শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন

বিসিএসের অপেক্ষায় নষ্ট জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়

  • Update Time : রবিবার, ১২ মে, ২০২৪, ৯.৪১ এএম

মানবজমিন এর একটি শিরোনাম “লোকসভায় কংগ্রেস বিরোধী দলও হতে পারবে না, পারমাণবিক অস্ত্র বিক্রি করে দিতে চাইছে পাকিস্তান: মোদি”

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি বলেছেন, এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস বিরোধী দলও হতে পারবে না। কারণ, আগামী ৪ঠা জুনে তাদের আসন সংখ্যা কমে ৫০-এর নিচে নেমে আসবে। এছাড়া তিনি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়েও কথা বলেন। মোদি বলেন- বর্তমানে পাকিস্তানের এমন অবস্থা হয়েছে যে, তারা (পারমাণবিক) বোমা হ্যাণ্ডেল পর্যন্ত করতে পারে না। তারা এখন তা বিক্রি করে দিতে চায়। ফলে তারা এমন কাউকে খুঁজছে, যারা তা কিনতে পারে। কিন্তু মানুষ জানে, এসব (বোমা) ভাল মানসম্পন্ন নয়। তাই তা আর বিক্রি হচ্ছে না। নরেন্দ্র মোদি লোকসভা নির্বাচনে ওড়িশার ফুলবানি আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় শনিবার এ কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ৪০০ আসন ছাড়িয়ে যাবে। এর মধ্যে বিজেপিই তার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পাবে। আগামী ২০শে মে ওই আসনে লোকসভা নির্বাচন। কান্দামাল, বড়গড়, সুন্দরগড়, বোলাঙ্গির এবং আকসা নিয়ে এই নির্বাচনী আসন। ওড়িশার অন্য আসনগুলোতে নির্বাচন হবে ১৩ই মে, ২৫শে মে এবং ১লা জুন।

নরেন্দ্র মোদি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, গত ১০ বছর ধরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একই কথা বলে আসছেন। এ সময় তিনি রাহুল গান্ধীকে ‘শেহজাদা অব কংগ্রেস’ বলে অভিহিত করেন। বলেন, প্রতিদিনই তিনি এক কথা বলছেন। মোদি বলেন, আপনারা তার ২০১৪, ২০১৯ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনী বক্তব্য দেখুন। তিনি একই কথা বলেন। পার্লামেন্টে বিরোধী দলে বসতে হলে কংগ্রেসের প্রয়োজন লোকসভার মোট আসনের এক-দশমাংশ। কিন্তু দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কংগ্রেস এমনকি বিরোধী দলও হতে পারবে না। কারণ, ৪ঠা জুন তাদের আসন ৫০ এর নিচে নেমে আসবে। উল্লেখ্য, এর একদিন আগে কানপুরে বক্তব্য রাখেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি বলেন, আগামী ৪ঠা জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না নরেন্দ্র মোদি। তার এ কথার জবাব দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি ওই মন্তব্য করেন।

পোখরান টেস্টের বার্ষিকী উপলক্ষেও মোদি বক্তব্য দেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর প্রশংসা করেন। তিনি ২৬ বছর আগে ১১ই মে পোখরানে পারমাণবিক পরীক্ষা করেছিলেন। মোদি বলেন, এর মধ্য দিয়ে পিুরো বিশ্বের কাছে ভারত গর্বিত হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তি নিয়ে কংগ্রেস ভীতি সৃষ্টি করে। এ সময় তিনি পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তি নিয়ে সমালোচনায় ওই মন্তব্য করেন।

 

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “ঢাকাসহ ৪ বিভাগের অনেক জায়গায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাস”

আজ ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এছাড়া রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টির আভাস রয়েছে। সেই সঙ্গে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও হতে পারে। রয়েছে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে আসতে পারে। তবে অনেকটা অপরিবর্তিত থাকতে পারে রাতের তাপমাত্রা।

এদিকে, একই বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস বলছে, ওইদিন রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।

 

The Daily Star বাংলার একটি শিরোনাম “বিসিএসের অপেক্ষায় নষ্ট জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করার কয়েক মাস পর ২০১৯ সালের নভেম্বরে ৪১তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলেন ইমাম হোসেন।

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি ছিল তার। ২০২১ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত এমসিকিউভিত্তিক প্রাথমিক পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হন। ওই বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হন তিনি। শুরু হয় ভাইভার জন্য অপেক্ষা।

সেই ভাইভা পরীক্ষা হয় দুই বছর পর, ২০২৩ সালে। চূড়ান্ত এই পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হন ইমাম হোসেন।

তবে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ইমাম ক্যাডার সার্ভিসে জায়গা করে নিতে পারেননি। তার নাম সুপারিশ করা হয় নন-ক্যাডার পদের জন্য। কিন্তু তিনি নন-ক্যাডার পদেও চাকরি পাননি। কারণ, এসব পদে নিয়োগ হয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া চাহিদা সাপেক্ষে।

নন-ক্যাডার পদের জন্য কয়েক মাস অপেক্ষা করে থাকার পর শেষ পর্যন্ত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ইমাম।

তিনি বলেন, ‘এত সময় যাওয়ার কারণে আমার অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে গেছে। আমার জীবনের চার বছরেরও বেশি সময় শেষ হয়ে গেছে অপেক্ষায় থেকে। বয়স ৩০ বছর পার হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য কোনো সরকারি চাকরির জন্যও আর আবেদন করতে পারি না।’

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে গেজেট প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষার প্রতিটি পর্যায়ে এত বেশি সময় লাগা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

৪১তম বিসিএস পরীক্ষা শেষ করতে চার বছর চার মাস সময় নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

করোনা মহামারির সময়ে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৪২তম বিসিএস পরীক্ষা হয়েছিল শুধুমাত্র চিকিৎসকদের জন্য। বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে গেজেট প্রকাশ—সবকিছুই শেষ হয় এক বছরের মধ্যে। এই বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে প্রায় চার হাজার চিকিৎসক নিয়োগ পান।

এরপর ৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতেই সময় লেগেছে তিন বছর এক মাস। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এখনো এই পরীক্ষার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি।

পিএসসির ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, সাংবিধানিক সংস্থাটি বিসিএস পরীক্ষার পুরো প্রক্রিয়াটি এক বছরে সম্পূর্ণ করার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছিল। সেই রোডম্যাপ কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এই পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি চাকরিপ্রার্থীরা তাদের কর্মজীবনের অন্তত চারটি বছর নষ্ট করেন।

পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন এই দেরির বিষয়ে সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আমরা এক বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি।’

রোডম্যাপ অনুযায়ী ১২ মাসের মধ্যে বিজ্ঞাপন প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ পর্যন্ত সব কাজ শেষ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

যারা শেষ পরীক্ষাতেও সফল হন, তাদেরও অপেক্ষায় থাকতে হয়—মেডিকেল পরীক্ষা এবং পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার নিরাপত্তা ছাড়পত্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং গেজেট প্রকাশ হতে প্রায় এক বছর সময় লাগে।

কেন এই দেরি

পিএসসি সদস্যরা বলছেন, তাদের জনবল সীমিত। এই কারণে প্রশ্নপত্র তৈরি ও মুদ্রণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং ভাইভাসহ বেশিরভাগ কাজের জন্য তাদেরকে অন্যদের ওপর নির্ভর করতে হয়।

পিএসসির এক সদস্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দেরি হওয়ার একটি কারণ হলো পরীক্ষকদের (বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও আমলা) উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে দেরিতে জমা দেওয়া। এ ছাড়া, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যায়। ফলে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে আরও দেরি হয়।’

পিএসসি উত্তরপত্র মূল্যায়নে ‘স্বচ্ছতা’ নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালে দ্বৈত পরীক্ষকের বিধান চালু করে। এর ফলে প্রতিটি উত্তরপত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক মূল্যায়ন করেন। ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষা থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হয়।

এর পরের বছর পিএসসি আরেকটি পদ্ধতি চালু করে, যেখানে দুই পরীক্ষকের দেওয়া নম্বরের মধ্যে ২০ শতাংশ বা তার বেশি পার্থক্য থাকলে উত্তরপত্রগুলো মূল্যায়নের জন্য তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠানো হয়।

৪৪তম বিসিএসের ক্ষেত্রে প্রথম দুই পরীক্ষকের দেওয়া নম্বরের পার্থক্যের কারণে ১৫ হাজার ৭০৮টির মধ্যে ৯ হাজারের বেশি উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে জানান পিএসসি সদস্যরা।

তিনি বলেন, ‘সময়মতো উত্তরপত্র জমা দেওয়ার জন্য আমরা বারবার অনুরোধ করলেও অনেক পরীক্ষক বিভিন্ন অজুহাতে দেরি করে দেন। তারা সম্মানিত মানুষ হওয়ায় আমরা কোনো কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারি না। তাদের কারণেই পিএসসি সমস্যায় পড়েছে।’

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়াও কিছু আমলা উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন। তারা শুধুমাত্র কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স মূল্যায়ন করেন।

বিসিএসের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা দুই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক জানান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের নিয়মিত লেকচার, পরীক্ষা ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মূল্যায়ন নিয়েই প্রচুর ব্যস্ত থাকেন। তাদের অনেককে আবার প্রশাসনিক কাজও করতে হয়। ফলে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মূল্যায়নের সময় বা আগ্রহ তাদের নেই।

এ ছাড়া, এই কাজের জন্য পিএসসি যে পারিশ্রমিক দেয় তা খুবই সামান্য। ফলে, শিক্ষকরা এসব উত্তরপত্র মূল্যায়নে খুব কমই আগ্রহ দেখান।

গড়ে প্রত্যেক শিক্ষককে ১০০ থেকে ১২০টি উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে হয়।

গোলকধাঁধা

৪৩তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশকৃত ১৫ প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে দ্য ডেইলি স্টার। তাদের প্রত্যেকেই বলেছে যে পরীক্ষার জন্য কোচিং, থাকা-খাওয়া এবং যাতায়াতের জন্য অনেক টাকা খরচ হয়।

দীর্ঘ সময় লেগে গেলে আর্থিক চাপ বেড়ে যায় এবং তারা এক ধরনের গোলকধাঁধায় থাকেন। কারণ, বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত তারা তাদের কর্মজীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

৪৩তম বিসিএসে চাকরিপ্রার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘পিএসসি এত সময় নিলেও আমি হঠাৎ করেই কোর্স পরিবর্তন করে অন্য চাকরি খুঁজতে পারি না। ফলাফল যদি তাড়াতাড়ি দিয়ে দিতো তাহলে আমি অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে পারতাম।’

এই অপেক্ষায় থাকতে থাকতে তার বাসা ভাড়া এবং খাবার খরচ দুটোই বেড়ে গেছে।

মাহমুদুল বলেন, ‘আমিও মেস ছেড়ে চলে যাই তাহলে পড়াশুনা ব্যাহত হবে। প্রাইভেট টিউশন করিয়েও সব খরচ মেটানো কঠিন।’

করণীয় কী

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, দ্বৈত পরীক্ষকের বিধান চালু করা দেরি হওয়ার একটি বড় কারণ, বিশেষ করে যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সময় দেওয়ার মতো পরীক্ষকের অভাব থাকে।

তার মতে, এই নিয়ম ‘আপাতদৃষ্টিতে ন্যায়সঙ্গত’, কিন্তু মাত্র কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য যথেষ্ট যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন।

তিনি জানান, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মেডিকেল পরীক্ষার জন্য যে সময় লাগে সেটাও বেশ দীর্ঘ।

বর্তমানে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করতে প্রায় এক বছর সময় লাগে।

সাবেক এই সচিব বলেন, ‘এটা দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে করা যেতে পারে। আগে এমনই ছিল। সেই পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া উচিত। যেটা দরকার সেটা হলো চাকরিপ্রার্থীরা ফৌজদারি মামলার আসামি কি না, সেটা যাচাই করা।’

তার মতে, বর্তমানে এই যাচাই প্রক্রিয়ায় চাকরিপ্রার্থীদের আত্মীয়দের ব্যাকগ্রাউন্ড ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখা হয়, যা অপ্রয়োজনীয়।

এ ছাড়া, অনেক সুপারিশকৃত প্রার্থীও তাদের আত্মীয়স্বজন বা পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে বাদ পড়ে যান।

তিনি বলেন, ‘ভারতে যাচাই চলাকালীন সময়েও চাকরিপ্রার্থীদের সুপারিশের ভিত্তিতে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাছাড়া, ওখানে অন্যান্য বিষয়ে (আত্মীয়-স্বজনের রাজনৈতিক সম্পর্ক) ফোকাস করে না।’

 

 

প্রথমআলোর একটি শিরোনাম “রুট কমলেও হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জলযান কিনছে বিআইডব্লিউটিসি”

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কার্যক্রম দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। আগের তুলনায় জলযান চলাচলের রুট কমে গেছে। ফলে করপোরেশনের অনেক সচল জলযান পড়ে আছে। কাজ না থাকায় জনবলের বড় একটি অংশ অলস বসে আছে। এতে দীর্ঘদিন লাভে থাকা প্রতিষ্ঠানটি লোকসানে পড়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে তারা হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন জলযান কিনছে। নিয়োগ দিচ্ছে জনবল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিআইডব্লিউটিসি বিদ্যমান সম্পদেরই যথার্থ ব্যবহার করতে পারছে না। পদ্মা ও যমুনার মতো বড় বড় নদীতে সেতু হয়ে গেছে। এই বাস্তবতা মেনে গবেষণার আলোকে নতুন বিনিয়োগ করতে হবে।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বলছেন, বিআইডব্লিউটিসির অনেক জলযান বসে আছে। জলযানের কর্মীরা বসে আছেন। সেগুলোর সঠিক ব্যবহার না করে নতুন জলযান ও জনবল নিয়োগ দেওয়ার যুক্তি নেই।

তবে নতুন বিনিয়োগ ও জনবল নিয়োগের মধ্য দিয়ে বিআইডব্লিউটিসি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এ কে এম মতিউর রহমান। তিনি আরও বলেন, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নতুন নৌরুট চালুসহ করপোরেশনকে লাভজনক করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সংকুচিত হচ্ছে করপোরেশন

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার সময় বিআইডব্লিউটিসির বহরে ৬০৮টি জলযান ছিল। লাভে থাকা প্রতিষ্ঠানটি প্রথম ধাক্কা খায় ১৯৯৮ সালে। ওই বছরের জুনে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হলে আরিচা–নগরবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বিআইডব্লিউটিসির আয়ের বড় অংশই আসত এই ফেরিপথ থেকে।

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ফেরিঘাটকেন্দ্রিক রুটটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পদ্মা সেতু ঘিরে প্রথমে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও পরে শিমুলিয়া ঘাট বন্ধ হয়ে যায়। পদ্মা সেতুর প্রভাব পড়ে পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া ফেরি রুটেও। এই পথেও আয় এখন অনেক কম।

বিআইডব্লিউটিসির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালের পরও প্রতিষ্ঠানটির অন্তত ২৪টি ফেরিপথ ছিল। এর মধ্যে মাওয়া-কাঁঠালবাড়ি, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, মুন্সিগঞ্জ-গজারিয়াসহ অন্তত ১৬টি ফেরিপথ বন্ধ হয়ে গেছে।

পদ্মা সেতু চালুর আগে ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি পথে বিআইডব্লিউটিসির সাতটি যাত্রীবাহী প্যাডেল স্টিমার ও মোটর ভ্যাসেল চলত। পদ্মা সেতু চালুর পর এসব সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এসব জাহাজের কিছু ঘাটে পড়ে আছে, কিছু মেরামত হচ্ছে, কিছু ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া যানজট নিরসনে ঢাকার চারপাশে ২০০৪ সালে ওয়াটার ট্যাক্সি ও ওয়াটার বাসসেবা চালু করেছিল বিআইডব্লিউটিসি। প্রায় দুই বছর ধরে এই সেবা পুরোপুরি বন্ধ।

বিআইডব্লিউটিসির এখন কিছু উপকূলীয় যাত্রীসেবা, কার্গো ও কনটেইনার সেবা চালু আছে। এসব জলযানেরও একটা অংশ ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

তবু নতুন জলযান কেনা হচ্ছে

বিআইডব্লিউটিসির বহরে এখন ১১১টি ফেরি, যাত্রীবাহী জাহাজ, কার্গো ও কনটেইনার জলযান আছে। এর মধ্যে চলাচল করছে মাত্র ৫২টি। সচল থাকলেও পড়ে আছে অন্তত ছয়টি জলযান। এ ছাড়া ২৪টি বিক্রির চেষ্টা চলছে, ৯টি মেরামতে আছে। ২০টি জলযান ভাড়া দেওয়া হয়েছে বা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

দেখা যাচ্ছে, বিআইডব্লিউটিসির বেশির ভাগ জলযান যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের বাইরে রয়েছে। তবু বিআইডব্লিউটিসি নতুন জলযান কিনছে। ইতিমধ্যে কেনা ছয়টি নতুন ফেরি ও দুটি তেলবাহী জাহাজ চলতি বছর করপোরেশনের বহরে যুক্ত হয়েছে।

জানা গেছে, ‘বিআইডব্লিউটিসির জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক ও আটটি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং দুটি নতুন স্লিপওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় নতুন ছয়টি ফেরি কেনা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় আরও ছয়টি ইউটিলিটি ফেরি, তিনটি প্যাসেঞ্জার ক্রুজার, তিনটি আধুনিক অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী জাহাজ, তিনটি আধুনিক উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজসহ মোট ২৯ জলযান কেনা হচ্ছে।

এ প্রকল্পে মোট খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার ১ হাজার ২৫২ কোটি ও বিআইডব্লিউটিসি ৬৬ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে।

জনবল বসে আছে, তবু নিয়োগ

পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে রাজধানীর পুরান ঢাকার বাবুবাজার সেতুসংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীর বাদামতলী ঘাটে পিএস লেপচা, পিএস মাহসুদ ও এমভি মধুমতি নামে তিনটি যাত্রীবাহী জাহাজ অলস বসে আছে।

৫ মে বাদামতলী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি জাহাজের কর্মীদের কেউ শুয়ে আছেন, কেউ বসে গল্প করছেন।

এসব জাহাজের কর্মীদের অলস সময় কাটলেও নতুন করে আরও ৮৫ জন গ্রিজার নিয়োগ দিচ্ছে বিআইডব্লিউটিসি। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে বর্তমানে গ্রিজার আছেন ২৫৮ জন। জাহাজের যন্ত্রচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন তাঁরা। নতুন নিয়োগের লক্ষ্যে গত শুক্রবার থেকে এই পদে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

তবে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, সরকারের যথাযথ প্রক্রিয়া মেনেই গ্রিজার নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া নতুন জলযান আসছে, সেখানে গ্রিজার লাগবে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নতুন যে জলযান কেনা ও জনবল নিয়োগ হবে—এসবের ব্যবহার হবে কোথায়? এই খরচ থেকে কি আয় উঠে আসবে? নতুন বাস্তবতা বিবেচনা করে বিনিয়োগ করতে হবে। না হলে বড় ধরনের অপচয়ের আশঙ্কা থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024