শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

ইউক্রেন যুদ্ধ চালাতে চায়নার বাণিজ্যিক সমর্থন চান পুতিন

  • Update Time : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ১০.২৯ এএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে চলমান তাঁর সামরিক অভিযানের প্রতি বেইজিংয়ের আরও বেশি সমর্থন লাভের লক্ষ্যে প্রতিবেশী দেশ চায়না সফর শেষ করেছেন। তাঁর দেশের ক্রমশ: একঘরে হয়ে পড়া অর্থনীতির সহিত (চায়নার) গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা ছিল এর উদ্দেশ্য।

ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে রাশিয়া ও চায়নার মধ্যকার অংশীদারিত্ব কেবল ঘনিষ্ঠতরই হয়েছে। বেইজিং বাণিজ্যের মাধ্যমে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জীবনধারা বজায় রেখে মস্কোর যুদ্ধ-প্রয়াসে সহায়তা করছে বলে পশ্চিমাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। রুশ-চায়না বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২৩ সালে ২৪,০০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছিল।

পুতিন তাঁর দু’দিনের সফরের শেষ দিন শুক্রবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হারবিন শহর পরিদর্শন করেন। দু’দেশের মধ্যে “বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের” দিকটি তুলে ধরাই এর উদ্দেশ্য। চাইনিজ বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ খবর জানায়।

পুতিন মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর প্রথম বিদেশ সফর হিসাবে বৃহস্পতিবার বেইজিং পৌঁছান। সেখানে তিনি চাইনিজ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়ে তাঁদের দেশগুলোর সম্পর্ককে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এক স্থিতিশীলতা আনয়নকারী শক্তি হিসাবে তুলে ধরেন। দু’ নেতা ইউক্রেন সংকট নিয়ে ব্যাপক মত বিনিময় করেন বলে সিনহুয়া জানায়। শি ইউক্রেন ইস্যুকে রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়নার সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থান ও প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।

চায়না রাশিয়ার কাছে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠায়নি। ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা মিত্ররা গত বছর প্রকাশিত চায়নার শান্তি প্রস্তাবের সমালোচনা করে।

রুশ বিশেষজ্ঞ আলেক্সি মুরাভিয়েভ ,অস্ট্রেলিয়ার পার্থস্থ কারটিন ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের এসোসিয়েট প্রফেসর , বলেন- দু’ দেশের সম্পর্ক সীমাহীন বলে তাদের দাবি সত্ত্বেও সেই সম্পর্কের সীমা রয়েছে।

তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, সীমাবদ্ধতা এই যে, দু’ দেশের মধ্যে কোন আনুষ্ঠানিক মৈত্রী-চুক্তি নেই। আমার মতে, মৈত্রী-চুক্তির অনুপস্থিতিই যা এক সীমাহীন সম্পর্ক বলে মনে হয় তার সীমা থাকার খুব স্পষ্ট এক লক্ষণ। কোন পক্ষই ইউক্রেনের মত ইস্যুগুলোতে “একে অপরকে সমর্থন করার নিঃশর্ত প্রতিশ্রুতি দিতে প্রস্তুত নয়”।

শি বলেন, তিনি “অব্যাহত ও স্থায়ী প্রগতি অর্জন, দু’ জাতির জন্য আরও কল্যাণ বয়ে আনা এবং বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রতি অবদান রাখার জন্য” পুতিনের সঙ্গে কাজ করে যাবেন।

পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকায় রাশিয়ার অর্থনীতির প্রতি সমর্থন ছিন্ন করতে চায়নার উপর চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে।

পুতিন বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রসার ঘটাতে হারবিন পরিদর্শন করেন। রাশিয়া-সংলগ্ন সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক শত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হারবিন দীর্ঘদিন ধরে দু’দেশের সীমান্ত বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের কেন্দ্রস্থল হয়ে রয়েছে।

শুক্রবার এক রুশ-চায়না বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুতিন দু’ দেশের মধ্যকার জ্বালানি সম্পর্ককে স্বাগত জানান এবং সেই সম্পর্ককে “জোরদার” করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, “রাশিয়া চায়নার অর্থনীতি, ব্যবসা, ছোট-বড় শহরগুলোকে ব্যয়সাধ্য ও পরিবেশের দিক দিয়ে নির্মল জ্বালানি দিয়ে অব্যাহতভাবে শক্তি যোগাতে প্রস্তুত ও সক্ষম।”

তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার অভিযানের লক্ষ্য এক বাফার জোন সৃষ্টি করা, কিন্তু সেটি দখল করার কোন পরিকল্পনা নেই।

রুশ বাহিনী গত সপ্তাহে নতুন করে আক্রমণ শুরু করার পর উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চলে ক্রমশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি অঞ্চলটি পরিদর্শন করে “পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন” রয়ে গেছে বলে স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি সাধারণভাবে নিয়ন্ত্রণাধীন।” পুতিন বলেন, রুশ সৈন্যরা পরিকল্পনামত প্রাত্যহিক অগ্রগতি অর্জন করছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024