শ্রী নিখিলনাথ রায়
দুই বংশ উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ বলিয়া এইরূপ ভ্রম হওয়ার সম্ভাবনা; কিন্তু ডাহাপাড়াবংশীয়েরা মিত্র ও ভট্টবাটীবংশীয়েরা সিংহ। মুর্শিদাবাদের মধ্যে সম্মানে ক্রমান্বয়ে নবাব, জগৎশেঠ ও বঙ্গাধি- কারিবংশীয়েরা শ্রেষ্ঠ ছিলেন। অনেক রাজা-মহারাজ বঙ্গাধি- কারিগণকে যথোচিত সমাদর প্রদর্শন করিতেন। বঙ্গাধিকারিগণ। বাদশাহ দরবার হইতে নিযুক্ত হওয়ায়, তাঁহাদের সম্মানের বৃদ্ধি হয়।
তদ্ভিন্ন তাঁহাদের রাশি রাশি সংকীর্তি সমগ্র বঙ্গরাজ্যে তাঁহাদের গৌরব ঘোষণা করিয়াছিল। সেই সমস্ত সংকীর্তির এক্ষণে অনেক লোপ হইয়া গিয়াছে। বঙ্গাধিকারিগণের প্রধান সংকীর্তির আদর্শগুল কিরীটেশ্বরীও এক্ষণে তাঁহাদের হস্তচ্যুতা। তাঁহাদের অবস্থা পরি- বর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁহারও অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়াছে। বঙ্গাধিকারি- গণের প্রাচীন ভবন এক্ষণে ভগ্নাবস্থায় পতিত।
দর্পনারায়ণের নির্মিত বাটীর স্থানে স্থানে সামান্য চিহ্নমাত্র আছে। যে বারদুয়ারীভবনে বঙ্গের রাজা-মহারাজগণ বঙ্গাধিকারিগণকে সম্মান প্রদর্শন করিতে আসিতেন, তাহারই ভিত্তির কিয়দংশ এক্ষণে বর্তমান রহিয়াছে। প্রাচীন পূজার বাটীর ভগ্নাবশেষ ও স্থানে স্থানে দুই একটি ভগ্ন ফোয়ারা ও ইন্দারা দেখা যায়।
অন্তঃপুর-চত্বরের মধ্যে শিবনারায়ণী পুষ্করিণী ও ভুবনেশ্বরী দেবীর গৃহ অসংস্কৃত অবস্থায় নয়নপথে পতিত হয়। বাটীর চতুদ্দিক জঙ্গলে পরিপূর্ণ ও বন্যজন্তুগণের আবাসস্থল হইয়া উঠিয়াছে। অপেক্ষাকৃত অল্পদিনের নির্মিত একটি বিশাল তোরণদ্বার সেই জঙ্গলরাশির মধ্য হইতে মস্তক উত্তোলন করিয়া বঙ্গাধিকারিগণের পূর্ব্বগৌরবের কথঞ্চিৎ – আভাস প্রদান করিতেছে।
Leave a Reply