নিজস্ব প্রতিবেদক
তখন নদী থেকে পাঁচ মাইল দূরে সমুদ্র।প্রতিটি জোয়ারে সমুদ্র থেকে নোনাপানি বয়ে নিয়ে আসতো। নিচু জমিতে উচু ঢিবি তৈরি করা হতো। ঢিবির উপর থেকে তিন ফুট নিচে গোল করে একটি গর্ত রাখা হতো। ঢিবির সেই গর্তটি কাদামাটিরহতো ।একটি বাঁশের মধ্যে ছিদ্র করে ঢিবির গর্তের মধ্য তাক করিয়ে নামিয়ে দেওয়া হতো। যাতে বাঁশের ভেতরের মধ্যকার তরল কাদামাটি দিয়ে ঘের হয়ে থাকে। এই ঘের মূলত ঢিবির গর্তের নিচে তৈরি করা হয়ে থাকে। যখন ভাটা শেষ হয়ে যায় তখন জোয়ারে বয়ে আনা নোনাপানি পুরোপুরি উপচে পড়ে তখন ওই সমস্ত জমির মাটি লবণে পরিণত হয়। লবণ চাষীরা ওই মাটির ওপরেরচেছে নিয়ে এসে উচি ঢিবি কাছে নিয়ে এসে জড়ো করে রাখতো। ঢিবির নিচে গোল গর্তের লতা ঘাস ও লতাপাতা দিয়ে ছাওয়া থাকতো। যাতে সেদিক দিয়ে শুধু পানি বের হতে পারে। লবণ চাষীরা লবণের সেই উচু মাটি গুলো দিয়ে গর্তটি ভরে ফেলতো। সেই গর্তে লবণের পানি ঢেলে দেওয়া হয়। মাটির লবণ তরল হয়ে বাঁশের ছিদ্র দিয়ে তৈরি করা ঘেরের মধ্য ঘন হয়ে জমতো । সেই ঘন দ্রবণ কে মাটির চুলায় জাল দিয়ে লবণ তৈরি করতো লবণ চাষীরা।
গোল গর্তে পাত্র রেখে সেই গর্তকেই চুলা হিসেবে ব্যবহার করতো।সেখানেই ঘন দ্রবণ জাল দেওয়া হতো।
নোয়াখালি জেলাতে এক হাজার ছয়শো পাত্রওয়ালা চুল্লি ছিলো। পাত্রের নিচে আগুন জ্বালানো হতো। পাত্রে লবণের দ্রবণ বাষ্পভূত হওয়া শুরু করলে লবণের ঘন দ্রবণ পাত্রে ঢালা হতো। যাতে পাত্রে লবণ শুকিয়ে না যায়।
একজন লবণ শ্রমিক রাখা হতো- যার কাজ হল যেসব পাত্র ভরাট হয়ে গেছে সেগুলো থেকে নারিকেলের খোলা দিয়ে শুকাতে থাকা পাত্রে লবণের দ্রবণ গুলো রাখা।
পাত্রে ৭-৮ দিন পর্যন্ত দিন রাত জাল দেওয়া হতো। এই পদ্ধতিতে নোয়াখালিতে লবণ তৈরি করা হত।
তথ্য সূত্র: ফ্রান্সিস বুকানন ডায়েরি
Leave a Reply