শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন

দেশের রিজার্ভ কমে ১৮ বিলিয়ন ডলার

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ১০.০৫ এএম

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “দেশের রিজার্ভ কমে ১৮ বিলিয়ন ডলার”

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্নে এসে দাঁড়িয়েছে। সোমবার (১৩ মে) এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবা উল হক গণমাধ্যমকে বলেন,  সোমবার (১৩ মে) বিকালে আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ বিপিএম-৬ অনুযায়ী ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ আছে গ্রস ২৩ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

অবশ্য দেশের নিট রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে। নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৮২ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। আকুর ১৬৩ কোটি ডলার দায় পরিশোধের পর রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮১৯ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম-৬) বা ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার।

সোমবার এই রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ানোর পর আর কখনও নিচে নামেনি।

মূলত, আকু একটি আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দুই মাস অন্তর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। একসঙ্গে দায় পরিশোধ এটিই বড়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশকে এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ের জন্য আকু বিল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। সে সময় এ দায় পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছিল ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ৪৪ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের এলসি নিষ্পত্তি করেছে, যা এক বছর আগের একই সময়ের ৫১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ১৩ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার কম।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসের শেষদিকে বা আগামী মাসের শুরুতে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেলে রিজার্ভ ফের বাড়বে।

 

The Daily Star বাংলার একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ কেন ৬৯ হাজার রোহিঙ্গার পাসপোর্ট নবায়ন করবে?”

সৌদি আরবে অবস্থানরত ৬৯ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট দিতে যাচ্ছে। খুবই প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন, বাংলাদেশ কেন রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেবে? পাসপোর্ট দেওয়া মানে তো নাগরিকত্ব দেওয়া। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। বাংলাদেশকে কেন তাদের পাসপোর্ট দিতে হবে?

বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে যেসব রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গেছে, তাদের পাসপোর্ট নবায়ন করতে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে। গতকাল ঢাকায় সৌদি আরবের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বিন আবদুল আজিজ আল দাউদের সঙ্গে আলোচনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ কথা বলেছেন।

উল্লেখ করা হয়েছে, এই ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা ৭০-এর দশকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে গেছেন। সেই পাসপোর্টগুলো এখন নবায়ন করা হবে।

বোঝা যায়, বাংলাদেশের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে সৌদি আরবের একটা বড় চাপ আছে। এই চাপ সৌদি আরব ২০১০ সাল থেকে দিয়ে আসছে।

২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে,সেই সময়ও সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল দাউদ বাংলাদেশে এসেছিলেন ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে। তখন আলোচনায় বলেছিল, সৌদি আরবে ৩ লাখ রোহিঙ্গা আছে।

এই ৩ লাখ রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে চাপ দেয় সৌদি আরব। যদিও বাংলাদেশ বা সৌদি আরব কেউই স্বীকার করেনি যে চাপ দেওয়া হয়েছে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশের বহু শ্রমিক কর্মরত আছেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এই সংখ্যা প্রায় ২৮ লাখ। কিন্তু বাস্তবে তা ৪০ লাখের বেশি বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে এই ৩ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকেই দেশটিতে গিয়েছেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এটা নিশ্চিত যে তারা বাংলাদেশি পরিচয় ধারণ করে আছেন এবং তাদের অনেকের কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট আছে। তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সৌদি আরব সরকার তাদেরকে বৈধতা দিতে পাসপোর্ট নবায়ন করে দিতে বলেছে বাংলাদেশকে।

প্রশ্ন হচ্ছে, সৌদি আরব বাংলাদেশকে কেন বলবে রোহিঙ্গাদেরকে পাসপোর্ট নবায়ন করে দিতে? কারণ হচ্ছে, মিয়ানমার তাড়িয়ে দেওয়ার পর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বৈধ করার জন্য সৌদি আরবের একটি বৈধ কাগজ দরকার। এই পাসপোর্টের ভিত্তিতে সৌদি আরব তাদের ভিসা দেবে, কাজের অনুমতি দেবে। কিন্তু তাদের নাগরিকত্ব দেবে না বা স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেবে না।

এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ৩ লাখের থেকে ৬৯ হাজারের প্রসঙ্গ আসল কেন? এরাই শুধু বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিল?

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তা নবায়ন করে দেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষ্কার করে বলেননি যে, কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে গেছে। গত ১৫-২০ বছরে কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব ও অন্যান্য দেশে গেছে, সেই সংখ্যা অজানা। কারও কাছে এর প্রকৃত তথ্য নেই। আমাদের দুর্নীতিতে জর্জরিত ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গারা জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট করে বাংলাদেশি হয়ে গেছে। টেকনাফ, কক্সবাজারের ভোটের হিসাব বিবেচনায় তাদের বাংলাদেশি বানানো হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা যে ৬৯ হাজার নয়, ৩ লাখও নয়, তারচেয়ে অনেক বেশি, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

কূটনৈতিক সূত্রসহ বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে নির্যাতনের মুখে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছাড়তে বাধ্য হয়। তখন ওআইসির মধ্যস্থতায়  পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে সৌদি আরব স্বেচ্ছায় আশ্রয় দেয়। সৌদি আরবের অনুরোধে দুই লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি এবং দুই লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে পাকিস্তানের পাসপোর্ট দেওয়া হয়। পাকিস্তান পাসপোর্ট দিলেও তাদের মিয়ানমারের নাগরিক বলে উল্লেখ করে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে দেওয়া পাসপোর্টে তাদের নাগরিকত্ব সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। ফলে তাদেরকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। (ডয়চে ভেলে, ১৪ নভেম্বর ২০২২)

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এই পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পার্থক্য ছিল। সেখানে ছিল বাংলাদেশের অদূরদর্শিতার স্বাক্ষর। পাকিস্তান রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিলেও নাগরিকত্ব দেয়নি। সেখানে লিখে দিয়েছিল যে এই ব্যক্তি মিয়ানমারের নাগরিক। কিন্তু, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যে পাসপোর্ট দিয়েছিল সেখানে নাগরিকত্ব নিয়ে আলাদা কিছু লেখেনি। যার ফলে তারা বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এবং বাংলাদেশি নাগরিকের মর্যাদা পেয়েছে।

ফলে পাসপোর্ট নবায়ন করতে হবে এমন রোহিঙ্গার সংখ্যা যে ৬৯ হাজার নয়, সেটা পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে। ৬৯ হাজারের পরে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে চাপ অব্যাহত থাকতে পারে।

এই দায় শুধু বর্তমান সরকারের ওপর চাপানোর সুযোগ নেই। সেই সময়ের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে এই ভুলের রেশ বাংলাদেশকে কতদিন টানতে হবে, যা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ রয়েছে।

এখন আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, এই রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিলে তাদেরকে থাকার অনুমতি দেবে সৌদি আরব, ফেরত পাঠাবে না। কিন্তু, সাধারণভাবে এ কথা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। সৌদি আরব বিদেশি কাউকেই স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেয় না। দেশটি নির্দিষ্ট সময়ের ভিসা দেয়, যা যেকোনো সময় বাতিল হতে পারে, পুনর্নবায়ন না-ও করা হতে পারে। এক পর্যায়ে সৌদি আরব এই পাসপোর্টধারীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে, যেহেতু তারা ‘পাসপোর্ট সূত্রে’ বাংলাদেশের নাগরিক। ফলে পাসপোর্ট নবায়নকারী কোনো রোহিঙ্গাকে সৌদি আরব কখনও বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না, সৌদি আরব কি এমন অঙ্গীকার করবে? বাংলাদেশ কি সৌদি আরবের সামনে এ দাবি জেরালোভাবে তুলেছে। তুলে না থাকলে তোলা দরকার। পাসপোর্ট নবায়ন করার সময় ‘মিয়ানমারের নাগরিক’ লিখে দেওয়ার সুযোগ আছে কি না, বিবেচনা করতে হবে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে গভীর সংকটে আছে। এখন সৌদি আরবে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়েও আরেকটা সংকট যেন তৈরি না হয়। সতর্ক থাকতে হবে বাংলাদেশকে। যেহেতু বাংলাদেশের ২৮ লাখ বা তারও বেশি নাগরিক সৌদি আরবে আছেন, সেই সুযোগ নিয়ে দেশটি বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের পক্ষে সেই চাপ উপেক্ষা করা কঠিন। এখানেই দরকার কূটনৈতিক দক্ষতা। যার প্রবল ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশের।

 

প্রথমআলোর একটি শিরোনাম  “ট্রাম্পের নির্দেশেই স্টর্মিকে ঘুষ দিয়েছি: কোহেন”

সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন। সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।

জবানবন্দি দেওয়ার সময় কৌঁসুলি সুসান হফিংগারের প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, ‘আমি যা করেছি, ট্রাম্পের নির্দেশনায় এবং তাঁর লাভের জন্যই করেছি।’

কোহেনের এই বক্তব্য ঘুষের অর্থ প্রদানের নেপথ্যে যে ট্রাম্প ছিলেন, সে বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে কৌঁসুলিদের সুবিধা হবে। এমনকি ট্রাম্প যদি নিজেই ওই অর্থ না দিয়েও থাকেন।

একপর্যায়ে ফোন রেকর্ড বের করে কৌঁসুলিরা দেখান, ঘুষ দেওয়ার ওই সময় ফোনে কথা বলেছিলেন ট্রাম্প ও কোহেন। কোহেন ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর ট্রাম্পকে কল দিয়ে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় কথা বলেন। ওই দিনই স্টর্মির সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছিল।

কোহেন আরও বলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি স্টর্মির আইনজীবীর কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার হস্তান্তর করেছিলেন। স্টর্মি সমঝোতা চুক্তি এবং অতিরিক্ত নথিতে স্বাক্ষর করেছিলেন যা তাঁকে নীরব হতে বাধ্য করেছিল।

বিষয়টি ট্রাম্প জানতেন কি না— কৌঁসুলি সুসানের এমন প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, ‘তাৎক্ষণিকই’ জেনেছেন। তিনি বিষয়টি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন। তাঁকে দেওয়া কাজটি যে সম্পন্ন হয়েছে তিনি তা জানতেন।

ঘুষের অর্থ দিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে অনুমতির জন্য ট্রাম্পকে দুইবার ফোন করেছেন বলেও জানান কোহেন। পরে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের সিএফও অ্যালেন উইসেলবার্গ ওই অর্থ কোহেনকে পরিশোধ করেন। অবশ্য সেটাকে ‘আইনি ফি’ হিসেবে দেখানো হয়েছিল।

মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন আদালত। এ দিনও জবানবন্দি দেবেন কোহেন। সোমবার যখন কোহেন জবানবন্দি এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, তখন আদালত কক্ষ বসা ট্রাম্পকে চোখ বন্ধ করে সেসব শুনতে দেখা যায়।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল স্টর্মিকে। ব্যবসায়িক রেকর্ডে এ তথ্য গোপন করেছিলেন ট্রাম্প।

ব্যবসায়িক তথ্য নিয়ে জালিয়াতি করার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। মুখ বন্ধ রাখতে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার অর্থ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর এসব অভিযোগ আনা হয়।

 

মানবজমিন এর একটি শিরোনাম “তিস্তা প্রকল্পে দৃশ্যপটে ভারত, নীরব চীন”

তিস্তা বহুমুখী ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে দ্বৈরথে ভারত ও চীন। এমনটাই ধারণা দিলেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তাদের মতে, দৃশ্যপটে ভারতের উপস্থিতি আচমকা নয়। অনেকদিন ধরেই  তার আভাস পাওয়া যাচ্ছিলো। তবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার এই সফরে বিষয়টি যে আসবে তা সেগুনবাগিচার ধারণার বাইরে ছিল। কারণ ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। তাছাড়া কোয়াত্রার সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আমন্ত্রণ জানানোই ছিল মুখ্য। এখানে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদি নিয়ে আলোচনার সুযোগ কম ছিল। কর্মকর্তারা এটা নিশ্চিত করেছেন যে, পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনায় এনিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি দিল্লির বিদেশ সচিব। তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ব্যক্ত করেছেন।

তবে সেখানেও কোন ফর্মে কতোটা অর্থায়ন করবে নয়াদিল্লি, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা করেননি বিনয় মোহন কোয়াত্রা। ভারতের ওই প্রস্তাবের পর চার দিন পার হয়েছে। এর মধ্যে  সেগুনবাগিচায় অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা কূটনীতিকরা। কিন্তু এতদিন ধরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে উচ্চকণ্ঠ চীনের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে একটি কথাও বলেননি। যা রহস্যজনক ঠেকেছে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে। তবে সেগুনবাগিচা বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থানে কোনো হেরফের নেই। নয়াদিল্লি ও বেইজিং উভয়ের কাছে ঢাকার বার্তা স্পষ্ট এবং অভিন্ন। তিস্তা অববাহিকার মানুষের জীবন-জীবিকার তাগিদে মহাপরিকল্পনাটি এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ। এ নিয়ে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারত বা উন্নয়ন সহযোগী চীনের নিজস্ব ভাবনা থাকতে পারে। এক বন্ধুরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্য বন্ধুরাষ্ট্রকে সক্রিয় করার কোনো হীনচেষ্টা যে বাংলাদেশের নেই- তা উভয়ের কাছে খোলাসা করা হয়েছে। ২০১৯ সালের সমাপনীতে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার।

২০২০ সালের জুলাইতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ‘তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ বিষয়ক প্রাথমিক প্রস্তাব পাঠায় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটির ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য টোকিও’র সহায়তা নেয়ার চিন্তা করে ঢাকা। কিন্তু ততক্ষণে পর্দার আড়ালে নানা পক্ষ সক্রিয় হয়ে উঠে। থেমে যায় আলোচনা। নিজে থেকে প্রকল্পটিতে অর্থায়নের আগ্রহ দেখায় চীন। নীরবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া তথা আপত্তি আসে ভারত থেকে। ভারতীয় মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। অবস্থাদৃষ্টে ঢাকা ‘ধীরে চলো নীতি’তে প্রকল্পটি নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। বাতাসে নানা কথা ভাসতে থাকে। তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প বাংলাদেশের চেয়ে ভারত ও চীনের কাছে ভূ-রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়ায়। তিস্তা প্রকল্পে চীনের আগ্রহকে কৌশলগত অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেন দিল্লির বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে খোলামেলাই কথাবার্তা আসে ভারত থেকে। হিমালয় থেকে উৎপন্ন তিস্তা ভারতের সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদীটির পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে প্রায় ৫২ বছর ধরে অপেক্ষায় বাংলাদেশ। ২০১১ সালে একটি চুক্তির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত হয়। কিন্তু তা ঝুলে যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তিতে। চুক্তি না করেই ঢাকা সফর শেষ করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। কংগ্রেস সরকারের তরফে তখন বলা হয় দ্রুতই পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তিটি সই হবে। আড়াই বছরের মাথায় দিল্লির মসনদে পরিবর্তন আসে। ক্ষমতায় আসে বিজেপি সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারও প্রায় অভিন্ন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। বলা হয়, মোদি-হাসিনা সরকারের আমলেই চুক্তিটি হবে। কিন্তু না, দফায় দফায় প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই হয়নি আজ অবধি। এ নিয়ে চরম হতাশা থেকে ৪ বছর আগে বাংলাদেশ ‘তিস্তা নদী সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ গ্রহণ করে। যেখানে আগ বাড়িয়েই অর্থায়নে আগ্রহ দেখায় চীন।

গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে। সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনার বিষয়টি প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, তিস্তায় সরকার যে বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছে, ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। সহায়তা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটি আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। তাই আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়, এটি ভারতকে বলা হয়েছে। লেখক ও নদী গবেষক শেখ রোকন মনে করেন- চতুর্থ দফায় সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে চীন ও ভারতের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলছে তাতে তিস্তায় প্রস্তাবিত ও বহুল আলোচিত ‘মহাপরিকল্পনা’ একটি ভূমিকা রাখছে। তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বেইজিংয়ের তাড়া, দিল্লির আপত্তি এবং ঢাকার দ্বিধার বিষয়টি সবিস্তারে তুলে ধরেছেন একটি নিবন্ধে। সেখানে তিনি কিছু প্রশ্ন রাখেন। তার মতে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সর্বশেষ সফরে তিস্তা প্রকল্পে ভারতের অর্থায়নের প্রস্তাবের মধ্যদিয়ে এবং নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সামনে রেখে নদীটি নিয়ে ভারত-চীন দ্বৈরথের নতুন অধ্যায় কী শুরু হতে যাচ্ছে? ভারত এতদিন তিস্তায় পানিই দিতে চেয়েছে। এখন পানির বদলে প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চাইছে কেন? যদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন বা কার্যকর না হয়, তখন? হতে পারে, তখন ঝুলে থাকা চুক্তিটি স্বাক্ষর হবে এবং ভারত পানি দেবে। তখন দিতে পারলে, এখন দিলে অসুবিধা কী? তিনি বলেন- কথা হচ্ছে, তিস্তায় আমাদের প্রয়োজন পানি।

অভিন্ন অববাহিকার দেশ হিসেবে অভিন্ন নদীটিতে বাংলাদেশের যে অভিন্ন অধিকার রয়েছে, বিদ্যমান প্রবাহের ন্যায্য হিস্যার মধ্যদিয়ে সেটি নিশ্চিত হতে পারতো। কিন্তু প্রায় পৌনে শতাব্দী ধরে ভারতের দিক থেকে তিস্তায় পানির বদলে কেবল প্রতিশ্রুতিই গড়িয়েছে। বস্তুত, তিস্তায় সোজা পথে যখন পানি আসছিল না, তখনই বাংলাদেশ বাধ্য হয়েছিল ঘুরপথে যেতে। আরও ভেঙে বললে, ভারতের দিক থেকে ধর্তব্য ভরসা না পেয়েই চীনের সহায়তায় ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশ। এই প্রশ্ন ইতিমধ্যে কেউ কেউ তুলেছেন যে, চীনা অর্থায়নে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে ভারতীয় অর্থায়নে অসুবিধা কী? পাল্টা প্রশ্ন তোলা যায়, প্রকল্পে অর্থায়ন করতে পারলে পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে অসুবিধা কী? বাস্তবতা হচ্ছে, উজানের দেশ ভারত থেকে তিস্তায় প্রাপ্য পানি না আসায় বাংলাদেশ যে চীনা অর্থায়নের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছিল, তার মধ্যদিয়ে এক ধরনের ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ তৈরি হতো। এখন যদি ভারতীয় অর্থায়নে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়, তাহলে পানির মূল উৎস এবং বিকল্প কারিগরি ব্যবস্থা-সংবলিত প্রকল্প উভয়টির নিয়ন্ত্রণই কার্যত ভারতের হাতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের হাতে কী রইলো?

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024