সারাক্ষণ ডেস্ক
দেশে আবার তাপপ্রবাহ ফিরে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার ৪ বিভাগ ও ১২টি জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। আজ বুধবার তাপপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ও তার পরদিন শুক্রবারও এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, সিলেট বিভাগসহ টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাঙামাটি, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে) বয়ে যাচ্ছে। তা আজ অব্যাহত থাকার পাশাপাশি বিস্তার লাভ করতে পারে। আজ দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
দেশে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের আর কোনো অঞ্চলে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছোঁয়নি। গতকাল রাজশাহী, পাবনার ঈশ্বরদী, রংপুর, নীলফামারীর ডিমলা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, রাঙামাটি, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দমশিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপপ্রবাহের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিও হতে পারে। আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে বগুড়ায় ১৬ মিলিমিটার। বাগেরহাটের মোংলায় ১ মিলিমিটার এবং ঢাকায় সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।
এবার এপ্রিলে দেশবাসী অতি তীব্র তাপপ্রবাহ দেখেছে। কেবল তা–ই নয়, দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহও ছিল এবার। ১ এপ্রিল দেশে শুরু হওয়া এই তাপপ্রবাহ ছিল ৫ মে পর্যন্ত। তারপর সাত দিন দেশের কোথাও না থাকলেও সোমবার আবার তাপপ্রবাহ ফিরে এসেছে। সোমবার সাত জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দেশে আবার তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তবে তা এপ্রিলের মতো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা কম। মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। ১৮–১৯ মে পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকার পর বৃষ্টির প্রবণতা একটু বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তখন তাপমাত্রা কমে আসবে।
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান চালাচ্ছে র্য্যাব। অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ, গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ মে) ভোররাত থেকে এ অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত সেখান থেকে আরসার ২ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা হেড মাঝিসহ কয়েকজনকে গুলি ও গলাকেটে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে উখিয়ার ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার আস্তানা শনাক্ত করে অভিযান চালায়।
র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত দুইটা থেকে অভিযান শুরু হয়। এরপর পুরো লাল পাহাড় ঘিরে ফেলা হয়। এক পর্যায়ে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এরপর র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ পর্যন্ত দুটি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়েছে। দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি-রকেট শেল ও গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
বাইডেন প্রশাসন দেশটির গুরুত্বপূর্ণ আইনপ্রণেতাদের জানিয়েছে, ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা হিসেবে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
এর আগে ‘রাফায় ব্যবহার হতে পারে’ এই আশঙ্কায় তিন হাজার ৫০০ ভারী বোমার চালান আটকে দেয় ওয়াশিংটন। এই উদ্যোগের পর আবারও যুক্তরাষ্ট্র তার গুরুত্বপূর্ণ মিত্রকে সামরিক সহায়তা দিতে যাচ্ছে। দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ কংগ্রেসের তিন সহযোগী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে কংগ্রেসের কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলকে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের ট্যাংকের গোলাবারুদ, ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক পরিবহন ও ৬০ মিলিয়ন ডলারের মর্টারের গোলা দেওয়া হবে।
তবে কবে নাগাদ এসব অস্ত্র ইসরায়েলের হাতে পৌঁছাবে, তা জানা যায়নি।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এই এক বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজের প্রস্তাব কংগ্রেসের কাছে নিরীক্ষার জন্য জমা দেওয়া হয়েছে।
ইরানের চাবাহার সমুদ্রবন্দর পরিচালনায় তেহরানের সঙ্গে নয়াদিল্লির চুক্তিটি মোটেও ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিটি ঘোষণার সাথে সাথে ভারতকে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এর একদিন পরেই মার্কিন হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ইরানের সঙ্গে এই প্রকল্পটি দুই অঞ্চলের জনগণের জন্যই বেশ মঙ্গলজনক বলে জোর দিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, জনগণ এক্ষেত্রে কারো সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নেবে না।
বুধবার জয়শঙ্করের লেখা ‘হোয়াই ভারত ম্যাটার্স’ বইয়ের বাংলা সংস্করণ প্রকাশ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারির জবাব দেন।
অনলাইন এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই অতীতে চাবাহারের বৃহত্তর প্রাসঙ্গিকতার প্রশংসা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মার্কিন হুঁশিয়ারি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জয়শঙ্কর বলেন, আমি তাদের মন্তব্য দেখেছি, তবে আমি মনে করি যোগাযোগ এবং এখানের জনগণের আশা-আকাঙ্খার কথা ভাবা উচিৎ। আমি মনে করি না কারো এ বিষয়ে সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিৎ।
তিনি আরো বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) অতীতে কখনও এমন মন্তব্য প্রকাশ করেনি। আপনারা যদি চাবাহার বন্দরের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব মনোভাব লক্ষ্য করেন দেখবেন তারা এর আগে চাবাহারের বৃহত্তর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশংসা করেছে।
সোমবার ইরানের চাবাহার সমুদ্রবন্দর পরিচালনার জন্য ১০ বছরের একটি চুক্তি করেছে নয়াদিল্লি-তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে কোনো দেশ ব্যবসায়িক চুক্তিতে গেলে তারা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে। তিনি আরো বলেছেন, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এখনো কার্যকর। এসব নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করা হবে।
নাম উল্লেখ না করে ভারতকে সতর্ক করে বেদান্ত বলেন, যারাই ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করবে, তাদের মনে রাখা উচিত যে তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা পড়ার পথ খুলে দিচ্ছে।
Leave a Reply