ডিরেক্টারগণ উত্তর প্রদান করেন যে, যখন গোবিন্দচাঁদকে বৃত্তি দেওয়া হয়, তখন তাঁহারা এই রূপ মনে করিয়াছিলেন, ইহা ব্যক্তিগত বৃত্তি নহে, পরিবারস্থ সকলের প্রতি- পালনের জন্যই তাহা প্রদত্ত হইয়াছে।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024