রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন

ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপের সংখ্যা কমছে, বাড়ছে তীব্রতা

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪, ১০.১১ এএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলর একটি শিরোনাম  “ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপের সংখ্যা কমছে, বাড়ছে তীব্রতা”

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা কমছে। এই সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টিও আগের চেয়ে কমেছে। ১৯৪৮ থেকে সর্বশেষ ২০২৩ সাল পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

আবহাওয়া ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য সাগরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগরেও তাপমাত্রা বাড়ছে। এর ফলে ঘূর্ণিঝড়গুলো হয়তো তীব্র হচ্ছে। কিন্তু এর সংখ্যা কমছে। এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠেরও তাপমাত্রা সমানভাবে বৃদ্ধির ফলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সহায়ক পরিবেশে বিঘ্ন ঘটছে। নিম্নচাপ ও এর ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়লে উপকূল শুধু নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কৃষি, পরিবেশ ও অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে।

ঘূর্ণিঝড় নিয়ে গবেষণা করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। তিনি ১৯৪৮ থেকে ২০২৩ সাল অর্থাৎ মোট ৭৫ বছরের বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং নিম্নচাপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেই অনুযায়ী, ৭৫ বছরে বঙ্গোপসাগরে ১৫১টি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘূর্ণিঝড় হয়েছে নভেম্বর মাসে—৫১টি। এরপরই বেশি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে মে মাসে—৩০টি। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে অক্টোবর মাসে—২৯টি।

 

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “বৈশ্বিক সমুদ্র বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে”

সমুদ্র বাণিজ্যে সাধারণত গ্রীষ্মের শেষ থেকে শরৎকালকে পিক সিজন ধরা হয়। এ সময় দুটি উৎসবকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোয় পণ্য সরবরাহ বাড়ে। এ দুটি উৎসব হলো নভেম্বরের ব্ল্যাক ফ্রাইডে ও পরবর্তী মাসের বড়দিন। কিন্তু লোহিত সাগরের সংঘাতের অনিশ্চয়তা ঘিরে এবারের আন্তর্জাতিক নৌ-বাণিজ্যে পিক সিজন শুরু হয়েছে বেশ আগে। এ কারণে সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহনে খরচও বেড়েছে তুলনামূলক বেশি। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

দূরপ্রাচ্য ও উত্তর ইউরোপের মধ্যে পণ্যবাহী ৪০ ফুট কনটেইনার বাবদ গড় খরচ গত সপ্তাহে ৪ হাজার ৩৪৩ ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি বলে জানিয়েছে পণ্যবাহী জাহাজের তথ্য বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান জেনেটা।

 

 

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের অস্তিত্ব থাকতে পারে না: সৌদি”

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্থাপন না করার কথা আগেই জানিয়েছে সৌদি আরব। এবার মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সম্পদশালী ও প্রভাবশালী এই দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলও থাকতে পারে না। একই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব। এদিকে রাফাহ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছে।

সোমবার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, ব্রাসেলসে আরব ও ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন-ফারহান জানান, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র না থাকলে ইসরায়েলেরও অস্তিত্ব থাকতে পারে না। তিনি বলেন, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের মাধ্যমে তারা যে নিরাপত্তা চায় সেটি ইসরায়েল স্বীকার করে না—যা খুবই উদ্বেগের বিষয়। সৌদি আরবের শীর্ষ এই কূটনীতিক সাংবাদিকদের বলেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছাড়া ইসরায়েলেরও অস্তিত্ব থাকতে পারে না এবং এটা সম্পূর্ণরূপে মেনে নেওয়াই প্রয়োজন ইসরায়েলের।’

 সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন-ফারহান আরো বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই নিরাপত্তা পাবে ইসরায়েল। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, ইসরায়েলের নেতারা বিষয়টি বুঝতে পারবেন যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে কাজ করাটা তাদের স্বার্থেই ভালো। আর সেটি শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করাই নয়, বরং ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্থাপন করবে না বলে জানিয়েছিল সৌদি আরব।

সৌদি প্রেস এজেন্সির বিবৃতিতে সেসময় বলা হয়, ১৯৬৭ সালে সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক হবে না বলে সৌদি আরব বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং অবরুদ্ধ এলাকা থেকে সকল রকমের ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রত্যাহার করতে হবে। মূলত গাজা ভূখণ্ডের পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যত্ স্বাধীন রাষ্ট্রের মূল অংশ হিসেবে চায়। এছাড়া ফিলিস্তিনিরা ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরের পূর্ব অংশকে নিজেদের ভবিষ্যত্ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখে থাকে।

 

The Daily Star বাংলার একটি শিরোনাম “সম্পদ জব্দের পর কী করবেন বেনজীর?”

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার অনুসন্ধান চলাকালেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সাবেক পুলিশপ্রধানসহ তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ জব্দ (ক্রোক) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশও দেওয়া হয়েছে।

এই আদেশে জব্দ হওয়ার পর বেনজীরের সম্পদ বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যে অবস্থায় আছে সে অবস্থাতেই থাকবে। তিনি এগুলোর মালিকানা বদল, হস্তান্তর কিংবা বিক্রি করতে পারবেন না।

প্রশ্ন হলো—এখন বেনজীর আহমেদ কি সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ ঠেকাতে আদালতে যাবেন? তার কি সেই সুযোগ আছে? এর পরবর্তী প্রক্রিয়াটাই বা কী?

বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঙ্গে।

এ ব্যাপারে শাহদীন মালিক বলছেন, ‘এটা (মামলা হওয়ার আগেই সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন) দুদক আইনেই আছে। দুদক যদি মনে করে যে অভিযুক্ত ব্যক্তি দুর্নীতি করে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে দেবে, তাহলে দুদক এই আবেদন করতে পারে।

‘বিচারে তিনি (বেনজীর আহমেদ) যদি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে তো তার কারাদণ্ডের শাস্তি হবে। পাশাপাশি এই সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে চলে যাবে। রাষ্ট্র এই সম্পত্তির মালিক হবে। যাতে সে এগুলো ট্রান্সফার করতে না পারে, দোষী সাব্যস্ত হলে সরকার যাতে এগুলো বাজেয়াপ্ত করতে পারে এ জন্যই ফ্রিজ করে রাখা।’

অভিযোগের ব্যাপারে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর মামলা হবে বলে জানান ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের এই আইনের শিক্ষক। এরপর তদন্ত শেষে চার্জশিট পাওয়ার পর আদালত অভিযোগ গঠন করবেন। এর মাধ্যমে শুরু হবে বিচারিক প্রক্রিয়া।

‘দুদক আইনে দুর্নীতির জন্য কারাদণ্ডের পাশাপাশি বাজেয়াপ্তকরণ অন্যতম প্রচলিত শাস্তি’—মন্তব্য করে শাহদীন মালিক বলেন, ‘পুরো বিচারিক প্রক্রিয়া এক বছরের বেশি হওয়া উচিত না। আর বিচারিক কাজ ছয় মাসের মধ্যেই শুরু করতে পারার কথা। যেহেতু সব ডকুমেন্টারি এভিডেন্স।’

বিচারে শাস্তি হয়ে গেলে সাবেক আইজিপি আদালতের আদেশে সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।

তবে শুরুর পর্যায়ে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পত্তি জব্দ ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার যে আদেশ দিলেন আদালত, তার বিরুদ্ধেও আদালতে আবেদন করার সুযোগ আছে বেনজীর আহমেদের।

এ কথা জানিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এই আবেদন করতে হবে বিচারিক আদালতের সম্পত্তি জব্দের সিদ্ধান্ত আসার পর ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে। ওই আবেদনের ভিত্তিতে আদালত যে আদেশ দেবেন, তাতে সন্তুষ্ট না হলে তিনি পরে উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন।

এই আইনজীবীর ভাষ্য, ‘এটাকে বলা হয় আগাম ক্রোক। ধরা যাক একটা বিদেশি জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে কেউ টাকা পান। এক্ষেত্রে জাহাজটি যদি ক্রোক না করা হয় তাহলে তো সেটা চলে যেতে পারে। মালিকানা হস্তান্তর হতে পারে। এটা যদি হয়েই যায় তাহলে তো নতুন মালিককে অপরাধী হিসেবে ধরা যাবে না। ওটা ফেরতও আনা যাবে না। এ কারণেই আগাম ক্রোকের আবেদন করা হয়।’

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বেনজীর আহমেদ এবং স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি জব্দ (ক্রোক) এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে তাদের নামে থাকা ৩৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন।

পরে গত রোববার একই আদালত থেকে বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা আরও ১১৩টি দলিলের সম্পদ এবং গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট জব্দ (ক্রোক) করার আদেশ আসে।

বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিপুল সম্পত্তি অর্জনের বিষয়ে সম্প্রতি দুই পর্বে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন (সাবেক আইজিপির অপকর্ম-১ ও ২) প্রকাশ করে কালের কণ্ঠ। পরে ২২ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের যেসব অভিযোগ এসেছে, তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

এরপর ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক আদেশে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অগ্রগতির বিষয়টি হলফনামা আকারে দুই মাস পর জানাতে দুদককে নির্দেশ দেন।

সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের এই উদ্যোগকে ‘খানিকটা ব্যতিক্রমী’ বলে অভিহিত করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘দুদকের দিক থেকে এই উদ্যোগটা খানিকটা ব্যতিক্রমী বলতে হবে। দুদক সাধারণত বলে থাকে—কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে দুদক স্বপ্রণোদিত হয়েই কাজটি করেছে। এটা আইনগতভাবেই তাদের এখতিয়ারে আছে।’

বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলোকে ‘বহুল আলোচিত, বিকট, অবিশ্বাস্য ও দুর্নীতির উৎকট প্রকাশ’ হিসেবেও অভিহিত করেন ইফতেখারুজ্জামান। এজন্যই হয়তো দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের ধারণা, ‘প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যের সাপেক্ষে সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবের বিষয়গুলো যত দূর আলোচনায় এসেছে তাতে তারা (দুদক) হয়তো মনে করেছে এগুলো পাচার কিংবা হস্তান্তরের ঝুঁকি থাকতে পারে। বিশেষ করে অভিযুক্ত ব্যক্তি যেহেতু অত্যন্ত প্রভাবশালী। দুটি বাহিনীর শীর্ষ পদে তিনি ছিলেন। এর বাইরেও তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্যও ব্যাপক আলোচিত। এসব কারণেই হয়তো দুদক তার সম্পত্তি জব্দের আবেদন করেছে।’

পুরো বিষয়টাকে এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে দেখলেও শঙ্কার কথাও জানান টিআইবি নির্বাহী পরিচালক। বলেন, ‘এটা যেহেতেু ব্যতিক্রমী উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি, এক্ষেত্রে সত্যিকারের জবাবদিহি নিশ্চিত হবে কিনা, দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে কিনা সে ব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যায়। আবার আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবেই এমন তৎপরতা দেখানো হচ্ছে কিনা তা নিয়েও সংশয় জাগে। এমন যদি হয়ে যায় তাহলে মানুষের মনে প্রচণ্ড হতাশা তৈরি হবে।’

আর যদি সুনির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া মেনে শেষ পর্যন্ত সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, তাহলে রাষ্ট্রীয় ও সরকারিভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা যে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আছে তাদের কাছেও শক্ত বার্তা যাবে বলেও মনে করেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘দৃষ্টান্ত স্থাপন করলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের কাছে অন্তত এই বার্তা পৌঁছাবে যে এসব অপরাধ করে পার যাওয়া যায় না। বিচার একদিন হবেই। এই বার্তাটা আমাদের সমাজে নেই বললেই চলে। কাজেই দুদক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য এটা সুযোগ।’

বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় র‌্যাবের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এই বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। যার মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল। যুক্তরাষ্ট্র যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন বেনজীর আহমেদ।

ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক এই পুলিশপ্রধান ২০২২ সালে কর্মজীবনে শুদ্ধাচার চর্চার জন্য শুদ্ধাচার পুরষ্কারও পান। ওই বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থাপ্রধানদের ভেতর থেকে তাকেই এ পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।

পরের বছর অবসরে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানে এক দিনে চারটি ফ্ল্যাট কেনেন বেনজীর। ফ্ল্যাটগুলোর মোট আয়তন ৯ হাজার ১৯২ বর্গফুট। দাম দেখানো হয় মাত্র ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

গত রোববার ওই চারটি ফ্ল্যাটও জব্দের আদেশ দেন আদালত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024