সারাক্ষণ প্রতিবেদক
বর্তমান সরকার নির্বাচনের ভেতর দিয়ে এবার ক্ষমতায় আসার পরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কোন সিনিয়র কর্মকর্তার এই প্রথম ঢাকা সফর। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিন ও মধ্য এশিয় বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র এ সফরকে প্রথমত দুই দেশের কূটনীতিকরা মনে করছেন, মূলত এ সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরো উন্নত করারই পদক্ষেপ হবে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন ড. আবুল মোমেন
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন ড. আবুল মোমেন বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমূখী। তাই এই সফরে অনেকগুলো বিষয় সামনে আসবে। যেমন আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে তাদের সমরাস্ত্র বিক্রি বাড়াতে চায়। বর্তমান সরকারি দলের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক এক কমিটির নেতাদের নির্বাচনের আগে আমেরিকা সফরের পরেও যা মূল্যায়ন ছিলো তা ড. মোমেনের বক্তব্যকে সমর্থন করে। ওই ডেলিগেশন নেতাও তার মূল্যায়নে বলেছিলেন, আমেরিকার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশে ডিফেন্সে তাদের বিক্রি বাড়ানো।
এবারও বিষয়টি সামনে আসবে বলে জানালেন ড. মোমেন। তবে তিনি এটাও বললেন, তাদের সমরাস্ত্রের দাম অনেক বেশি।
অবশ্য এখানে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশের কিছু সমর বিশেষজ্ঞ’র মত হলো, বাংলাদেশ যে সব দেশ থেকে বেশি অস্ত্র কেনে সেগুলো মূলত ওয়ারশ ক্লাবের অস্ত্র। প্রযুক্তির দিক থেকে এ গুলো পিছিয়ে আছে। তাই সে হিসেবে ন্যাটো ক্লাবের অস্ত্রের বিষয় বাংলাদেশের চিন্তা করা উচিত।
ড. মোমেন যদিও বলেন, আমেরিকা ডিফেন্সে’র দিকে বেশি নজর দিতে চায়। তবে তারপরেও তার মতে আমেরিকার মেইন টার্গেট পিং পং। অর্থাত্ চায়না যেন খুব বেশি বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
ড.মোমেন আরো বলেন, তাছাড়া আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত বাস্তবমূখী। তারা সব সময়ই বাস্তবতা ও বর্তমানকে মেনে নিয়েই এগুতে চায়।
অন্যদিকে কূটনীতিক আরো কিছু সূত্র বলছে, যদিও আগের কয়েকটি আলোচনায় র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি একটি সিস্টেমের ভেতর নেয়া হয়েছে তারপরেও র্যাব নিয়ে আলোচনা হবে।
আর এর পরেই রয়েছে রোহিঙ্গা’র বিষয়টি। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে রোহিঙ্গা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। এ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের পেছনে খরচ হয়েছে ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রোহিঙ্গা সমস্যা
গতবছরও রোহিঙ্গাদের পেছনে যা খরচ তার ৬৮% সাহায্যদাতাদের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিলো।বাদবাকি বাংলাদেশকেই ব্যয় করতে হয়েছে। এবার এ অবধি মাত্র পাওযা গেছে ৩৪%। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এ মুহূর্তে ভালো যাচ্ছে না। তাই রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি বাংলাদেশ অবশ্যই আমেরকিার কাছে তুলবে।
তাছাড়া ড. মোমেন বলেন, বাস্তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ কোন পথ খুঁজে পাচ্ছে না। কারণ, আরকান আর্মির যুদ্ধ মূলত একটা প্রক্সি ওয়ার। এখনও মূলে রয়েছে নেপিডো আর্মি।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার এখনও আমেরিকা
ওদের সঙ্গে আমেরিকার কোন যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর জানা নেই। তবে তার মতে তাদেরকে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই।
এছাড়া আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশী পন্য ও অনান্য সুবিধার বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসবে বলে মনে করছেন কূটনীতিক সূত্রগুলো।
Leave a Reply