সারাক্ষণ ডেস্ক
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় খুন হওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও উদ্বেগজনক। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের একজন আইনপ্রণেতার খুনের ঘটনা এই প্রথম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ভাষ্য অনুযায়ী, আনোয়ারুল আজীমের খুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত এবং খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিক।
আনোয়ারুল আজীমের খুনের বিষয়ে যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে, তা ক্রাইম থ্রিলারের কাহিনিকেও হার মানায়। গোয়েন্দা বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, আখতারুজ্জামান নামের একজন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক মাস আগে এই হত্যার পরিকল্পনা করেন, যিনি আনোয়ারুল আজীমের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার। ব্যবসার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
১২ মে আনোয়ারুল আজীম চিকিৎসার জন্য সড়কপথে কলকাতা যান এবং এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন। ১৩ মে তিনি চিকিৎসার কথা বলে ওই বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। তাঁর ফোনটিও বন্ধ ছিল। ঢাকার ডিবি পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে, যাঁরা হত্যাকাণ্ড শেষে ঢাকায় ফেরেন। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, আখতারুজ্জামান কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করেন এবং সেখানে কৌশলে আনোয়ারুল আজীমকে নিয়ে ভাড়াটে লোক দিয়ে হত্যা করেন।
আনোয়ারুল আজীমের রাজনৈতিক ঠিকুজি খুঁজতে গেলে দেখা যায়, ১৯৮৮ সালে এক বিএনপি নেতার মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন তিনি। ১৯৯২ সালে কালীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পরে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন। তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি মামলা ছিল। ২০০৭ সালে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করেছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সব মামলা প্রত্যাহার করা হয় এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আনোয়ারুল আজীমের বিরুদ্ধে যেসব মামলা ছিল, তার সব কটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলার সুযোগ নেই। একজন আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসার যে অভিযোগ এসেছে, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা আনোয়ারুল আজীম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সেই সঙ্গে তিনি কী কারণে খুন হলেন, সে রহস্যও ভেদ করা জরুরি।
আনোয়ারুল আজীমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো কি যথাযথভাবে তদন্ত হয়েছিল? যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল, তাঁকে আইনের মুখোমুখি না করা আইনের শাসনের লক্ষণ নয়। তিনি বিএনপি থেকে ক্ষমতাসীন দলে যোগ না দিলে এসব মামলা প্রত্যাহার হয়ে যেত? বাস্তবতা হলো রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার ও শাস্তি মওকুফের বহু নজির আছে।
সরকারের নীতিনির্ধারকেরা চরমপন্থী নির্মূল করার দাবি করেছিলেন। তাঁদের দাবি যে সর্বাংশে সত্য নয়, আনোয়ারুল আজীমের হত্যার ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে চরমপন্থী দলের সাবেক নেতা শিমুল ভূঁইয়া রয়েছেন, যিনি নিজেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ বলে পরিচয় দিয়েছেন। এই নামে তিনি পাসপোর্ট বানিয়েছেন এবং একই নামে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেছেন।
আনোয়ারুল আজীম হত্যার ঘটনা কেবল ক্ষমতাসীন দল নয়, দেশকেও অনেকগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। খুনিরা নাম বদলিয়ে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে নির্বিঘ্নে দেশের বাইরে গেছেন এবং হত্যামিশন শেষ করে দেশেও ফিরে এসেছেন। তাহলে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা কোথায়? ক্ষমতার রাজনীতির সঙ্গে ভয়াবহ অপরাধপ্রবণতার যুক্ততার যে অভিযোগ আছে, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে সেটাই নতুন করে উন্মোচিত হলো।
দেশের শিল্প খাতে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহার বাড়ছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না থাকার কারণেই মূলত বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজিতে ঝুঁকছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। উৎপাদন ঠিক রাখতে বর্তমানে বস্ত্র, সিরামিক, এগ্রো ও ওষুধ শিল্পের মতো অনেক খাতে এলপিজি ব্যবহার হচ্ছে। তবে কাঁচামাল আমদানি ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিরাজমান ডলার সংকট এলপিজির বাজার প্রসারে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিল্পোদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলপিজি খাতের কাঁচামাল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় মূলধনি যন্ত্রপাতির (ক্যাপিটাল মেশিনারিজ) পুরোটাই আমদানিনির্ভর। ডলার সংকটের কারণে এসব পণ্য আমদানিতে যথাসময়ে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, পণ্য দেশে আসার পরও এলসির দায় নিষ্পত্তি করতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। পণ্য খালাসে গুনতে হচ্ছে জরিমানাও।
প্রোপেন ও বিউটেনের সংমিশ্রণে তৈরি হয় এলপিজি। জ্বালানি পণ্যটি আমদানিনির্ভর। এলপিজি বাজারজাতে ট্যাংক, ভ্যাপোরাইজার, ভালভ, রেগুলেটর ও প্রেসার মিটারসহ নানা যন্ত্রাংশও আমদানি করতে হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব পণ্য আমদানি করতে গিয়ে তারা চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছেন না। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় তারা ‘ডেফার্ট পেমেন্ট সিস্টেমেও’ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এলপিজির বাজারে।
বাজারে এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব অনুযায়ী, দেশে এলপিজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১৪ লাখ টন। এর সিংহভাগ ব্যবহার হয় আবাসিক খাতে। তবে শিল্প খাতেও ব্যবহার বাড়ছে। বর্তমানে শিল্পে বার্ষিক এলপিজির চাহিদা ১ লাখ ৮০ হাজার টনের মতো। যেসব খাতে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে, তার মধ্যে অন্তত ১০টিতে এলপিজির ব্যবহার বাড়ছে। এ তালিকায় রয়েছে নিট কম্পোজিট ফ্যাক্টরি, ডায়িং, স্পিনিং, প্যাকেজিং, সিরামিক, এগ্রো, বেভারেজ, ফিড, ফার্মাসিউটিক্যালস ও এসফল্ট প্লান্ট। এসব খাতে এলপিজি সরবরাহ করছে অন্তত ১০টি কোম্পানি। এগুলোর মধ্যে অনেক কোম্পানি এলপিজির কারিগরি ব্যবস্থা প্রতিস্থাপনেও কাজ করছে।
শিল্প-মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবাসিক খাতে সবচেয়ে বেশি এলপিজি সরবরাহ করে বসুন্ধরা গ্রুপ। তবে শিল্প খাতে সবচেয়ে বেশি সরবরাহ করে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। তারা মাসে চার-পাঁচ হাজার টন সরবরাহ করে। বসুন্ধরা ও ব্রাদার্স এলপিজি সরবরাহ করে তিন-চার হাজার টন করে। এর বাইরে বিএম এনার্জি এক থেকে দেড় হাজার টন, জেএমআই এক থেকে দেড় হাজার টন, যমুনা এক হাজার টন এবং ফ্রেশ এলপিজি ও ওরিয়ন ৩০০-৪০০ টন এলপিজি সরবরাহ করে। তবে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড দাবি করেছে, শিল্প খাতে তাদের গ্যাসের চাহিদা ১৮-২০ হাজার টন।
শিল্পে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বাড়াতে নানা ধরনের প্রযুক্তি ও কারিগরি সিস্টেমের পাশাপাশি প্রোপেনচালিত জেনারেটর নিয়ে কাজ করছে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। কোম্পানিটি মনে করে, এলপি গ্যাস আবাসিক খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। শিল্পেও বড় ধরনের চাহিদা তৈরি করতে পারে।
শিল্পে এলপিজির ব্যবহার সম্পর্কে জেএমআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বণিক বার্তাকে বলেন, “‘দেশের শিল্পের বিকাশে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতে আমরা এলপিজি অপারেটররা কাজ করে যাচ্ছি। দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ সংকটের জুতসই সমাধান এলপিজি। এর সম্ভাবনাও অযুত। তবে এলপিজি যেহেতু আমদানিনির্ভর ব্যবসা এবং এ ব্যবসায় অনেক অর্থের জোগান থাকতে হয়, তাই সরকারের যথাযথ নীতিসহায়তা ছাড়া বেসরকারি খাতের পক্ষে এর প্রসারে কাজ করা দুঃসাধ্য।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জ্বালানির প্রায় সব খাতে ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকলেও এলপিজিতে আমরা বেসরকারি খাত কোনো ভর্তুকি পাই না। উল্টো নানা সংকটের মধ্য দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আমি সরকারকে অনুরোধ করে বলব, আমাদের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে না পারলেও অন্তত সহজ শর্তে ঋণ, কম হারে ভ্যাট প্রয়োগ এবং সর্বোপরি কম দরে ডলার সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’”
ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তানজিম চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শিল্পে এলপি গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। যদিও মার্কেট এখন একটু ধীরগতিতে এগোচ্ছে। বেশ কয়েকটি কারণও রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো ডলার সংকট। শিল্প খাতে যারা এলপি গ্যাস সরবরাহ করে, তারা কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খুলতে পারছে না। মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতেও জটিলতা রয়েছে। এসব সংকট দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারলে শিল্প খাতে বড় ধরনের চাহিদা তৈরি করা যাবে।’
বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের প্রধান মো. রেদোয়ানুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে শিল্প খাতে এলপিজির ব্যবহার ৩ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। গত দুই বছরের তথ্য বলছে, এ খাতে প্রবৃদ্ধি ২০০ শতাংশের বেশি। এখন শিল্প খাতে বছরে প্রায় তিন লাখ টন এলপিজি সরবরাহ হচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরে এটি দ্বিগুণ হতে পারে। তাই আমি মনে করি শিল্প খাতে এলপিজির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’
দেশে প্রাকৃতিক গাসের সরবরাহ সংকটের ফলে শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে গ্যাসের প্রয়োজনীয় জোগান দিতে পারছে না সরকার। নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বলে জানান শিল্পমালিকরা। অনেকে কারখানার নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ বাড়াতে এলপিজি সিস্টেম গড়ে তুলছেন। তবে প্রাকৃতিক গ্যাসের কাছাকাছি দাম আনা গেলে শিল্প খাতে এলপিজির চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ানো যেতে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
এলপিজি সরবরাহকারীরা বলছেন, আমদানি শুল্ক ও মূসক কমানো গেলে এ খাতে সাশ্রয়ী মূল্যে এলপিজি সরবরাহ সম্ভব।
দেশের শিল্প খাতে এলপিজির কারিগরি সিস্টেম প্রতিস্থাপন ও সরবরাহ নিয়ে কাজ করছে ব্রাদার্স এলপিজি লিমিটেড। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সাদ্দাম হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আবাসিক খাতের মতো শিল্প খাতে এলপি গ্যাস ব্যবহারে বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এ বাজার প্রসারিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আমদানিতে চাহিদা অনুযায়ী ডলার না পাওয়া।’
তিনি বলেন, ‘এলপি গ্যাসের ক্যাপিটাল মেশিনারিজ পুরোটাই আমদানিনির্ভর। ডলার সংকটের কারণে ঠিকমতো ঋণপত্র (এলসি) খোলা যায় না। আবার ঠিক সময়ে এলসি সেটলমেন্ট না হওয়ায় পণ্য বন্দরে আটকে থাকলে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। এসব প্রতিবন্ধকতা কাটানো গেলে এ খাতেও বড় বাজার তৈরি করা যাবে।’
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) জেনারেল সেক্রেটারি ইরফান উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বেশি মূল্য দিয়েও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছে না সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি। কারখানা চালাতে অনেকেই এখন এলপিজি সংযোগ নিচ্ছেন। প্রাকৃতিক গ্যাসের তুলনায় এতে খরচ বেশি। কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি পাওয়ার ক্ষেত্রে এলপিজি নির্ভরযোগ্য। তবে এখানে কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে বড় বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্গে মূল্যের ব্যবধান কমে এলে এলপিজির বাজার আরো বড় হতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আরও ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যারা মানুষের ক্ষতি করবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে এবং কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসংযোগ যেন কেউ না করতে পারে। এটা যারা করবে তাদের কোন ছাড় নেই। যতই মুরুব্বি ধরুক আর যাই করুক এদের আমরা ছাড়ব না, এটা পরিষ্কার কথা। মানুষের ক্ষতি যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, দুর্নীতিবাজরা তার করে দেওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে বিদেশে বসে রোজই আন্দোলন, সরকার উৎখাতসহ নানারকম হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।
‘যতক্ষণ জনগণ আমাদের সাথে, আমি পরোয়া করি না,’ বলেন তিনি।
তিনি বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ১৪ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটা আমাদের সবসময় লক্ষ্য রাখতে ও বুঝতে হবে যে, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ছাড়া দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ হবে না।
তিনি বলেন, এখানে আমাদের একটা চিন্তা করতে হবে আমরা যারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি তারা সুসংগঠিত হয়ে জনগণের কাছে গিয়ে তাদের এই চেতনায় যুক্ত করতে আনতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস বিকৃতির চক্রান্ত মোকাবিলা করে তার সরকার জয় বাংলা শ্লোগান আবার ফিরিয়ে এনেছে, জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্প্রচার নিষিদ্ধ ছিল, তা এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিলে স্থান করে নিয়েছে, অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটাকে আর কেউ পিছিয়ে দিতে যেন না পারে। আর পারবেও না কারণ জনগণই আমাদের শক্তি।
দেউলিয়া হয়ে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম সিফুড রেস্তোরা চেইন রেড লবস্টার। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছে সংস্থাটি। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারার ব্যর্থতা এবং ঋণের বিশাল বোঝার চাপে শেষ পর্যন্ত ব্যবসাই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
মধ্যবিত্ত মার্কিনিদের হাতে সুলভ দামে সাগরের সুস্বাদু গলদা চিংড়ি তুলে দেওয়ার জন্য বিখ্যাত ছিল রেড লবস্টার। ধীরে ধীরে এটি হয়ে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিফুড রেস্তোরাঁ চেইন। কিন্তু হঠাৎ খেই হারায় তারা। নানা কারণে বাড়তে থাকে লোকসান। একে একে বন্ধ হতে থাকে বিভিন্ন শাখা। এর পরও চেষ্টা করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পারল না, শেষ পর্যন্ত ব্যবসাই গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংস্থাটি।
একটি ভুল সিদ্ধান্ত
রেড লবস্টারের একটি বাত্সরিক সীমিত সময়ের মেন্যু ছিল এন্ডলেস শ্রিম্প। প্রায় ২০ বছর ধরে এ নিয়মে ব্যবসা করেছে তারা। কিন্তু এতে বাগড়া দেয় রেড লবস্টারের সবচেয়ে বড় অংশীদার থাই ইউনিয়ন। ব্যাংককভিত্তিক ক্যানড সিফুড কোম্পানিটি রেড লবস্টারের অত্যন্ত জনপ্রিয় এন্ডলেস শ্রিম্প মেন্যু কাজে লাগিয়ে নিজেদের ধরা বিপুল পরিমাণ চিংড়ি বিক্রির চেষ্টা করে। ২০২০ সালে রেড লবস্টারের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার হয়ে ওঠে থাই ইউনিয়ন। ফলে তাদের কথা ফেলতে পারেনি রেড লবস্টার কর্তৃপক্ষ। গত বছর ২০ ডলারের এন্ডলেস শ্রিম্প নিয়মিত মেন্যুতে পরিণত করে রেড লবস্টার। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের কারণে পাক্বা ১ কোটি ১০ লাখ ডলার গচ্চা যায় রেড লবস্টারের। গত ১৯ মে যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছে সংস্থাটি।
Leave a Reply