বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনে উদার গণতন্ত্রের অত্যন্ত সঠিক একটি সংজ্ঞা দেন। তিনি বলেন, ” যদি কেউ নায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও, একজনও যদি সে হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।”
১৯৭১ থেকে আজ ২০২৪। বাংলাদেশ ও পৃথিবী’র ওপর দিয়ে অনেক পরিবর্তন বয়ে গেছে। তবে সব পরিবর্তনের পরেও একটি সমাজে সব সময়ই কিছু চিরায়ত ধারা থাকে। যেগুলো সভ্যতার অন্যতম মাতা সাগরের বা নদীর স্রোতধারার মতো। যা সব সময়ই প্রবাহমান রাখা দরকার। তেমনি সভ্যতার অন্যতম স্রোতধারা হলো একটি উদার সমাজ ব্যবস্থা। আর সে সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভ, সত্যকে মেনে নেয়া বা সত্যকে মেনে নিতে সমাজের কোন শক্তি বা রাষ্ট্র যেন কখনই কোন বাধা না হয়। বরং একজনও যদি তার অবস্থানে থেকে কোন সত্যকে উপলব্দি করে- তাহলেও তিনি যেন তা নির্ভয়ে প্রকাশ করতে পারেন। সে প্রকাশের বিরুদ্ধে যেন কোন প্রাচীর না ওঠে।
পৃথিবীর সকল বড় সভ্যতা এমনিভাবে সত্যকে প্রাচীর মুক্ত করার ফলেই বেড়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধু’র ৭ মার্চের ভাষণে বাস্তবে তেমনি একটি সভ্যতার দ্বার উম্মোচন করা বা একটি সভ্যতাকে এগিয়ে নেবার সেই নিশ্চয়তা ও পর্থ নির্দেশ ছিলো। যা বঙ্গবন্ধু একজনের সত্যকে মেজরিটির বিনাবাক্যে মেনে নেবার নিশ্চয়তা’র ভেতর দিয়ে দিয়েছিলেন। তার এ দর্শন থেকে এ সত্যও প্রকাশ হয়, তিনি যে বাংলাদেশ রাষ্ট্র চেয়েছিলেন, সেখানে সত্য’র জন্য কোন প্রাচীর থাকবে না। বরং সভ্যতা বিকাশের সহায়ক হবে রাষ্ট্র ও সমাজ।
আজ ২০২৪ এ নতুন আরেকটি প্রজম্ম যখন ৫৪ বছর পরে এই ৭ মার্চ পালন করছে, তখন তাদের সামনে রাষ্ট্র বিপ্লব নয়, তাদরে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে বাঙালির চিরায়ত সহজিয়া সভ্যতাকে এগিয়ে নেবার দায়ভার বা সে পথে হাঁটা। আর তেমন একটি সমাজ গড়া। যে সমাজ ছাড়া বাস্তবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র’র সবটুকু রশ্মি’র বিকিরণ হয় না।
তাই আজ ৭ মার্চের গুরত্ব ১৯৭১এ কি ছিলো তার থেকে বড়- ওই দর্শনের ওপর ভিত্তি করে বাঙালি কতটা উদার ও সহজিয়া সভ্যতা ও রাষ্ট্র গড়তে পারবে সেটাই। আর সে পথে যিনি যত বেশি আন্তরিকাতার সঙ্গে হাঁটবেন তিনিই তত বেশি ৭ মার্চের ভাষনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের যে দর্শন সেদিন প্রকাশ হয়েছিলো তার প্রতি প্রকৃত নিষ্ঠাবান হবেন।
Leave a Reply