খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী
দলমুক্ত লোকাল গভর্ণমেন্ট ও সমাজকে বাঁচিয়ে রাখা লিখাটির পেছনের চিন্তা ভাল লেগেছে।
সেদিন একটি খবর চোখে পড়ল, নাটোরের হুলহুলিয়া গ্রামে ২০০ বছর ধরে সামাজিক নেতৃত্ব চলছে, নিজস্বভাবে সুন্দর একটি সমাজ ব্যবস্থা চলছে সেখানে। ২০০ বছর ধরে সেখানে কোন পুলিশ যেতে হয় নি, কোনো অন্যায়ের জন্য সরকারের আদালতে যেতে হয় নি। নিজেরাই সমাধান করে নিয়েছেন।
কিছুদিন আগে একজন বৃটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক এর TED talk এ জানলাম ১১০০০ বছর আগে মানবজাতি বসতি গড়ে তোলার পর প্রায় ৪০০০ বছর ধরে কোনো রাজা বা কেন্দ্রীয় আইন ব্যবস্থা ছিল না। মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতের হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতেও তাই ছিল। এসব জায়গায় রাজরাজড়াদের কোনো প্রাসাদ ছিল না, সব বাড়িগুলো একইরকম ছিল, তা থেকেই এ ধারণা এসেছে।
আমি মনে করি উপরের দুটি উদাহরণই সমবায় বা কো-অপারেশন ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার সফলতার কথা বলছে।
আমি মনে করি ব্যক্তি মানুষের সুস্থ ও সুন্দর দিকগুলো, অর্থাৎ সহানুভুতি, পরোপোকারের মানসিকতাকে যে সামাজিক ব্যবস্থা তুলে ধরে, সে ধরণের ব্যবস্থায় আমাদের যেতে হবে। চলমান ‘গভর্ণমেন্ট’, ‘ডেমোক্রেসি’, ‘ইকনোমিক্স’ সবই মানুষের উলটোদিক, অর্থাৎ, স্বার্থপরতা, দুর্বলকে ঠকিয়ে নিজে বড় হওয়া, এসবকেই লালন করে। এসব বিষয়ে গত কয়েক হাজার বছরের মানুষের চিন্তা ধারার ভুলগুলো সম্মিলিত হয়ে এখন পুরো পৃথিবীকেই গ্রাস করে ফেলছে, সামনে আলো দেখতে পারছিনা যেন।
আমার মনে হয়, চলমান তিনটি বিষয় নিয়েই আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। গা ঝাড়া দিয়ে আমাদের গতানুগতিক চিন্তাভাবনার যে বৃত্ত আমরা তৈরি করেছি তার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে দশ বছর আগে আমার কিছু চিন্তাভাবনা তুলে ধরেছিলাম ‘বৃত্তেরবাইরে’ নামে আমার একটি ব্লগে। কিছু কিছু পরিমার্জন সহ এ চিন্তাগুলো নিয়ে এখনও ভাবা দরকার বলে আমি মনে করি।
খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী
বিজ্ঞানী এবং উদ্ভাবক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা।
Leave a Reply