সারাক্ষণ ডেস্ক
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের ডিজিটালাইজেশন, তরুণ চিকিৎসকদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং ওভারসিজ ডক্টরস ট্রেনিং স্কিমের পুনঃপ্রবর্তন যা বর্তমানে মেডিকেল ট্রেনিং ইনিশিয়েটিভ (এমটিআই) নামে পরিচিত এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য খাতের সহযোগিতা জোরদারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) এবং বিভিন্ন ব্রিটিশ রয়্যাল কলেজের মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বও তুলে ধরেন।
বুধবার (১৫ মে) হাউজ অব কমন্সে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য ও মাধ্যমিক পরিচর্যা বিষয়কমন্ত্রী অ্যান্ড্রু স্টিফেনসনের সঙ্গে তার বৈঠকের সময় মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ব্রিটিশ মন্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে আরো দক্ষ নার্স এবং মিডওয়াইফ নিয়োগের আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বর্তমানে যুক্তরাজ্য সরকার এবং রয়্যাল সোসাইটি দ্বারা আয়োজিত ” অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া”সম্মেলনে যোগদানের জন্য একটি সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে মন্ত্রী অ্যান্ড্রু স্টিফেনসন স্বাস্থ্যমন্ত্রী উত্থাপিত সমস্ত পয়েন্ট নোট করেন এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতকে ডিজিটালাইজের জন্য বাংলাদেশকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন যা উভয় দেশের জন্য পারস্পরিকভাবে উপকারী হবে।
স্টিফেনসন মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনকে ডব্লিউএইচও-র লাল তালিকা থেকে বাদ দেয়া হলে তা সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করার পরামর্শ দেন যাতে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ থেকে যোগ্য নার্স নিয়োগ শুরু করতে পারে।
মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন মন্ত্রী স্টিফেনসনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমবার হাউজ অব কমন্সে যুক্তরাজ্যের ছায়া স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং এমপির সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেছেন।
তারা স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সহযোগিতা জোরদারের বিষয়েও আলোচনা করেন।
এনএইচএসে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে ছায়া স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দেয়া পারস্পরিক উপকার বয়ে আনা প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে তার পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী হবে, তা নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুকে একটি ‘পরিকল্পনা’ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।
গাজায় যে কোনো ধরনের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। তার এমন চ্যালেঞ্জকে সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য বেনি গান্তজও। তবে ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
তিনি গ্যালান্টের নাম উল্লেখ না করে বলেন, গাজায় আট মাস ধরে চলা সংঘাতে এখনো হামাসকে ধ্বংস করতে না পারায় অজুহাত তৈরি করছেন অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল। তবে নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ও মধ্যপন্থি সাবেক জেনারেল বেনি গান্তজও। তিনি গ্যালান্টের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সত্য কথাই বলেছেন।
গ্যালান্ট বলেছিলেন, হামাসকে পরাজিত করার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়া ইসরাইলিদের পুনরুদ্ধার করার যে লক্ষ্য নেতানিয়াহু সরকার নিয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে হলে গাজায় অবশ্যই একটি বিকল্প ফিলিস্তিনি শাসনের ভিত্তি স্থাপন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে বৈদেশিক সাহায্য ও অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য অতিরিক্ত প্রচেষ্টা চালাতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। এনইসি আগামী অর্থবছরের (২০২৪–২৫) জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন করেছে।
চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে চীনের শহর হারবিনে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই শহরটিতে বিপুল সংখ্যক রাশিয়ানের বসবাস। আজ শুক্রবার তিনি চীন-রাশিয়া বাণিজ্যমেলা সফরে যাবেন। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে তারা গভীর সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন। পুতিন বলেছেন, তারা ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তারা দু’জনেই ইউক্রেন যুদ্ধের একটি রাজনৈতিক সমাধান চান। পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই পুতিনের প্রথম বিদেশ সফর। দেশের নির্বাচনে তিনি বিতর্কিতভাবে কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কয়েক শত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এমন অবস্থায় রাশিয়ার জন্য চীনকে দেখা হয় লাইফলাইন হিসেবে। প্রযুক্তি এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করে মস্কোকে এই যুদ্ধে বেইজিং সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু চীনের দাবি, এসব প্রযুক্তির কোনোটিই প্রাণঘাতী নয়। এগুলো সবই বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য।
অনলাইন বিবিসি বলছে, আজ শুক্রবার হারবিনে পৌঁছার আগে পুতিনকে ঝোংনানহাইয়ে আতিথেয়তা জানান শি জিনপিং। এটি হলো চীনা নেতাদের বসবাসের স্থান এবং কর্মক্ষেত্র। ওয়াশিংটনে অবস্থিত হোয়াইট হাউসের সঙ্গে তুলনা করা হয় এ স্থানকে। সেখানে দুই নেতা চা পান করেন। চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, অভিন্ন বিষয়ে কৌশলগত ইস্যুতে গভীর মতবিনিময় হয়েছে তাদের মধ্যে। আলোচনার চেয়ে প্রতীকি ঝোংনানহাইয়ে পুতিনকে আতিথেয়তা জানানো হয়েছে। এক সময় এটা ছিল চীনের সম্রাটদের প্লেগ্রাউন্ড। কিন্তু বর্তমানে ঝোংনানহাই হলো চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির হেডকোয়ার্টার্স এবং শীর্ষ নেতাদের বাসস্থান। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেখানে শুধু ঘনিষ্ঠ মিত্রদের আতিথেয়তা জানানো হয়। এখানে ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন শি জিনপিং। এর এক বছর পরে বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপের সঙ্গে সেখানে সাক্ষাৎ করেছিলেন শি জিনপিং। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহু বিদেশি নেতাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার শি জিনপিং ও পুতিন ইয়াংজি ব্রিজের সামনে সাক্ষাৎ করেছেন। এটা নির্মাণ করা হয়েছে মিং রাজবংশের সময়ে। পূর্বেই সিনহুয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন জানিয়েছেন, তার পরিবারের সদস্যরা চীনা ভাষা শিখছেন। তারা চীনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাই তারা চীনা ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করছেন। পুতিন জানান, তিনি চীনের মার্শাল আর্টের কিছুটা জানেন। চীনের দর্শনকে তিনি শ্রদ্ধা করেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের প্রায় ৫ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের অফশোর সম্পদ আছে, যা বাংলাদেশের মোট জিডিপির প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এই সম্পদের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে, বাকিটা ইউরোপ ও আমেরিকায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ট্যাক্স অবজারভেটরির সম্প্রতি প্রকাশিত অ্যাটলাস অফ অফশোর ওয়ার্ল্ড শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব জানা গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অফশোর বিনিয়োগের ২০২২ সালের তথ্য দিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ট্যাক্স হেভেনে বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্বল্প কর দিয়ে বা বিনা করে বিনিয়োগ করতে পারেন। আর বিনিয়োগকৃত এই সম্পদকে অফশোর সম্পদ বলা হয়।
২০২১ সালে ট্যাক্স হেভেনে বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন অফশোর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ১৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত, হংকংসহ এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, না জানিয়ে এই অফশোর বিনিয়োগে শূন্য দশমিক ৫ বিলিয়ন কর পাওয়া যায়নি বলে অনুমান করা যায়।
এতে আরও দেখা গেছে, ট্যাক্স হেভেনে রিয়েল এস্টেট খাতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ করা মোট অফশোর সম্পদের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশের জিডিপির শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগের বেশিরভাগই সিঙ্গাপুর ও দুবাইতে। এছাড়া লন্ডন ও প্যারিসে কিছু বিনিয়োগ হয়েছে এ খাতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অফশোর রিয়েল এস্টেট শেষ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীর মালিকানাধীন হয় কিংবা জটিল অফশোর কাঠামোর মাধ্যমে ভিন্ন দেশের কোনো বাসিন্দার মালিকানাধীন হয়ে থাকে যেখানে প্রকৃত মালিকের পরিচয় অস্পষ্ট থাকে।’
অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) সাম্প্রতিক একটি অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত ৩৯৪ জন বাংলাদেশি দুবাইয়ের ৬৪১টি আবাসিক সম্পত্তির মালিক, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২২৫ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার। সংস্থাটি ২০২২ সাল থেকে এ অনুসন্ধান পরিচালনা করেছে।
ওসিসিআরপি বলছে, দুবাই অফশোর বিনিয়োগের জন্য জনপ্রিয় কারণ ‘পলাতক অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আমিরাত যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখায় না।’
এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘তদন্তাধীন বা অন্য কোথাও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিরা কীভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই এই সম্পদ কিনতে পারে এবং মালিক হয়ে যেতে পারে তা বোঝা কঠিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিজেদেরই এসব ঘটনা চিহ্নিত করতে পারা উচিত এবং সম্পদগুলো টার্গেট করে সন্দেহজনক কিছু মনে হলে বিদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করা উচিত।’
Leave a Reply