ঢাকায় পিটার হাসের উত্তরসূরি হচ্ছেন ডেভিড মিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলকে মনোনয়ন দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউজ এ মনোনয়নের কথা জানায়।
ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভিড স্লেটন মিলের নাম ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে জ্যৈষ্ঠ কূটনীতিক মিলের মনোনয়ন এরই মধ্যে সিনেটে পাঠানো হয়েছে। সিনেটে শুনানির পর মিলকে যোগ্য মনে হলে তবেই মনোনয়ন চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রদূত করে তাকে ঢাকায় পাঠানো হবে। মিল ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হলে বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
হোয়াইট হাউজের তথ্য অনুযায়ী, ডেভিড মিলি প্রায় ১০ বছর আগে ঢাকায় মার্কিন মিশন উপপ্রধান ছিলেন। ডেভিড স্লেটন মিলি মার্কিন ফরেন সার্ভিসের মিনিস্টার-কাউন্সেলর পদমর্যাদার জেষ্ঠ কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি চীনের বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর আগে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনৈতিক ও ব্যবসাবিষয়ক ব্যুরোর বাণিজ্য নীতিবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ছিলেন।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ রিফাতের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে।
তার বাবা মোহাম্মদ আমানউল্লাহ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক এবং মা নিলুফার খানম সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার সকালে উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন ও স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেছিলেন।
প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় বিমানটি কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে। তাৎক্ষণিক দুই পাইলট জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। কিন্তু বাঁচানো যায়নি আসিম জাওয়াদ রিফাতকে।
ছয় বছর বয়সী মেয়ে, এক বছর বয়সী ছেলে, স্ত্রী ও পিতা-মাতাকে রেখে তিনি পাড়ি জমালেন অনন্তলোকে।
বাবা-মায়ের কাজের সুবাদে ছোটবেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন রিফাত। সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ২০১০ সালে তিনি যোগ দেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ শহরের দাশরা এলাকায় তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের কান্না থামছেই না। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা নিলুফা খানম পাগলপ্রায়।
সেখানে কথা হয় নিহত পাইলটের খালা পারভীন আক্তারের সঙ্গে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রিফাতের (আসিম জাওয়াদ) বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল ছেলে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই রিফাতের স্বপ্ন ছিল পাইলট হবে, বিমান বাহিনীতে যোগ দেবে।’
‘বুয়েটে, সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হয়নি। স্বপ্ন পূরণ করেছে পাইলট হয়ে। শেষে বিমান দুর্ঘটনায়ই তার মৃত্যু হলো। চলে গেল পরপারে,’ বলেন পারভীন আক্তার।
তিনি জানান, স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদের স্ত্রী তাদের মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামে বিমান বাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকায় আছেন।
নিহতের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রিফাত খুব মেধাবী ছিলেন। কোনোদিন পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি, প্রথম হয়েছেন। তিনি খুব মিশুক ছিলেন। রোজার ঈদের ছুটিতেও বাড়িতে এসেছিলেন।’
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের পর দুই দেশের সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে যাবেন।
ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে বৈঠকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সচিব বলেন, বৈঠকে তিস্তা প্রসঙ্গেও কথা হয়েছে। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রসচিব তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখান।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানানো। অদূর ভবিষ্যতে এই সফর হবে।
ভারত ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আমন্ত্রণ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দিল্লি সফর কবে হবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সফরটি শিগগিরই হবে। ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। নির্বাচন শেষে সরকার গঠনের পর দুই দেশের সুবিধাজনক সময়ে সফরের আয়োজন করা হবে। সফরের সুনির্দিষ্ট সময় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠকের আগে বিনয় কোয়াত্রা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রধানমন্ত্রীর ভারত ও চীন সফর সম্পর্কে জানতে চান সাংবাদিকেরা। দুই দেশের মধ্যে কোন সফরটি আগে হবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। তিনি কেবল বলেন, দিল্লি তো কাছে, বেইজিং একটু দূরে।
সন্ধ্যায় কূটনৈতিক সূত্রগুলো প্রথম আলোকে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পিত দিল্লি সফর নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলবে। এই সফর জুনের শেষ দিকে বা জুলাইয়ে করা যায় কি না, এমন বিকল্প নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা চলছে।
তিস্তায় মনোযোগ
ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় আমরা একটা বড় প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমরা বলেছি, তিস্তার প্রকল্পটি আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। তাতে আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।’
তিস্তায় চীনও অর্থায়ন করতে চাইছে, এমন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত যে সহায়তা করতে চাইছে, তা নিয়েই আজ আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ভারতে নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদ জানিয়েছি, তিস্তার যে চুক্তিটি তৈরি হয়ে আছে, সেটির বাস্তবায়ন হবে।’
তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে বিপুল পরিমাণ পণ্য ওঠানামার সুযোগ তৈরি হবে। সেটার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সেখানে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে নেপাল ও ভুটানকে সংযুক্ত করা যায়। যেহেতু প্রকল্পটি জাপানের বিগ বির অংশ, ভবিষ্যতে জাপানকে কীভাবে সম্পৃক্ত করতে পারি, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি ত্রিপক্ষীয় কাঠামোর বিষয় চিন্তা করতে পারি।’
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ নিঃশর্ত মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং মহানগর নেতা নবীউল্লাহ নবীসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে সমাবেশের মৌখিক অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। তবে এই সমাবেশ করতে দলটিকে মানতে হবে কিছু শর্ত। শুক্রবার বেলা ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।
বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি মানবজমিনকে বলেন, সমাবেশের জন্য আমরা মৌখিক অনুমতি পেয়েছি। এদিকে সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপ্স) ড. খ. মহিদ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেই না। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচি করবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা কিছু শর্ত আরোপ করি। তিনি বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যাপারে বিএনপিকে বলা হয়েছে। শর্ত মানলে তাদের নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হতে পারে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।
পরে আবদুস সালাম বলেন, নয়াপল্টনের সমাবেশ নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশের মনোভাব পজিটিভ। যেহেতু শুক্রবার ট্রাফিক সংক্রান্ত কোনো ইস্যু নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করছি, তাদের সহযোগিতা পাবো। তিনি বলেন, সমাবেশ ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাবেশ ও মিছিল করবো। মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা নির্ধারিত সময়ে সমাবেশে অংশ নেবেন।
এর আগে গত ২৬শে এপ্রিল নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চেয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। তীব্র দাবদাহের কারণে ওই সময় সমাবেশ স্থগিত করা হয়।
Leave a Reply