শ্রী নিখিলনাথ রায়
লক্ষ্মীনারায়ণ মৃত্যুসময়ে গঙ্গাগোবিন্দ সিংহকে স্বীয় নাবালক পুত্র সূর্য্যনারায়ণের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত করিয়া যান। বঙ্গাধিকারিগণ বলিয়া থাকেন যে, গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের তত্ত্বাবধানে তাঁহারই স্বার্থ- সিদ্ধির জন্য তাঁহাদিগের অনেক জমীদারী হস্তান্তরিত হয়। সূর্য্য- নারায়ণের সময় হইতেই বঙ্গাধিকারিগণের দুর্দশার আরম্ভ।
এই সময়ে তাঁহাদের কোন কাৰ্য্য না থাকায় আয়ের লাঘব হয় এবং চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময়ও তাঁহাদের অনেক জমীদারী হস্তান্তরিত হইয়া যায়। সূর্য্যনারায়ণের পর চন্দ্রনারায়ণ, তৎপরে ব্রজেন্দ্রনারায়ণ বঙ্গাধিকারিবংশে জন্মগ্রহণ করেন। এক্ষণে ব্রজেন্দ্রনারায়ণের পুত্র কুমার প্রতাপনারায়ণ বঙ্গাধিকারিগণের একমাত্র বংশধর। বঙ্গাধি- কারিগণের অবস্থা এক্ষণে অত্যন্ত শোচনীয়। তাঁহাদের সে বিস্তৃত জমীদারী নাই। জীবিকানির্ব্বাহ এক প্রকার কঠিন হইয়া উঠিয়াছে।
সেই জন্য কুমার প্রতাপনারায়ণকে রুরাল সব রেজিষ্ট্রারীপদ গ্রহণ করিতে হইয়াছিল। যাঁহারা এককালে সমগ্র বাঙ্গলা, বিহার, উড়ি- ব্যার রেজিষ্ট্রারীপদে নিযুক্ত থাকিয়া দেশের যাবতীয় রাজা-মহারাজগণ কর্তৃক সম্মানসহকারে পূজিত হইয়া আসিয়াছিলেন, এক্ষণে তাঁহাদের বংশধর কতিপয় সামান্ত, পল্লীর রেজিস্ট্রারী কার্য্য করিয়া অতীব কণ্ঠ সহকারে জীবনাতিপাত করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন।
প্রতাপনারায়ণ গবর্ণমেন্টের নিকট বৃত্তির জন্য আবেদন করিয়াছিলেন; কিন্তু তাঁহার সে আবেদন গ্রাহ্য হয় নাই। ভট্টবাটীবংশীয়েরা উত্তররাঢ়ীয় সিংহবংশীয়, তাঁহাদেরও ক্ষমতা বড় কম ছিল না। উক্তবংশীয় মহেন্দ্রনারায়ণের পর কালীনারায়ণ ও তৎপরে সূর্য্যনারায়ণের নাম শুনা যায়। এক্ষণে তাঁহাদের দৌহিত্রবংশ বিঘ্নমান। অনেকে ডাহাপাড়া ও ভট্টবাটীবংশীয়- দিগকে এক বংশ বলিয়া মনে করিয়া থাকেন, ইহা তাঁহাদের সম্পূর্ণ ভ্রম।
Leave a Reply