নিজস্ব প্রতিবেদক
আসিফ আহমেদ (৬৫) শান্তিনগর কাঁচা বাজারে এসেছেন। তার পরিবারের কেউ ব্রয়লার মুরগি পছন্দ করেন না। দেশী মুরগীর দাম দেখে কপালটা একটু কুচকে যায়। শেষ অবধি ৬ হাজার ৩’শ টাকায় ৮টি মুরগি কেনেন সারা সপ্তাহের জন্যে। ইচ্ছে ছিলো বারোটা মুরগি কেনা।
ঠিক তেমনি বাগদা বা হরিনা চিংড়ি কিনছেন এক ভদ্র মহিলা, নাম জিজ্ঞসে করা সম্ভব হয়নি। মাছ ওয়ালা তাকে বার বার বলছেন, দু কেজি নেন। তিনি এক কেজি দেয়ার জন্যে চাপ দিচ্ছেন মাছ ওয়ালাকে।
ফরহাদ মাহমুদ, কাঁচা কলা কিনলেন, এক ডজন ১৫০ টাকা দিয়ে। অনেক দরাদরি করতে হলো তাকে। তার পাশের সবজি দোকানি বিক্রি করছেন, কাঁচা কাঁঠাল। এঁচোড় বা ইঁচোড় নামে পরিচিত। তরকারি হিসেবে খেয়ে থাকেন অনেকে। একজন বয়স্ক ভদ্র মহিলা, তিনি পল্টন এলাকার পরিচিত। দুটো বাসার ভাড়া পান এখনো। তারপরেও যখন শুনলেন, এঁচোড়টির দাম তিনশ টাকা, একটু কপাল কুচকে পিছিয়ে গেলেন।
এই চিত্র শুক্রবারের। সাধারণত আগে এ সময়ে শান্তিনগর বাজার ক্রেতায় ঠাসা থাকতো। এখন অবশ্য পরিস্থিতি বদলে গেছে।
সকালেই শান্তিনগর রাস্তার মোড় থেকে শান্তিনগর পোস্ট অফিস অবধি একটা বড় কাঁচা বাজার বসে বেলা ৮ টা অবধি ফুটপাতে। জিনিসের মান্ শান্তিনগর বাজার থেকে কোন কোনটা একটু খারাপ। কিন্তু ভীড় সেখানেই বেশি। তারপরেও সেখানে গিয়ে দেখা গেলো একটা লাউয়ের দাম শুনে একজন স্কুল শিক্ষিকা লাউয়ের শরীরে বেশ কয়েকবার হাত বুলিয়ে রেখে দিলেন।
আবার তারপরেও যে সবাই রেখে দিচ্ছেন তা নয়। বেলা আটটা বাজার আগে আগেই ওই বাজারের বেশিভাগ মালামাল শেষ হয়ে যাচ্ছে। কাঁচামালের পরিমান যে তারা খুব কম আনে তাও নয়।
অন্যদিকে শান্তিনগর, মালিবাগ বাজারে গরুর মাংসের দোকানের সামনের ভীড় এখন আর শুক্রবারেও আগের মতো নেই। ঠিক তেমনি ভীড় কম ডিমের দোকানের সামনে।
আছিরউদ্দিনের দোকান বলে পরিচিত ছিলো। এখন তার ছেলে চালায়। তেমনি কাউয়ুমের ষ্টেশনারী কাম গ্রোসারি- দুজনই বললেন, গত কয়েক মাসে মানুষ পেয়াজ, রসুন ডাল কিনছে ঠিকই, কিন্তু সকলেই পরিমানে কমিয়ে দিয়েছে।
আর বাজারের ভীড় কমেছে শুধু যে ফুটপাতের বাজারের কারণে তা নয়, কোভিডে অনেক মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গেছে অনলা্ইনে বাজার করতে। ছোট বড় নানান ধরনের অনলাইন ডেলিভারি শপ দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
তাদের মতে সেখানে দাম একটু বেশি। ভালোটা যাচাইয়ের সুযোগ নেই। তবে মানুষ দেখছে তাদের সময় বেচে যাচ্ছে।
মানুষ যে বাজারে কম যাচ্ছে তা আরো বোঝা যাচ্ছে আগে এসব বাজারে মিনতি অর্থাত্ যারা বোঝা টানে তাদের সংখ্যা ছিলো অনেক বেশি।
এখন শান্তিনগরের মিনতি আকবর বলে শুক্রবারেও পাঁচশ টাকা আয় হয়না। মালিবাগের নটু বললো তার বাড়ি বরিশাল। আগে ভালো আয় হতো। এ শুক্রবারে বেলা সাড়ে এগারটা অবধি আয় হয়েছে মাত্র দুইশ টাকা।
নটুর মতে মানুষ এখন জিনিসপত্র কম কিনছে
Leave a Reply