শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন

১০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে ব্রিটেন

  • Update Time : শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৯.৫০ এএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “১০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে ব্রিটেন”

১০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে ব্রিটেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি করেছে দেশটি। এই চুক্তির আওতায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। প্রত্যাখ্যান হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের সংখ্যা হতে পারে ১০ হাজারেরও বেশি।

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করে ব্যর্থ হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। গত বছর প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন শুধু স্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার প্রয়াসে। আর দেশটিতে প্রবেশের পর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন তারা।

দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, অভিবাসীরা গত বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী বা ভিজিটর ভিসায় ব্রিটেনে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেছেন। মূলত ব্রিটেনে প্রবেশের ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে কাজে লাগানোর প্রয়াসে এসব ভিসা ব্যবহার করেছেন তারা। তবে দেশটিতে বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয় আবেদনের মাত্র ৫ শতাংশই সফল হয়েছে। অর্থাত্ ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে।

দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, গত সপ্তাহে লন্ডনে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় পক্ষ রিটার্ন চুক্তিটিতে সম্মত হয়। এই চুক্তির অধীনে ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীরা ছাড়াও বিদেশি নাগরিকদের যারা অপরাধী এবং যেসব ব্যক্তি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশের পর বাড়তি সময় অতিবাহিত করেছেন তাদেরও নির্বাসনের কাজ সহজ হবে। এছাড়া রিটার্ন চুক্তিটির ফলে বাধ্যতামূলক কোনো সাক্ষাত্কার ছাড়াই অভিযুক্তদের দেশে ফেরত পাঠানো যাবে কারণ এ সব অভিবাসীদের দেশ থেকে ফেরত পাঠানোর জন্য সহায়ক প্রমাণ রয়েছে।

প্রতিবেদনে দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ভিসার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্য দেশের মানুষকে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেয়। কিন্তু যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর কেউ আশ্রয়ের আবেদন করলে সেখানে তার অবস্থান অনির্দিষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২১ হাজার ৫২৫ জন ভিসাধারী যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন করেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৫৪ শতাংশ বেশি। ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর আশ্রয়প্রার্থীর শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান, এরপরের অবস্থানে আছে বাংলাদেশ, ভারত, নাইজেরিয়া ও আফগানিস্তান।  এই অভিবাসীরা গত বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী  বা ভিজিটর ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর শুধু স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেন। গত বছর যুক্তরাজ্য  থেকে বিভিন্ন দেশের ২৬ হাজার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

 

 

প্রথম আলর একটি শিরোনাম “হামাসের সুড়ঙ্গ থেকে ৩ ‘জিম্মির’ মরদেহ উদ্ধার”

গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মি তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। উপত্যকাটিতে হামাসের একটি সুড়ঙ্গে অভিযান চালিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

এক বিবৃতিতে শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, ওই তিনজন হলেন শানি লোউক, অমিত বুসকিলা ও ইতজাক গেলেরেন্টার। গত বছরের ৮ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের হামলার দিনই তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পরে তাঁদের মরদেহ গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ডামি ফুয়েলে পরীক্ষামূলক, সঞ্চালন লাইন শেষ করতে আরো এক বছর”

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রথম ইউনিটের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ হয়েছে ৭০ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ফুয়েল লোডের (ইউরেনিয়াম) সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আগে ডামি ফুয়েলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখা হবে। আর জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ কবে হবে, তা নির্ভর করছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সঙ্গে সংযুক্ত সঞ্চালন লাইনগুলোর কাজ শেষ হওয়ার ওপর। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন শেষ হতে সময় লাগবে আরো এক বছরের বেশি।

যেকোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইউরেনিয়াম (জ্বালানি) ফুয়েল রিঅ্যাক্টরে স্থাপনের আগে কয়েক ধাপে ডামি ফুয়েল দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হয়। ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। যদিও সঞ্চালন লাইনের নির্মাণ শেষ না হওয়ায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে কবে যুক্ত করা যাবে সে বিষয়ে এখনো সংশয়ে রয়েছেন তারা।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে চারটি সঞ্চালন লাইন সংযুক্ত হওয়ার কথা। এগুলো হলো ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপপুর-বাঘাবাড়ী সঞ্চালন লাইন, ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপপুর-বগুড়া, ১৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপপুর-গোপালগঞ্জ ও ১৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপপুর-ঢাকা সঞ্চালন লাইন।

‘কনস্ট্রাকশন অব ৪০০ কেভি অ্যান্ড ২৩০ কেভি রিভার ক্রসিং ট্রান্সমিশন লাইন ফর পাওয়ার ইভাক্যুয়েশন অব নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট অন যমুনা অ্যান্ড পদ্মা রিভারস’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় লাইনগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় এর মধ্যে রূপপুর-গোপালগঞ্জ লাইনের কাজ শেষ হয়নি। ৪০০ কেভি সিঙ্গেল লাইন চালু করার জন্য দুই কিলোমিটার পদ্মা নদী পারাপারের (রিভার ক্রসিং) কাজ এখনো চলমান। রূপপুর-ঢাকা সঞ্চালন লাইনের মধ্যে নদী পারাপার আছে ১৪ কিলোমিটার। গোটা সঞ্চালন লাইন প্রকল্পের এ অংশকেই সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে দেখছে পিজিসিবি।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পিজিসিবির এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রকল্পে নদী পারাপার (রিভার ক্রসিং) অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। অর্থায়ন জটিলতা, প্রকল্পের লোকবল সংকটে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ থেমে ছিল। এ কাজ শেষ হতে এক বছর বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে অন্তত দেড়-দুই বছর সময় প্রয়োজন।’

সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, ২০২৫ সালের জুন নাগাদ বড় সঞ্চালন লাইনগুলোর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও পিজিসিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দীর্ঘ এ সঞ্চালন প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ১৪ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ১৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম গাউছ মহীউদ্দিন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রূপপুরের সঙ্গে সংযুক্ত বেশ কয়েকটি সঞ্চালন লাইন রয়েছে। এর মধ্যে ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভি রিভার ক্রসিং সঞ্চালন লাইন বাদে বাকি লাইনগুলো আমরা চালু করেছি। চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর চালু হলে প্রস্তুত হওয়া লাইনগুলো দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু করা সম্ভব। বর্তমানে যে সঞ্চালন লাইনের কাজটি চলছে সেগুলোর পদ্মা ও যমুনার রিভার ক্রসিংয়ের কাজ চলছে। আমরা রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। আশা করি কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট পুরোপুরিভাবে চালু হওয়ার আগেই সব সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হবে।’

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্য কেন্দ্রগুলোর চেয়ে আলাদা। কোনো একটি সঞ্চালন লাইনের কাজ অবশিষ্ট থাকলে তা রূপপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রমে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। সঞ্চালন অবকাঠামো প্রস্তুত করা নিয়ে রূপপুর প্রকল্পের রাশান জেনারেল কন্ডাক্টর, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) কর্মকর্তারা এরই মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন। তবে তাদের এসব বৈঠকে রূপপুরের বিদ্যুৎ কবে নাগাদ গ্রিডে সরবরাহ সম্ভব হবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর উপযোগী হওয়ার সময় এর সঞ্চালন অবকাঠামো প্রস্তুত থাকাটাও অত্যন্ত জরুরি। কারণ এটি অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম এর আগে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর জন্য আন্তর্জাতিক গাইডলাইন রয়েছে। এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর জন্য অন্তত চারটি ধাপ রয়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রটি চালুর আগে প্রি-কমিশনিং কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। সেখানে কোল্ড টেস্ট-হট টেস্ট করতে হয়। এরপর প্রকৃত জ্বালানি ব্যবহার করে শূন্য পাওয়ার থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে ফুল পাওয়ারে যেতে হয়। এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে ফুয়েল লোড করতে হয়। এসব কাজ করতে প্রতিটি পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মান রেগুলেটরি বডিকে দিতে হয়। এরপর কেন্দ্রটি চালু করা যায়।’

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালুর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশের টেস্টিং কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এটি করতে অন্তত পাঁচ-সাত মাস সময় লাগতে পারে। বিষয়টি নির্ভর করছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতিটি যন্ত্রাংশের সফল পরীক্ষার ওপর। চূড়ান্তভাবে এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শেষ হলে আগামী ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটের ফুয়েল লোড (ইউরেনিয়াম) করা হবে। যেটিকে বলা হচ্ছে এ প্রকল্পের ফিজিক্যাল স্টার্টআপ। এ কার্যক্রমের আগে আইএইএর মিশন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করবে। আইএইএর সার্টিফিকেট পাওয়ার পর পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারের লাইসেন্স পাওয়া যাবে।

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের কাজ সার্বিকভাবে ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে প্রথম ইউনিটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের টেস্টিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ফুয়েল লোড (জ্বালানি) হবে। এটি দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। সেটির বিভিন্ন পর্যায়ে কার্যক্রম রয়েছে। এ কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হলে ফাইনাল পর্যায়ে পাওয়ার স্টার্টআপ কাজ শুরু হবে। এ কার্যক্রম রূপপুর ও পিজিসিবি দুই অংশের সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করছে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে রূপপুরে জেনারেল কন্ডাক্টর, পিজিসিবি বৈঠক হয়েছে। কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ দ্রুত গ্রিডে দিতে সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে।’

প্রকল্পের পূর্বনির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রথম ইউনিটের এবং ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। শিডিউল অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর প্রথম ইউনিট আর ২০২৫ সালের ১৭ অক্টোবর দ্বিতীয় ইউনিটের চূড়ান্ত হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এখন এ প্রকল্পের সময়সীমা দুই বছর পিছিয়ে আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির এক সভায় প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়।

প্রসঙ্গত, পাবনার রূপপুরে নির্মীয়মাণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া। এ প্রকল্পে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলার ঋণ অর্থায়নের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় রাশিয়া। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধ (জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রতিশ্রুত ঋণ বাবদ ছাড় হয়েছে সর্বোচ্চ প্রায় ৬২৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এরই মধ্যে প্রকল্পটির সিংহভাগ কাজ শেষও হয়েছে। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম দেশে এসেছে, যা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় সংরক্ষণ করা হয়েছে।

 

মানবজমিন এর একটি শিরোনাম “রিজার্ভ নিয়ে তিন হিসাব, চাপ বাড়ছে”

অর্থনীতির অন্যতম সূচক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটানা কমেই চলেছে। রিজার্ভের পতন কোনোভাবেই ঠেকাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে উদ্বেগ এবং শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আওতাধীন দেশগুলোর আমদানি বিল পরিশোধ করায় রিজার্ভে বড় ধাক্কা লেগেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আর বর্তমানে সেই রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলারে (২৩.৭৭ বিলিয়ন)। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ১ হাজার ৮৩২ কোটি ডলার (১৮.৩২ বিলিয়ন)। তবে প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা কম, যাতে পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কখনোই নিট রিজার্ভের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে না। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

তথ্য মতে, গত দুই বছর ধরে প্রায় প্রতি মাসেই রিজার্ভ গড়ে ১ বিলিয়ন ডলার করে কমেছে।

অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকটি নিম্নমুখী হওয়ার জন্য বৈশ্বিক সংকটের পাশাপাশি কিছু ভুল নীতিও ভূমিকা রেখেছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়াতে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, সেগুলো রিজার্ভ বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। ডলারের সংকট থাকায় রিজার্ভের পতন অব্যাহত রয়েছে। বরং প্রায় প্রতিনিয়তই কমছে রিজার্ভ। এখন আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরও প্রতি মাসে আমদানি দায় মেটানোর জন্য গড়ে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে প্রকৃত রিজার্ভের অর্থ দিয়ে তিন মাসেরও আমদানি খরচ মেটানো যাবে না।

দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশকিছু পদেক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এ থেকে সুফল মিলছে না। ডলারের দর বাড়ছে। বিপরীতে টাকার মান কমছেই। আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ডলারের দর অনেক বেড়ে গেছে। প্রতি ডলার আরও বেড়ে ১১৭ টাকায় ঠেকেছে। কিন্তু খোলা বাজারে আরও বেশি।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমেছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলারের মজুতে চাপ পড়ছে। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে জোগান দিতে হচ্ছে আমদানির খরচ। এর চাপ গিয়ে পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর। কারণ, আমদানি যে হারে বেড়েছে, রপ্তানি সে হারে বাড়েনি। আবার প্রবাসী আয়ও কমে গেছে। ফলে প্রতি মাসে রিজার্ভে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, যা দিয়ে দেশের তিন মাসেরও আমদানির দায় মেটানো যাবে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রিজার্ভ এখন বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। এই অবস্থায় রিজার্ভ বাড়াতে হলে সঠিক নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি।

যেভাবে রিজার্ভ কমলো: গত সপ্তাহে আকু (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন) বিল বাবদ রিজার্ভ থেকে ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। ফলে রিজার্ভ আরও কমে যায়। আগামী ৩০শে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আইএমএফ’র দেয়া নিট বা প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি ডলার। বাংলাদেশের অনুরোধের পর আইএমএফ এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে। তবে প্রকৃত এই রিজার্ভ এখন ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কম। ফলে এখনো লক্ষ্য অর্জনের বেশ দূরে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত মজুত।

এ ছাড়া করোনা বিধিনিষেধের মধ্যে আমদানি ব্যয়, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও বিদেশি মুদ্রার আয় মারাত্মকভাবে কমে যায়। কিন্তু প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। এরপর আমদানি ব্যয় বাড়তে শুরু করলে এবং দেশের অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রিজার্ভ কমতে শুরু করে। এরপর ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। যার প্রভাব পড়ে আমদানিনির্ভর দেশগুলোর ওপর, এতে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবেই যা এখন কমে হয়েছে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার। ফলে আড়াই বছরে রিজার্ভ কমে অর্ধেক হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিজার্ভ যদি আরও কমে যায়, তাহলে দুটি ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। একটি হলো ডলারের জোগান কমে আসলে তা মোকাবিলায় সক্ষমতা থাকবে না। যেকোনো ধরনের দুর্যোগ এলে তা সামাল দেয়া যাবে না। ফলে রিজার্ভ যথাযথ না থাকলে উভয় ক্ষেত্রেই কোনো সংকট এলে মোকাবিলা কঠিন হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ডলারের দাম বেঁধে রাখার কারণে হুন্ডির ব্যবহার যেমন লাগাম ছাড়া হচ্ছে, তেমনই ডলারের প্রবাহও কমে যাচ্ছে, রিজার্ভও বাড়ছে না।

ডলারের দাম একসময় নির্ধারণ করতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় হার নির্ধারণের দায়িত্ব দেয়া হয়। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পর ডলারের দাম নির্ধারণে এবার ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ডলারের দাম ক্রলিং বা ওঠানামা করার সুযোগ রাখেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলছেন, মানি মার্কেট (মুদ্রা বাজার) সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এখন ডলার ট্রেড বাড়লে রিজার্ভের ওপর আর চাপই থাকবে না।

আইএমএফের শর্ত পূরণ নিয়ে সংশয়: সূত্র জানায়, ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির আওতায় আইএমএফ আগামী জুন নাগাদ ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করেছে ১৪.৮০ বিলিয়ন ডলার। এটিও জুনের মধ্যে পূরণ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রিজার্ভ কমছে। এক মাসে তা বাড়ার তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

ডলারের দাম বেঁধে রাখা: ডলারের বিনিময় হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোরতার কারণেই রেমিট্যান্সের বড় পতন হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের নিম্নমুখী ধারায় যখন রিজার্ভ পতনশীল, তখন টাকা ও ডলার বিনিময় হারে নিয়মিত ও যথাযথ সমন্বয় না করে উল্টো নিজেদের বেঁধে দেয়া ডলারের বিনিময় হার নিয়ে কঠোর হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকট আরও ঘনীভূত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলারের দাম বেঁধে রেখে প্রবাসী আয় বাড়ানো সম্ভব নয়। কারণ, বেশি দাম পাওয়ার কারণে প্রবাসীদের অনেকেই আয় হুন্ডিতে পাঠাচ্ছেন।

বেড়েছে হুন্ডি: চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে যে পরিমাণ শ্রমিক গেছেন সেই তুলনায় রেমিট্যান্স বাড়েনি। গত বছর প্রায় ১১ লাখ শ্রমিক দেশের বাইরে গেছেন। শ্রমিক যাওয়া বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই রেমিট্যান্স বাড়ার কথা। কিন্তু হুন্ডির কারণে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেশি আসায় ওইসব ডলার চলে গেছে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি: বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের পক্ষে সরকারি ঋণের কিস্তি, সেবা মাশুল, ফি পরিশোধ করার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা ছাড়াও সরকারি বিভিন্ন আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোকে ডলার দিচ্ছে। ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে দুই বছরের বেশি সময় ধরে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে সরকারি আমদানি চাহিদা মেটাতে রিজার্ভ থেকে ১১.৬৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রির পরিমাণ ছিল ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার।

উল্লেখ্য, কোনো দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের আমানত হিসাবে নেয়া মোট অর্থের একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে (বাংলাদেশ ব্যাংক) জমা রাখতে হয়। এই অর্থ তারা ঋণ বা অন্য কোনো কাজে খরচ করতে পারে না। আর রপ্তানি, রেমিট্যান্স, ঋণ বা অন্যান্য উৎস থেকে আসা বৈদেশিক মুদ্রা থেকে আমদানি, ঋণ ও সুদ পরিশোধ, বিদেশে শিক্ষা ইত্যাদি নানা খাতে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা বাদ দেয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যে বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চিত থাকে, সেটাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বৈদেশিক মুদ্রার যথেষ্ট সঞ্চয় যদি থাকে, তখন বৈদেশিক ঋণ নেয়ার সময় কম চিন্তা করতে হয়। পাশাপাশি অনেক ব্যবসায়ীও বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নেন, যা বিদেশি মুদ্রায় শোধ করতে হয়। আবার যেসব আমদানি করা হয়, সেই আমদানির মূল্য বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয়। এজন্য যেকোনো দেশের যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় থাকলে আমদানি নিয়েও চিন্তা করতে হয় না। বাংলাদেশের মতো দেশে রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হয়। ফলে এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেশি থাকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

 

The Daily Star বাংলার একটি শিরোনাম “ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে মসলার দাম বাড়িয়েছে ‘সিন্ডিকেট”

ডলারের দাম ৭ টাকা বেড়ে যাওয়ার পরপরই রাজধানীর বেশিরভাগ বাজারে আমদানিকৃত মসলার পাইকারি দাম প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কচুক্ষেত ও পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আমদানি করা বেশিরভাগ মসলার দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে।

আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, হঠাৎ ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে তার প্রভাব পড়ছে। গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করে।

এরপর প্রতি কেজি জিরার দাম ৫৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮০ টাকা, এলাচের সর্বনিম্ন দাম ২৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩২০০ টাকা হয়েছে। আরেক ধরনের এলাচের দাম আগে ৩২০০ টাকা ছিল, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ টাকায়।

এ ছাড়া, গোল মরিচের (কালো) দাম ১০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০০ টাকা হয়েছে। কাজুবাদাম ১২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ছোলা ১০২ টাকা থেকে বেড়ে ১০৮ টাকা কেজি হয়েছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নুর ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রিয়াজ হোসেন পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার পাইকারি বাজার থেকে সপ্তাহে দুবার মসলা কেনেন।

সম্প্রতি দাম বেড়ে যাওয়ার হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি আদা ৫৭০-৫৮০ টাকায় কিনতাম। কিন্তু এখন ৭০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অথচ ডলারের দাম বাড়ার আগেই এই মসলা আমদানি করা হয়েছে। এটা সিন্ডিকেটের কাজ।’

আরেক দোকানের কর্মচারী জানান, ছয় মাস আগে এলাচের দাম ছিল ১৭০০-১৮০০ টাকা কেজি। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০০-৩৩০০ টাকায়। ‘একটি সিন্ডিকেট মসলার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে’, বলেন তিনি।

মৌলভীবাজার পাইকারি বাজারের মসলার এক পাইকারি বিক্রেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এসব মসলার কেনা দাম একই হলেও কিছু আমদানিকারক ডলারের বাড়তি দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে দাম বাড়াতে বলেছেন।’ ‘তাদের কথা না শোনার উপায় নেই আমাদের’, বলেন তিনি।

কারওয়ান বাজারের কুমিল্লা জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. গোফরান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বর্তমানে পাইকারি বাজারে সীমাবদ্ধ। তবে খুব শিগগির এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়বে। বিশেষ করে ঈদুল আজহার আগে দাম বেড়ে যাবে।’

যোগাযোগ করা হলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু ডলারের দাম কমলে তারা কি দাম কমায়?’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়ায় জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন দাম বেশি না বাড়ায়।’

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024