শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

ভুলে যাওয়া যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করে দিচ্ছে তরুণ বিদ্রোহীরা

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪, ১০.০৭ এএম

কোয়েন্টিন সমারভিল

নিজের সমান আকৃতির দু’টো বিশাল স্পিকার বহন করে পাথুরে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে যান বহনকারী। প্রায় ৮০০ মিটার নীচে পাসাং শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মিয়ানমারের সেনা ঘাঁটি।

সেদিনের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। কিন্তু সেই তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে আরও কিছু তরুণ যোদ্ধা বাঁশের খুঁটিতে করে বড় ও ভারী ব্যাটারি প্যাক ও অ্যামপ্লিফায়ার পরিবহন করছিলেন। সেই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন প্রাক্তন সেনা ক্যাপ্টেন নে মায়ো জিন। তিনি ১২ বছর সেনাবাহিনীতে ছিলেন।

গাঢ় সবুজ রঙ্গের ক্যামোফ্লেজ জ্যাকেটটিকে এক কাঁধে জড়িয়ে মঞ্চে ওঠেন তিনি। নিচের ঘাঁটিতে থাকা ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর প্রতি অনুগত সৈন্যদেরকে পক্ষ পরিবর্তনের অনুরোধ করা তার মূল লক্ষ্য।

মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলের কারেনি রাজ্যের এই গভীর জঙ্গলে দুই দলের মাঝে গত কয়েক দশক ধরে লড়াই চলছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্রোহীরা যে দ্রুতগতিতে সাফল্য পাচ্ছে, তা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে তারা বেশ কিছু দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দেশ এখন একটি জটিল পরিস্থিতির মাঝে রয়েছে। কারণ কয়েক দশকের সামরিক শাসন এবং নৃশংস দমন-পীড়নের পর দেশটির নৃগোষ্ঠী ও তরুণ বিদ্রোহীদের নিয়ে গঠিত নতুন সেনাবাহিনী মিয়ানমারের স্বৈরশাসনকে একটি সংকটের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

গত সাত মাসে দেশটির অর্ধেক থেকে দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে বহু শিশুসহ কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রাক্তন সেনা ক্যাপ্টেন নে মায়ো জিন।

শুধু তাই নয়, সামরিক বাহিনী তার শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এই অবস্থায় বিদ্রোহীদেরকে ব্যর্থ করার জন্য তারা নিয়মিত যুদ্ধবিমান থেকে বেসামরিক মানুষ, স্কুল এবং গির্জায় বোমা বর্ষণ করছে।

নে মায়ো জিন তার সাউন্ড ইকুইপমেন্ট চালু করার আগে নিচ থেকে সেনাবাহিনী তার ওপর গুলি চালায়।

তিনি তখন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে চিৎকার করে সবার উদ্দেশে বলেন, “সবাই যুদ্ধ বন্ধ করুন! দয়া করে যুদ্ধে বিরতি দিন। শুধুমাত্র পাঁচ মিনিট, ১০ মিনিট শুনুন আপনারা।”

কিছুটা আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে তার এই কথা শুনে সেনাবাহিনী থেমে যায়।

এরপর তিনি তাদেরকে মিয়ানমারের উত্তরের শান রাজ্যে বিরোধীদের কাছে আত্মসমর্ণকারী চার হাজার সেনার কথা বলেন এবং দেশটির রাজধানী নেপিডোতে সামরিক ভবনগুলোর ওপর হওয়া সাম্প্রতিক ড্রোন হামলার কথাও উল্লেখ করেন।

মূল বার্তা হলো— আমরা জয়ী হচ্ছি। আপনার শাসনের পতন হচ্ছে। ইস্তফা দেয়ার সময় হয়েছে।

এখানে পাসাং ও কারেনি রাজ্য সহ দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল জুড়ে যুদ্ধ ও অচলাবস্থা চলছে। কারণএমন এক বিদ্রোহ দানা বেঁধেছে, যা সামরিক জান্তার শাসনকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির সামরিক বাহিনী পুনরায় ক্ষমতা দখল করে নেয় এবং তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সুচিকে কারাগারে বন্দি করা হয়।

কেএনডিএফ-এর গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান

তবুও এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্বে তেমন কোনও আলোচনা হচ্ছে না। কারণ বিশ্বের সব মনোযোগ এখন ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-গাজা সংঘাতের ওপর।

মিয়ানমারে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বলে কোনও বিষয় নেই। বিদেশি সাংবাদিকরা সেখানে সরকারিভাবে প্রবেশ করতে পারে না বললেই চলে এবং যদি কেউ যায়, তাহলে তাদেরকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়। সরকার যেসব ক্ষেত্রে অনুমতি দেয়, সেসব ক্ষেত্রে বিদ্রোহীদের বিষয়গুলো শোনার উপায় নেই।

আমরা মিয়ানমারে ভ্রমণ করেছি এবং দেশের পূর্বদিকে অবস্থিত থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী কারেন্নি রাজ্য এবং চীনের সীমান্তবর্তী শান রাজ্য জুড়ে লড়াইকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে এক মাস থেকেছি।

আমরা সেখানে জঙ্গলের পেছনের রাস্তা দিয়ে গিয়েছি। কারণ সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কয়েক সপ্তাহ ধরে সামরিক বাহিনী তা ঘিরে রেখেছে।

আসলে এটি এমন একটি যুদ্ধ, যা শুধুমাত্র আদর্শিক জায়গায় সীমাবদ্ধ নেই। এটি একটি প্রজন্মের যুদ্ধ। তরুণরা এসট্যাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে। তারা পুরাতন কঠোর আদেশ থেকে মুক্তির জন্য লড়াই করছে। এই তরুণদের কেউ কেউ ব্যর্থ বিপ্লবের গল্প শুনেছে এবং কেউ কেউ আবার বিপ্লবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২২ বছর বয়সী ন্যাম রি

সামরিক শাসনের অর্থ শতাব্দী পর ২০১৫ সালে মিয়ানমার সু চি এবং তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির অধীনে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছিলো।

অনেক তরুণ-তরুণীদের জন্য সেই বছরগুলো স্বাধীনতার একটি অতি সংক্ষিপ্ত যুগ।

কিন্তু পরবর্তীতে অনেককে হত্যা ও গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখন যারা লড়াই করছে, তাদের অনেকেই বলেছে যে অস্ত্র হাতে নেওয়া ছাড়া তাদের হাতে আর কোনও বিকল্প নেই।

হাজার হাজার মানুষ তাদের পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারকে বিসর্জন দিয়েছেন। ইয়াঙ্গুনের মতো বড় বড় শহরগুলোর অনেক ডাক্তার, গণিতবিদ, মার্শাল আর্ট যোদ্ধা, যারা দীর্ঘকাল ধরে সামরিক শাসনের বিরোধিতা করেছিলো; তারা বিদ্রোহী দলে যোগদান করতে শহর ছেড়ে পালিয়েছে।

এই ফ্রন্টের সব যোদ্ধার বয়স ২৫ বছরেরও কম।

কারেন্নি ন্যাশনালিটিস ডিফেন্স ফোর্স, সংক্ষেপে কেএনডিএফ-এর ২২ বছর বয়সী ন্যাম রি ব্যাখ্যা করেছেন যে কেন তিনি প্রতিরোধে তথা বিদ্রোহী দলে যোগ দিয়েছেন।

“কুকুরগুলো [কুকুর শব্দটি সাধারণত সামরিক বাহিনীকে অপমান করার জন্য বলা হয়] অন্যায় করেছে। তারা বেআইনি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। আমরা, তরুণরা এতে অসন্তুষ্ট,” তিনি বলেন।

কেএনডিএফ হলো তরুণ যোদ্ধা এবং কমান্ডারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নতুন বাহিনী, যারা অভ্যুত্থানের পরে সামনে এসেছিলো। কারেন্নি বা কায়াহ রাজ্য জুড়ে গত কয়েক দশক ধরে নৃগোষ্ঠীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে। কেএনডিএফ তাদেরকে ঐক্য ও যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্য এনে দিয়েছে।

গত বছরের ২৭শে অক্টোবর যখন মিয়ানমার সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জোয়ার ওঠে। তারপর থেকে দেশজুড়ে কয়েক ডজন শহর সেনা বিরোধীদের হাতে চলে গেছে। দেশটির প্রধান শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ এখনও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতেই আছে। তবে তারা গ্রাম ও সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।

২২ বছর বয়সী ন্যাম রি

কেএনডিএফ বলে, তারা ও অন্যান্য বিদ্রোহী দলগুলো কারেন্নি রাজ্যের ৯০ শতাংশ এলাকা দখল করছে। হতে পারে এটি মিয়ানমারের ছোট একটি রাজ্য, কিন্তু এটিই এখন প্রতিরোধের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

বিদ্রোহী দল কেএনডিএফ-এর ডেপুটি কমান্ডার মাউই ফো থাইকে সর্বপ্রথম বন্দুক হাতে তুলে নেন আজ থেকে তিন বছর আগে। থাইকে একজন পরিবেশবিদ, যিনি পড়াশুনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

তিনি মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেন না। তিনি বলেন যে সামরিক জান্তা দেশটির অনেক নৃগোষ্ঠীর নীপিড়ক।

তিনি বলেন, পুরো দেশ এখন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

“কৌশল পরিবর্তন হচ্ছে। সমস্ত আক্রমণ এখন সমন্বিত,” তিনি বলেন।

কেএনডিএফ-এর কোনও যোদ্ধার অভাব নেই। কিন্তু গোলাবারুদ ও অস্ত্রের সরবরাহ খুবই কম। বেশিরভাগ আক্রমণই প্রবাসীদের অনুদানের অর্থায়নে করা হচ্ছে।

মাউই আরও বলেন, “আমাদের যথেষ্ট সাহস আছে, আমাদের মনোবল আছে, আমাদের যথেষ্ট মানবতা আছে। এইভাবেই আমরা তাদেরকে পরাজিত করার পথে হাঁটছি।”

মিয়ানমারে প্রবেশ করা মানে কেবল ভুলে যাওয়া একটি যুদ্ধ না, বরং বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দেশে যাত্রা করা। কারেন্নি রাজ্যের বেশিরভাগ মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেনাবাহিনীর অবশিষ্ট ঘাঁটিগুলো রাজ্যের প্রধান সড়কগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।

পাসাং থেকে ডেমোসো’র দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। কিন্তু ময়লার ট্রাককে পেছনে ফেলে পাহাড়, নদী ও উপত্যকার মধ্য দিয়ে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে গেছে।

ডেপুটি কমান্ডার মাউই ফো থাইকে

নিকটবর্তী শহর মোয়েবেতে অবস্থিত একটি সামরিক ঘাঁটিতে আমরা একটি ব্যর্থ হামলার পর পৌঁছেছিলাম, সেখানে বিদ্রোহী দলের ২৭ জন সদস্য নিহত হয়েছিলো।

জঙ্গলের একটি হাসপাতালের নোংরা মেঝেতে পাতা বিছানায় কেএনডিএফ-এর তরুণ যোদ্ধারা শুয়ে ছিল। তারা হাসছিলো এবং থাম্বস আপ দিচ্ছিলো। তাদের বেশিরভাগই শরীরের অঙ্গ হারিয়েছেন।

২৩ বছর বয়সী অং এংল, একটি হামলার পর যিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। তারা বাম পা ভয়ানকভাবে ফুলে গেছে। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতেও তিনি ছিলেন না। তারপরও কথা বলতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেললেন। তখন তার পাশে থাকা তিনজন সহযোদ্ধা তাকে ধরে রাখে এবং সান্ত্বনা দেয়।

তারা আর অপারেশনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। অং-কে তো উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যেতে হবে। আমি চিকিৎসকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম যে তিনি বাঁচবেন কি না। “সুস্থ হয়ে যাবে সে। কিন্তু আমার ধারণা, এই মূহূর্তে ও হতাশ। এটা ভেবে যে ও আর যুদ্ধ করতে পারবে না।”

যুদ্ধের এক ধরনের ধীরগতির হিংস্রতা আছে। আমরা যখন শান রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে সিহসেং শহরের দিকে যাত্রা করি, তখন আমরা নিজেরাই তা দেখেছিলাম। সেখানে একটি পাল্টা আক্রমণ চলছিলো, কারণ সেনাবাহিনী লোইকাওয়ের একটি রুট দখল করার চেষ্টা করছিলো। যদিও সেটি নিয়ে এখনও দুই দলের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।

ডেপুটি কমান্ডার মাউই ফো থাইকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তরুণদের।

এটি তাদের রাজ্য নয়। কিন্তু তারপরও এটির দায়িত্বে আছে কেএনডিএফ। এখানকার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে দারথাওর নামক একজনের মাধ্যমে। অনেকের মতো তিনিও পূর্বের হামলায় আহত হয়েছেন। তার টি-শার্টের বাহুর নিচ থেকে একটি গাঢ় লাল রঙের দাগ স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে।

“আমাদের কাছে এই জায়গাটি রক্ষা করা আমাদের বাড়ি রক্ষা করার মতো,” তিনি আমাকে বলেন।

আমরা একটি কলাবাগানের ধারে নিচু পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন তিনি মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরের সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলো দেখান। আশেপাশে থেকে শেল ছোড়া হচ্ছিলো, যা গড়িয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ছিলো। মর্টারের মতো শেলগুলো ধেয়ে আসছিলো। খুব কাছাকাছি কোনো জায়গা থেকে স্বয়ংক্রিয় বন্ধুকযুদ্ধের আওয়াজ আসছিলো।

এরপর এটি খুব দ্রুত স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে একটি সৈন্যদল মাইনফিল্ড দিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছিলো। আমরা দ্রুত সেখান থেকে সরে যাই। শেল বর্ষণের মাঝেই দ্রুত গাড়ি চালাই। এসময় একটি মর্টার শেল এসে গাড়ির ঠিক সামনের রাস্তায় এসে আঘাত করে।

“তাদের সৈন্যরা আহত হয়েছে, তাই তারা এলোমেলোভাবে সর্বত্র গুলি করছে,” দারথাওর ব্যাখ্যা করেন।

২৩ বছর বয়সী অং এংল, একটি হামলার পর যিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।

জঙ্গলে অনুষ্ঠিত একটি গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে নতুন যোদ্ধারা কেএনডিএফ নেতাকে স্যালুট জানায়। নতুন যোগদান করা সদস্যের সংখ্যা ৫০০ জনেরও বেশি।

আগেরবার আমি যখন কেএনডিএফ-এর যোদ্ধাদের দেখেছিলাম, তখন তারা বাঁশের তৈরি বন্ধুক দিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলো। কিন্তু এখন তাদের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য আসল জিনিস আছে।

তাদের কমান্ডার মাউই আমায় বলেন যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য খুব বেশি সময় হাতে নেই। “আমরা এক মাসের নিবিড় প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছি, তারপর আমরা যুদ্ধে যাবো।”

এই বিদ্রোহ কোন দিকে নিয়ে যাবে, তা অনুমান করা কঠিন। তবে উভয় পক্ষের জন্য এটি অস্তিত্বের জন্য লড়াই। এবং, এটি ক্রমবর্ধমান রক্তপাত ও তিক্ততার দ্বারা চিহ্নিত। ফিরে যাওয়ার পথ নেই।

সাড়ে তিন সপ্তাহ পরে আমরা পাসাং ফিরে এসেছি। যে সেনাঘাঁটিতে বিদ্রোহীরা আক্রমণ করেছিলো, আমি চলে আসার সময়ও সেটি সেখানেই ছিল।

সামরিক বাহিনী শক্তিবৃদ্ধির জন্য প্রায় ১০০ জনকে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধে ৫৭ জন আটক হয়েছিলো, বাকিরা আহত বা নিহত হয়েছিলো।

সেনাবাহিনী ঘাঁটিতে পুনরায় সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছিলো। কিন্তু বিরোধী দলের সাথে সংঘর্ষের অন্য পরিণতি হয়েছিলো। সশস্ত্র বিপ্লবীদের গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেছে। তারা আর আক্রমণ করতে পারেনি।

আমরা পৌঁছানোর আগের দিন সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো থেকে পাহাড়ের ওপর গোলাবর্ষণ করা হয়েছিলো। আগে আমরা যাদের সাথে দেখা করেছিলাম, তাদের তিনজন ওই গোলাগুলিতে নিহত এবং ১০ জন আহত হয়।

বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024