ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ আগামী ৮ই মে। দলীয় প্রতীক না থাকায় এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই একাধিক প্রার্থী ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এতে দলটির প্রার্থীদের মধ্যে বিভক্তি চরমে পৌঁছেছে। প্রার্থীরা বিভিন্ন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশন ও দলীয় প্রধানের কাছে চিঠি দিয়েছেন। যদিও ইসির পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
চুয়াডাঙ্গার সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর তার ভাইকে প্রার্থী করে নির্বাচনে চরম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন দামুড়হুদা উপজেলার প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এসএএম জাকারিয়া আলম। তিনি নির্বাচন কমিশন ও দলীয় সভাপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছেন। অভিযোগপত্রে ওই প্রার্থী লিখেছেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলী মুনসুর বাবু ও তার পরিবারের সদস্যরা বলে বেড়াচ্ছেন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, প্রিসাইডিং অফিসার আমাদের নিয়ন্ত্রণে। আমরা ত্রিশ হাজার ভোট আগে বুঝ করে রাখবো এবং পোলিং এজেন্ট বের করে দেবো। কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে দেবো না।’ এতে ভোটাররা আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছে এবং কেন্দ্রে যেতে উৎসাহ হারাচ্ছে। এ ছাড়া আরেক অভিযোগে তিনি বলেছেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী স্থানীয় এমপি’র ভাই।
প্রার্থীর ভাইয়েরা বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি নিয়ে স্থানীয় চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন। আরও একটি অভিযোগপত্রে তিনি টাকা অনুদানের অভিযোগ এনেছেন।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল হাছান বাছির ভূঁইয়া প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, সংসদ সদস্য আ হ ম মোস্তফা কামালের ব্যক্তিগত সহকারী সচিব রতন কুমার সিংহ আনারস মার্কা প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন পথসভা ও জনসভায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং নির্বাচন পরিপন্থি উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, আনারস মার্কার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রার্থী, ভোট না পেলেও তাকেই বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া রতন কুমার সিংহ নির্বাচনী এলাকার বহির্ভূত ব্যক্তি। রতন কুমার সিংহের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ইসির কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা প্রার্থী মো. ফরিদ হাসান ওদুদ ইসিতে অভিযোগ করে বলেছেন, রেলমন্ত্রী জিল্লুর হাকিমের পুত্র আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিম বিভিন্ন জনসভায় প্রকাশ্যে আমাকে এবং আমার কর্মী সমর্থকদের হত্যার হুমকি প্রদান করছেন। যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মন্ত্রীপুত্রকে প্রকাশ্য নির্বাচনী মাঠ থেকে প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি।
চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মতলব উত্তর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ কুদ্দুস বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া নির্বাচনী এলাকায় তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করে মোহাম্মদ মানিকের (ঘোড়া প্রতীক) পক্ষ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে অর্থ লেনদেন করছেন। মতলব উত্তর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ১ লাখ টাকা করে এবং ১টি পৌরসভায় ২ লাখ টাকা করে মোট ১৬ লাখ টাকা বিতরণ করেছেন। যা চূড়ান্তভাবে নির্বাচনী আইন লাঙ্ঘিত হয়েছে। এতে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং ভোট প্রয়োগের ব্যাপারে ভোটারদের আস্থা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। তিনি আরও বলেছেন, আমার প্রতীক কাপ-পিরিচ মার্কার কর্মীদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করে দিবে বলেও হয়রানি করছে। এমতাবস্থায় মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ মো. আ. জলিল বলেছেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জামিল হাসান দুর্জয় গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই। তিনি প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারে এমন ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েক ধাপে গোপন বৈঠক করেন। গত ২৭শে সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার সাবাহ্ গার্ডেন নামে একটি বিনোদন কেন্দ্রে শিক্ষকদের নিয়ে গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। ওই বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধাসহ চাকরিকালীন বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলে নির্বাচনে সহযোগিতা চান। বিষয়টি প্রশাসনের কর্মকর্তারা টের পেয়ে ওই বিনোদন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে সত্যতা পেয়েছেন। এমতাবস্থায় বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তাদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত রাখতে অনুরোধ করছি।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী এএনএম মইনুল ইসলাম ওসিকে প্রত্যাহার চেয়ে বলেছেন, হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল নামে এক ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক পরিচয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারপর থেকে পুলিশ ও র?্যাব ওই ব্যক্তিকে প্রটোকল দিচ্ছে এবং আমার নেতা কর্মীদেরকে মামলা ও গ্রেপ্তারের হুমকি দিচ্ছে এবং ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। তারা বলছে, কেন্দ্রে ভোটার আসা লাগবে না, পুলিশই ভোট নিয়ে নিবে। পুলিশ প্রশাসনের এমন ভূমিকায় জনমনে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে এবং সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রত্যাহার চেয়েছেন এই প্রার্থী।
সংসদ সদস্য ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কলারোয়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেছেন, সাতক্ষীরা-১ আসনের এমপি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন নিয়ম ভঙ্গ করে আমার পক্ষের কর্মীদেরকে হামলা-মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন এবং আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলতাফ হোসেন লাল্টুর পক্ষালম্বন করে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বক্তব্য রেখে চলেছেন। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। এমতাবস্থায় এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন এই প্রার্থী।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, সরিষাবাড়ী উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এসেছে। তবে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে কার্যকারী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশন। সংস্থাটি বিধি ভঙ্গকারীদের শুধুমাত্র সতর্ক করেছে।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, মন্ত্রীরা সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়ায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। এমপির ভাই বা আত্মীয় নির্বাচন করবে কিনা এ নিয়ে আইনে কোনো ব্যত্যয় নেই। নির্বাচন কমিশন দেখবে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় কিনা। আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে। যে অভিযোগ আসছে সেগুলো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ডিসি, এসপি ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে রিপোর্ট এনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের আত্মীয়স্বজন প্রার্থী থাকতে পারেন কিন্তু তারা কোনো অবৈধ প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী কোনো অবৈধ চাপ দিলে, তা আমলে না নেয়ার জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সব প্রার্থী ইসির কাছে সমান। কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি না মানেন বা অবৈধ প্রভাব বিস্তার করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো, উৎসবমুখর। যেহেতু কয়েক ধাপে ভোট হচ্ছে, তাই ফোর্স (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য) বেশি দেয়া সম্ভব হবে। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে বেশি ফোর্স মোতায়েন করা হবে।
কানাডায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার ঘটনায় তিন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ওই তিন জনের বিষয়ে তথ্য জানার জন্য অপেক্ষা করবে ভারত।
আজ রোববার এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার কানাডা পুলিশ নিজ্জর হত্যার ঘটনায় তিন ভারতীয়কে আটক করেছে এবং ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে।
শনিবার গ্রেপ্তার খবরের একদিন পর জয়শঙ্কর বলেন, তিনি গ্রেপ্তারের খবর দেখেছেন। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন ভারতীয়রা আপাতদৃষ্টিতে কোনো গ্যাং ব্যাকগ্রাউন্ডের হতে পারে। পুলিশ আমাদের কী জানায় সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘তবে আমি যেমনটা বলেছি, আমাদের উদ্বেগের বিষয় যা আমরা তাদের বলে আসছি তা হলো, তারা ভারত থেকে বিশেষ করে পাঞ্জাব থেকে সংগঠিত অপরাধ তারা কানাডায় করার অনুমতি দিয়েছে।’
কানাডায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয় ভার্মা বলেছেন, গ্রেপ্তার হওয়া তিন ভারতীয়ের বিষয়ে কানাডা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিয়মিত আপডেট পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তারা।
‘আমি বুঝতে পারছি যে কানাডার সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তদন্তের ফলেই এই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি কানাডার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।
গত শুক্রবার কানাডার আলবার্টার এডমন্টন শহর থেকে ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিরূপণে সাত সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মিহির কুমার দোকে আহ্বায়ক করে ওই কমিটিতে রাখা হচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে।
রোববার রাত দশটার দিকে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধান বন সংরক্ষণ মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। তিনি বলেন, আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাত সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিরূপণ করবে।
আগুন লাগার সব কারণকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া মৌয়ালদের মাধ্যমে আগুন ছড়াতে পারে। যাঁরা মাছ ধরেন, তাঁরা ইচ্ছা করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন কি না—সেটিও উড়িয়ে দিচ্ছি না। এমনকি বনের মধ্যে গিয়ে সিগারেট খাওয়ার ফলে আগুন লেগেছে কি না—সেটিকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। সবগুলো মাথায় নিয়েই কাজ করা হচ্ছে।’
আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে প্রধান বন সংরক্ষক বলেন, ৪০-৫০ বছর আগে থেকে এলাকাটা বেশি উঁচু হয়ে গেছে। নদী ও খালগুলো মরে যাওয়ায় সেখানে কোনো জোয়ার-ভাটা হয় না। যার ফলে ম্যানগ্রোভ বনভূমিতে যে বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার, ওই এলাকার বনভূমিতে তা নেই। শুধু বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকার ভূমি কিছু পানি পায়। সারা বছর গাছের পাতা পড়ে প্রচুর হিউমাস তৈরি হয়। যার ফলে চৈত্র-বৈশাখ মাসে শুষ্ক মৌসুমে সেখানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
আগুন নিভেছে কিনা জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আজকে (রোববার) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আমি প্রায় এক ঘণ্টা বনের মধ্যে আগুন লাগার স্থান পরিদর্শন করেছি। তবে কোথাও মাটির ওপরে আগুন দেখতে পাইনি। ওই এলাকায় প্রচুর শুকনো পাতা ও পাতার নিচে হিউমাস রয়েছে। হিউমাসের মধ্যে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে আগুনের কুণ্ডলী থাকতে পারে। যেকোনো সময় সেখান থেকে আগুনের শিখা বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই রাতের বেলায় হিউমাসে পানি ছিটানোর জন্য দুই স্টেশনের ২০ জন বনকর্মীকে বলা হয়েছে। রাত ৯টা থেকে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন।’
রাজধানীসহ দেশের ছয় জেলায় গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার (৫ মে) কালবৈশাখী ও বজ্রপাতে মা-ছেলে ও স্কুলশিক্ষার্থীসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ: শনিবার (৪ মে) রাতে করিমগঞ্জের নিয়ামতপুর হাজিপাড়া ঘোনারবাড়ি গ্রামে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ পড়ে ছেলেসহ অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর মৃত্যু হয়। এতে আরও একজন আহত হন। মৃতরা হলেন- ওই গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুপ তারা (৪৬) এবং তার ছেলে তাইজুল ইসলাম (৫)।
টাঙ্গাইল: ঘাটাইলের ফতেরপাড়া-খিলপাড়া সড়কে গত শনিবার রাতে বৃষ্টিপাতে বজ্রপাতে ওয়াজেদ আলী খান (৫০) নামে এক বাবুর্চির মৃত্যু হয়। ওয়াজেদ উপজেলার ২ নম্বর ঘাটাইল ইউনিয়নের খিলপাড়া এলাকার মৃত সোনা খার ছেলে।
ইসলামপুর (জামালপুর): ইসলামপুর উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের কটাপুর এলাকায় শনিবার রাতে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে আব্দুল মজিদ (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। মজিদ ওই এলাকার বাসিন্দা।
খাগড়াছড়ি: দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের মধ্যবেতছড়ি গ্রামে রোববার ভোরে ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বজ্রপাতে একটি টিনের ঘরে আগুন লেগে হাসিনা বেগম (৩০) ও ছেলে হানিফ মিয়ার (৮) মৃত্যু হয়।একই দিন ভোরে বজ্রপাতে উপজেলার ১ নম্বর রামগড় ইউনিয়নের দুর্গম হাজাছড়া (ডাক্তারপাড়া) এলাকায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বজ্রপাতে গংজ মার্মাসহ (৫০) দুটি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়। গংজ মার্মা দুর্গম হাজাছড়া এলাকার কংজ্র মার্মার ছেলে। একই সময় মাটিরাঙ্গায় বজ্রপাতে সমিকা ত্রিপুরা (২৬) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।
রাঙামাটি: কাউখালী উপজেলায় বজ্রপাতে আর্ষা চাকমা (১৪) নামে এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। রোববার সকালে উপজেলার দুর্গম ফটিকছড়ি ইউনিয়নের বার্মাছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আর্ষা চাকমা বর্মাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
Leave a Reply