শ্রী নিখিলনাথ রায়
দর্পনারায়ণ ডাহাপাড়ায় বাসবাটী নির্মাণ করেন। যদিও এক্ষণে বঙ্গাধিকারিগণের পুনর্ব্বার নূতন বাটা নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, তথাপি সেই পুরাতন বাটীর চিহ্ন এখনও স্থানে স্থানে বর্তমান আছে। দর্পনারায়ণ ডাহাপাড়ায় আসিয়া কিরীটেশ্বরীর সেবার যথেষ্ট বন্দোবস্ত করেন। কিরীটেশ্বরী অনেক দিন হইতে তাঁহাদের হস্তে ছিলেন। দর্পনারায়ণ মন্দিরাদির নির্মাণ ও কালীসাগর নামে পুষ্করিণী খনন করাইয়া দেন। তিনি নিজ নামে একখানি গ্রাম প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলন।
পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে যে, দর্পনারায়ণের মৃত্যুর পর শিবনারা- স্বণকে তাঁহার স্থলে কাননগোপদে নিযুক্ত করা হয়। হিজরী ১১৩৭ অব্দে, সম্রাট্ মহম্মদ শাহ তাঁহার রাজত্বের অষ্টম বৎসরে শিবনারায়ণকে কাননগো-পদের ফাৰ্ম্মান প্রদান করেন। তাহাতে এইরূপ লিখিত আছে যে, দর্পনারায়ণের মৃত্যুর পর তাঁহার পুত্র শিবনারায়ণের নিকট হইতে দর্পনারায়ণের দেয় অর্থ ও ২ লক্ষ টাকা নজর লইয়া তাঁহাকে তাঁহার পিতার স্বলে অর্থ সুবার কাননগোপদে নিযুক্ত করা গেল।
মুসলমান ঐতিহাসিকগণ বলিয়া থাকেন যে, মুর্শিদকুলী খাঁ শিব- নারায়ণকে দশ আনা ও জয়নারায়ণকে ছয় আনার কাননগোপদ প্রদান করেন,। কিন্তু তাহা প্রকৃত নহে। গ্রান্ট সাহেব বলেন যে, শিবনারায়ণের রসুমের লাঘব হওয়ায়, তাঁহাকে রুকুনপুর জমীদারী প্রদান করা হয়। কিন্তু শিবনারায়ণের রসুমের লাঘব হওয়ার কোনই কারণ দেখা যায় না।
মুর্শিদকুলী খাঁর মৃত্যুর পর সুজা উদ্দীন বাঙ্গলার সিংহাসনে অধি- রূঢ় হন। এই সময়ে শিবনারায়ণ কাননগোর কার্য্য করিতেছিলেন। সুজা উদ্দীন তাঁহার কাননগোকার্য্যে কোনরূপ হস্তক্ষেপ না করিয়া, আলমচাঁদ নামে জনৈক বিশ্বাসী কৰ্ম্মচারীকে খালসার দেওয়ানী পদে নিযুক্ত করিয়া সম্রাট্ দরবার হইতে রায়রায়ান উপাধি আনাইয়া তাঁহাকে ভূষিত করেন। রায়রায়ান উপাধি বাঙ্গলায় এই প্রথম।
Leave a Reply