সারাক্ষণ ডেস্ক
ভারতের দীর্ঘ লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চম দফার ভোট হতে চলেছে আজ সোমবার। সকাল সাতটায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে। এ পর্যায়ের ৪৯ আসন ধরলে মোট ৪২৮ আসনে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এরপর আরও দুটি দফায় ২৫ মে এবং আগামী ১ জুন মোট ১১৫ আসনে ভোট হবে। এই ৪৯ আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে বিজেপি জিতেছিল ৩২ আসন। ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৪ জুন।
এ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় রাহুল গান্ধীর নাম। মধ্য-দক্ষিণ উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকে দাঁড়াচ্ছেন দলের মুখ রাহুল এবং পাশের আসন আমেথি থেকে কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন চার দশকের বেশি সময় ধরে গান্ধী পরিবারের বিশ্বস্ত অনুগামী কিশোরীলাল শর্মা। এই দুই আসন রাহুলসহ গান্ধী পরিবারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, পরপর তিনবার আমেথি থেকে জেতার পর গতবার (২০১৯) রাহুল এ আসনে হেরে যান বিজেপির প্রার্থী অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে। ফলে এবার তিনি আমেথি থেকে সরে রায়বেরেলিতে দাঁড়িয়েছেন। রায়বেরেলিতে এর আগে পরপর ছয়বার জিতেছেন সোনিয়া গান্ধী।
এ ছাড়া এ পর্যায়ে তারকা প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (লক্ষ্ণৌ), বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল (মুম্বাই-উত্তর), কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ (বারামুল্লা), বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিনী আচার্য যাদব।
এ পর্বে কে কত আসন পাচ্ছেন, সেদিকে পর্যবেক্ষকদের বেশি নজর থাকবে। কারণ, পঞ্চম পর্বের ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট জিতলে বাজেট বরাদ্দের ১৫ শতাংশ মুসলমানদের জন্য খরচ করা হবে। কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি জিতলে উত্তর প্রদেশে রামমন্দির ভেঙে ফেলবে বলেও তিনি দাবি করেছিলেন। মেরুকরণের এই প্রচার মানুষ মেনে নিয়েছেন কি না, সেটাও বোঝা যাবে পঞ্চম পর্বের ফল দেখে।
পশ্চিমবঙ্গের চিত্র
আজকের পর্বে পশ্চিমবঙ্গের সাতটি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে। এই আসনগুলো হলো হুগলি জেলার শ্রীরামপুর, হুগলি ও আরামবাগ; উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁও ও ব্যারাকপুর; হাওড়া জেলার উলুবেরিয়া ও হাওড়া।
এর মধ্যে বেশ কয়েকটিতেই রয়েছেন তারকা প্রার্থী। যেমন হুগলিতে বিজেপির সংসদ সদস্য অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী করেছে আরেক অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শ্রীরামপুর কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের আক্রমণাত্মক আইনজীবী সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লড়ছেন তাঁর কন্যার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে।
নাগরিকত্ব আইনের পরীক্ষা
অপর গুরুত্বপূর্ণ আসন বনগাঁও। এখানে দাঁড়িয়েছেন গতবারের বিজেপি সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তিনি নমশূদ্র সমাজের ধর্মীয় গোষ্ঠী মতুয়া সমাজের সদস্য। ভারতে যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়িত হয়েছে, তার পক্ষে গত কয়েক বছর প্রচারণা চালিয়েছেন শান্তনু। নমশূদ্র সমাজ, যাদের বড় অংশ ভারতের বাইরে থেকে এসেছে, তারা নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে দাঁড়ালেও এখনো নতুন আইনে কেউ নাগরিকত্বের আবেদন করেনি। এ অবস্থায় গতবারের মতো মতুয়া ও নমশূদ্র সমাজের ভোট কি বিজেপির সঙ্গেই থাকবে, নাকি তৃণমূলের দিকে ঝুঁকবে, তার ওপর নির্ভর করছে এ আসনের ভাগ্য।
ব্যারাকপুর আসনটিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন অর্জুন সিং, যিনি গতবার বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন। কিন্তু এরপর তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন। সম্প্রতি বিজেপিতে ফিরেই তিনি ব্যারাকপুরে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি আসন ধরে রাখতে পারেন কি না, সেটা দেখার। ব্যারাকপুরে সিপিআইএম দাঁড় করিয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা দেবদূত ঘোষকে। তিনি মমতাবিরোধী ভোট খানিকটা কেটে তৃণমূলের সুবিধা করে দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট পুলিশিং। বাংলাদেশ পুলিশকে স্মার্ট পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
রোববার (১৯ মে) সকালে সিলেটে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইজিপি এ কথা বলেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন করা হয়েছে; বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের কারিকুলাম যুগোপযোগী করা হয়েছে। মামলা তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ পুলিশের উঁচু মানের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আইজিপি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সচেষ্ট রয়েছেন।
আইজিপি সিলেট রেঞ্জের অপারেশনস কন্ট্রোল রুম এবং সিলেট জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি সিলেট বিভাগে কর্মরত সকল ইউনিটের অফিসার ও ফোর্সের সাথে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশেষ কল্যাণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান, সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানের খোঁজ মিলছে না। তাদের সন্ধান পেতে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির অবস্থান শনাক্তে সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ভাহিদি। তিনি বলেছেন, ‘অনেকগুলো উদ্ধারকারী দল নিখোঁজ হেলিকপ্টারের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। তবে হেলিকপ্টারটি কোথায় বিধ্বস্ত হয়েছে তা জানতে সময় প্রয়োজন। কারণ, সেখানে আবহাওয়া পরিস্থিতি খুবই বৈরী। বৃষ্টির পাশাপাশি তীব্র কুয়াশাও রয়েছে। এতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।’
উদ্ধার অভিযানে যুক্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে ৪০টি উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারকারীদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ও ড্রোনও রয়েছে। জরুরি সেবা বিভাগের কর্মী, পুলিশ ও ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও তল্লাশি অভিযানে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি।
রোববার (১৯ মে) ইরানের পূর্ব আজারাবাইজান প্রদেশে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারটিতে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রাহমাতিসহ আরো কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ওয়াহিদি জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথভাবে একটি বাঁধ উদ্বোধনের পর তিনি শহরে ফিরছিলেন। এ সময় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে জোলফা এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, হেলিকপ্টারটি গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অবতরণে বাধ্য হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সেখানে এখনও উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি।
তবে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। অন্য দু’টি হেলিকপ্টার কোনো সমস্যা ছাড়াই গন্তব্যে পৌঁছেছে। ঐ দু’টি উড়োজাহাজে কয়েকজন মন্ত্রীসহ পদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন।
ঢাকা মিশন শেষ করতে চলেছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিও মো। শিগগির দেশে ফিরছেন তিনি। ফিরেই তিনি বড় দায়িত্ব পাচ্ছেন এই দূত। এমনটাই জানিয়েছে সেগুনবাগিচা। মিয়ানমারের বিদায়ী দূত দেশটির পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি (ফরেন সেক্রেটারি) হতে পারেন বলে ধারণা দেয়া হয়েছে। রোববার তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ সেরেছেন। বিদায় বেলা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যথাসাধ্য ইতিবাচক ভুমিকা রাখবেন বলে অঙ্গীকার করে গেছেন। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজ গ্রামে পুনর্বাসনের যে দাবি তা পূরণে নীতিগতভাবে তিনি সম্মত বলে জানিয়ে গেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকারসহ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই চলমান পরিস্থিতির একমাত্র সমাধান বলে রাষ্ট্রদূতকে সাফ জানিয়েছেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রাষ্ট্রদূতকে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছর উগান্ডায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু করতে চান বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি অন্ততপক্ষে শুরু করার মধ্যদিয়ে মিয়ানমার তাদের সদিচ্ছার স্বাক্ষর রাখতে পারে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জবাবে রাষ্ট্রদূত অং কিও মো মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের সেনাবাহিনী ও বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর চলমান সশস্ত্র সংঘাতকে এ ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে বর্ণনা করেন। তবে তার দেশ এ বিষয়ে আরও সচেষ্ট হবে বলেও আশ্বাস দেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয় ছাড়াও বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা দিকে আলোকপাত করেন তারা। উল্লেখ্য, মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে দূত সেগুনবাগিচায় মিডিয়াকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখে দ্রুত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় খানিকটা দৌড়ে গাড়িতে চড়ে বসেন তিনি।
ভারত ও চীনকে যুক্ত করা গেলে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান আসবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিকে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা সংকট গুরুতর আঞ্চলিক সংকটে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সংকটের মূল আরও অনেক গভীরে যেতে পারে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা জরুরি। এটাই একমাত্র স্থায়ী সমাধান। মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত ও চীনের ভূমিকা অত্যন্ত মুখ্য। তাদের যদি আমরা এই বিষয়ে আরও বেশি করে যুক্ত করতে পারি, তাহলে আমি বিশ্বাস করি এই সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে। ওভারসিস করেসপন্ডেন্টস্ বাংলাদেশ (ওকাব) ‘রোহিঙ্গা সংকট: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করেছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেখানে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক পথ অবলম্বন করছে। একইসঙ্গে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে গেছি। আমরা গাম্বিয়া ও ওআইসি’র মাধ্যমে আইসিজেতে মামলা করেছি। সেই মামলায় এখন পর্যন্ত যে আউটকাম এসেছে, সেটি আমাদের পক্ষে। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত এই মামলার ইতিবাচক ফলাফল আসবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আইসিজের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক চাপ মিয়ানমারের ওপর পড়বে।
আমরা ক্রমাগতভাবে চেষ্টা করেছি আন্তর্জাতিকভাবে যেসব দেশের প্রভাব মিয়ানমারের ওপর আছে, তাদের এই বিষয়ে যুক্ত করার। কয়েক দিন আগে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। তার সঙ্গেও রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রত্যাবাসনই যে রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান সেটি পুনরুল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ দিতে বলেছে। ক্যাম্পে তারা কিছু কাজ করছে। কিন্তু তাদের পুরোপুরি জীবিকা নির্বাহের নিশ্চয়তা আমরা কীভাবে দিবো? রোহিঙ্গাদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করা সমাধান নয়। একমাত্র সমাধান হচ্ছে সব অধিকারসহ তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত বছর রোহিঙ্গাদের ফান্ডিং অনেক কমে গেছে। আগে মাথাপিছু ১২ ডলার ছিল, যা গত বছর ৮ ডলারে নেমে যায়। এ বছর ১০ ডলারের বেশি হতে পারে। গত বছর ইউক্রেন-রাশিয়া ও গাজা-ইসরাইল যুদ্ধের কারণে ফান্ডিং কমে গিয়েছিল। এ বছর আমাদের চেষ্টায় ফান্ডিং মাথাপিছু ১০ ডলারের ওপরে যাবে। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে মানবিক দিক ও প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে জোরারোপ করেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট এখনো বিশ্বব্যাপী একটি বড় সমস্যা। এই সংকটের আরও অনেক গভীরে যেতে হবে। যতদিন যাবে এই সমস্যার গভীরতা আরও বাড়বে। তাই শান্তিপূর্ণ উপায়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এর সমাধানে আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে একযোগে উদ্যোগী হতে হবে। প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ওকাবের সেমিনার তথা আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওকাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য ফরিদ আহমেদ। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অব্যাহত অবস্থান বাংলাদেশের অর্থনীতি, জীববৈচিত্র্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলছে। রোহিঙ্গারা মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান, সন্ত্রাসী তৎপরতা, পাচারের মতো অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। অনেকে মানবপাচারকারীদের শিকার হচ্ছে এবং ক্যাম্প থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে ভ্রমণের চেষ্টা করছে। এমনকি বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও এনআইডি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
রোহিঙ্গারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংখ্যার দিক থেকে বাঙালিরাই এখন উখিয়ায় সংখ্যালঘু। সেখান থেকে তারা (রোহিঙ্গা) শুধু টেকনাফ কক্সবাজার নয়, সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ক্যাম্পগুলোতে আরসাসহ (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যক্রম বাড়ছে কিনা তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, শুরুর দিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক যে সমর্থন ছিল তা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, গাজা-ইসরাইল যুদ্ধের কারণে রোহিঙ্গা সংকট বিশ্বব্যাপী অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। ওকাবের সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ডিক্যাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব প্রমুখ। আলোচনা শেষে উপস্থিত অতিথিরা ওকাব সদস্যদের সঙ্গে সংগঠনের ৪৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে কেক কাটায় অংশ নেন।
কিরগিজস্তানের বিশকেকে গত ১৭ মে রাতের সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা উজবেকিস্তানে আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। একইসঙ্গে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রে অধ্যয়নরত আমাদের শিক্ষার্থীদের ও কিরগিজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগে রয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কোনো গুরুতর আহত বা হতাহতের খবর নেই। দূতাবাস ইতোমধ্যেই তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি জরুরি যোগাযোগ নম্বর শেয়ার করেছে, যাতে এই বিষয়ে যে কোনো সমস্যার জন্য শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করতে পারেন।’
‘দূতাবাসের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ সমন্বয় করছে। আমরা ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। তাসখন্দে অবস্থানরত আমাদের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সুস্থতা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শিগগির বিশকেক সফরে যেতে বলা হয়েছে’, এতে যোগ করা হয়।
Leave a Reply