মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার বিবর্তন

  • Update Time : সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪, ৮.০৫ পিএম

শশাঙ্ক সাদী

বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকীতে আমরা যদি পেছনে ফিরে তাকাই তাহলে দেখি যে স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের গঠন-পুনর্গঠনের সাথে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর রয়েছে এক গভীর যোগাযোগ ও অন্তরীণ সম্পর্ক। সংক্ষিপ্তভাবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে এনজিও বলেই আমরা সম্বোধন করে থাকি। আবার দেশের সব জায়গাতে এনজিও না বলে সংস্থার নামে বা তার সংক্ষিপ্ত নামেই চেনে সেখানকার মানুষেরা যেমন ব্র্যাক, আশা, এসো দেশ গড়ি, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট, জীবিকা, জিইউকে, এসডিও, আরডিআরএস, এসকেএস, এমএমএস, এসডিএস, রূপান্তর, সুশীলন, উত্তরণ, সিডিডি, জাগরণী চক্র, আমরা কাজ করি, ব্যুরো বাংলাদেশ, এসএসএস, আভাস, বাপা, বেলা, বিটা, কোডেক, আরআরএস এমন তিন হাজারের কাছাকাছি নাম। এদের কোনোটা গ্রাম বা ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সম্প্রসারিত হয়েছে দেশের প্রায় সব উপজেলাতেই। কেউ কেউ রয়ে গেছে তার জেলার সীমানায়। আবার কেউ কেউ রয়ে গেছে একেবারে আঁতুরঘরেই, কোনো রকমে টিকে আছে। আর অনেকগুলোই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে, শুধু নামে মাত্র আছে পরিসংখ্যানের খাতায়। কয়েকটি সংস্থা আবার দেশের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে চলে গেছে অন্যান্য দেশেও যার মধ্যে ব্র্যাক ও আশা অন্যতম।

আজ ফিরে তাকাবার এই সময়ে এনজিও নিয়ে খুব বেশি বিচার-বিশ্লেষণ করার চাইতে তুলে ধরতে চাই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর তার পরিপ্রেক্ষিতে দু-একটা কথা। স্কুলজীবনের শেষ সময় থেকে এনজিও সম্পর্কে আগ্রহ আসে বিভিন্ন লেখা পড়ে। আশির দশকে সমতা-র খাসজমি আন্দোলনের খবর বা দক্ষিণের জলাবদ্ধতা রাজনীতি প্রতিরোধের গল্প মনে অন্য এক দ্যোতনা তৈরি করে। সমাজ পরিবর্তনের ভাবনা মনে তৈরি হওয়ার সময়টাতে অন্যতম সহায়ক শক্তি মনে হয় এনজিওগুলোকে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সুযোগ মিলে গেলে খণ্ডকালীন কাজ করা শুরু করি এনজিওর গবেষণাগুলোতে। কখনো গাড়ি গোনার কাজ, কখনো অভিবাসী নারী ও পুরুষ শ্রমজীবীদের ওপর গবেষণার কাজ। আবার সমাজবিজ্ঞানের বই খোঁজার উছিলায় দেখা মেলে জাতিসংঘ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার জ্ঞান কর্মকাণ্ডে সহায়তা দেবার প্রকল্পের। তখন মনে হয়, উন্নয়ন ভাবনা ও প্রক্রিয়া তো এমনি হওয়া উচিত, তাহলেই তো তা টেকসই হবে। আর সে- সময়টাতে যাদের সাথে পরিচয় হয়, কাছে যাবার সুযোগ হয়, তাদের মনে হয় অনেক বেশি মাটির কাছাকাছি ও সাধারণ মানুষের কাছাকাছি মানুষ, মনে হয় স্বপ্নালু মানুষ, আর নিজেও নিজেকে সেই স্বপ্নের একটা অংশ বলেই ভাবতে থাকি।

বাংলাদেশে যেসব এনজিও বা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কাজ করছে তাদের আমরা মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি- আন্তর্জাতিক, জাতীয় এবং স্থানীয়। জাতীয় ও স্থানীয় এনজিওগুলো বাংলাদেশেই গঠিত হয়েছে এদেশের রাষ্ট্রীয় নীতিমালা অনুযায়ী। কাজের পরিধি বিবেচনা করে এ-ধরনের বিভাজন টানা হয়। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকেই বাংলাদেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাজ শুরু। তার আগেও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাজকর্ম ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। তবে তাদের কাজকর্ম সীমাবদ্ধ ছিল মূলত সমুদ্র-তীরবর্তী অঞ্চলে দুর্যোগোত্তর ত্রাণকাজের মধ্যে। স্বাধীনতাযুদ্ধের ঠিক পরের সময়, অর্থাৎ ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে পুরোদমে কাজ শুরু করে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। অক্সফাম, কারিতাস তাদের মধ্যে অন্যতম। সে-সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন বুকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শোষণহীনতা, সমতা এবং সমৃদ্ধির মন্ত্রে দীক্ষিত একঝাঁক তরুণ-তরুণী গড়ে তোলেন বাংলাদেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ব্র্যাক (যদিও ব্র্যাকের নাম শুরুতে এবং কিছুদিন আগে পর্যন্ত আরো লম্বা ছিল)। এ-দুটো সংস্থা প্রায় একসাথে কাজ শুরু করলেও গণস্বাস্থ্য বেশ পরে নিবন্ধিত হয় আর ব্র্যাক বাংলাদেশে নিবন্ধিত দুই নম্বর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (জাতীয় সংস্থাগুলোর মধ্যে প্রথম) আর আমাদের অনেক গর্বের। তবে পুরো সত্তরের দশকজুড়ে এনজিও বলতে মূলত মানুষ বুঝত বিদেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাকেই। সে-সময় থেকেই এদেশে এনজিও নামটা মানুষের মনে দাগ কাটতে শুরু করে কারণ বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন-প্রচেষ্টার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি কৃষি উপকরণ সহায়তা, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ, বন্যা প্রতিরোধক বাঁধ নির্মাণ থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতাল নির্মাণ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থাসহ বহু ধরনের সহায়তা দেয়ার কাজ করেছে নিরলসভাবে। শুরুর দিকে এনজিও কর্মকাণ্ডের মূল ক্ষেত্র ছিল হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা, নবজাতকের স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য, শিক্ষা উপকরণ ও পরিধেয় কাপড় বিতরণ এবং সম্পদের হস্তান্তর (গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি)। ধীরে ধীরে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নেয় এনজিওগুলো। নারীর স্বাস্থ্য ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার জন্য তারা শিক্ষিত নারীদের মাঠ ও অফিস পর্যায়ে নিয়োগ দেয়া শুরু করে। একই সাথে আবার অনেক আন্তর্জাতিক এনজিওর বিভিন্ন অঞ্চলে উৎসাহী ও কর্মউদ্দীপনা মানুষদের সহায়তা করেছে স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা তৈরি করার জন্য। সেই উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে সত্তর দশকের শেষ থেকে, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আজো দেখা যায়।

আশির দশক থেকে এনজিওগুলো শুধু সম্পদের হস্তান্তর বা প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে থেমে থাকেনি। তাদের কাজের বিষয় ও ধরন বদলেছে বিভিন্নভাবে। জন্ম নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে লিঙ্গসমতা, শিশু বিকাশ, সংক্রামক রোগের বিস্তার নিরোধ, পুষ্টি- জ্ঞান, অভিবাসন, স্থানান্তর, বাস্তুচ্যুতি, নগর ও গ্রাম উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সুপেয় পানি সরবরাহ, শৌচাগার নির্মাণ ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক সচেতনতা তৈরি, আয়মূলক কাজের জন্য প্রশিক্ষণ, জীবিকার উন্নয়ন, কৃষি সম্প্রসারণে সহায়তা, এমনকি দেশের বিভিন্ন নীতিমালা তৈরি ও আইনকে সময়োপযোগী করার জন্য অ্যাডভোকেসি ও ক্যাম্পেইন করাসহ আরো বহু কাজের মধ্যে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে এনজিওগুলো। এসব কাজের সাথে সম্পৃক্ত করার আগে বিষয় নির্ধারণ, পর্যাপ্ত গবেষণা করা ও কৌশলপত্র তৈরি করে তারপর কাজে হাত দিয়েছে এনজিওগুলো। আবার কাজ করতে করতে কৌশলপত্র ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়াকে অনেক এনজিও বেছে নিয়েছে সে-সময়। ফলে জনগণের সম্পৃক্ততা বেড়েছে, ক্ষমতায়ন তৈরি হয়েছে।

এনজিও মানে মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল একটি অন্যরকম চিত্র। যারা সহায়তা পেতেন তাদের কাছে এনজিও ছিল সততা, বৈষম্যহীনতা, দ্রুত কাজ করার, গুগত উৎকৃষ্টতা ও স্বচ্ছতার প্রতিচ্ছবি। কোনো কাজ এনজিও করছে মানেই তারা মনে করতেন যে, কাজের মান অনেক ভালো হবে, কেউ টাকাপয়সা মারবে না। আবার যারা এনজিওতে কাজ করতে আসতেন তারাও ঠিক একইভাবে ভাবতেন যে, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য এড়িয়ে অর্থাৎ দীর্ঘসূত্রতা না করে গুণগত মান ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করে ফেলতে পারবেন। এঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ ছিলেন যাঁরা সমাজের অসম ব্যবস্থা বদলে দেবার স্বপ্ন দেখতেন, নারী-পুরুষের সমঅধিকার, অংশগ্রহণমূলক ও অংশীদারিত্বমূলক আর্থসামাজিক ব্যবস্থা প্রচলনের ভাবনা ভাবতেন। আবার আরেকদল মানুষের কাছে এনজিও মানে ছিল ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ড, কারণ এনজিওতে ছেলেমেয়েরা একসাথে কাজ করে, অনেক মেয়ের কাজের সুযোগ হয়েছে। তাই তারা বহুভাবে এনজিওর কাজকে ধর্মান্তরিত করার প্রক্রিয়া হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে বহুবার, যা কোথাও কোথাও এখনো শোনা যায়।

কাজের সূত্রে ঘুরেছি বাংলাদেশের উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিমের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম জায়গায়, মৌলিক অধিকারবঞ্চিত চরাঞ্চলে আর উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চলে। দেখেছি অধিকার-সচেতনতামূলক কথামালা বা স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি দেখার সময় উজ্জ্বল হয়ে আসা কিশোরীর চোখ, কান্না-ছলছল নারীর দৃষ্টি, কঠিন হয়ে আসা মধ্যবয়স্ক ও তরুণের চোয়াল আর ক্রুর হয়ে আসা অনেকের মুখ। দেখেছি এনজিওর ভরসায় অসম নীতি বা পুরুষের অত্যাচারের প্রতিবাদে মুখর হাজার হাজার নারী, কিশোরীর দৃপ্ত মিছিল। দেখেছি ঝড়ে-বন্যায় সর্বস্ব হারিয়েও শুধু এনজিওর সহায়তায় ও আশ্বাসে ভাঙা বাঁধে নামমাত্র ছাউনিতে সবলভাবে টিকে থাকা নারী-পুরুষের দল। দেখেছি এনজিওর আর্থিক সহযোগিতায় ও রাজনৈতিক সচেতনতায় চরম দরিদ্র পরিবার থেকে ভোটের লড়াই করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হয়ে যাওয়া।

এনজিওগুলোর কাজ করার পথ বা ধরন যে সবসময় খুব মসৃণ ছিল তা কিন্তু নয়। শুরু থেকেই কোনো না কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্থায় রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ছিল বাধ্যতামূলক। তবে সত্তরের দশকে সুযোগ ছিল বেশ অনেক সংস্থার সাথে রেজিস্ট্রেশন করে কাজ শুরু করার এবং ফান্ড নেয়ার। তার মধ্যে অন্যতম সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইত্যাদি। কিন্তু পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন রিপোর্ট বলে যা সেই সুযোগকে ভালোই অপব্যবহার করা হয়েছে এবং কোনোরকম জবাবদিহিতার বিষয়কে এড়িয়ে গেছে অনেক এনজিও। পরবর্তীকালে যখন বেশ কিছু এনজিওর অপ্রকাশিত সম্পদ ও অর্থ পুঞ্জীভূত করার বিষয়টি সামনে এলো তখন থেকে রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থায় একটি কেন্দ্রীয় পরিবীক্ষণমূলক প্রক্রিয়া আনা হলো। জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতাকে মূলনীতি হিসেবে কাগজে-কলমে রেখে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তৈরি করা হলো এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো, ১৯৯০ সালের মার্চে। একই সাথে বিদেশি অর্থ দেশে এনে এনজিওগুলোর কাজ করার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হলো এনজিও এবি-র রেজিস্ট্রেশনকে। তবে এই পরিবীক্ষণ ভাবনার পেছনে গোপনে হলেও কাজ করেছে তৎকালীন সামরিক সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক মনোভাব। শুরু থেকে এনজিও-ভাবনার মূল তত্ত্ব ছিল যে, এনজিও হচ্ছে অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন। কিন্তু আশির দশকের শুরু থেকে সুশাসনের দাবিতে অ্যাডভোকেসি, বিভিন্ন অসম ও বৈষম্যমূলক আইন পরিবর্তন ও নারী উন্নয়ন নীতিমালা অনুমোদনের দাবিতে ক্যাম্পেইন ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনে সমর্থন দেবার কারণে বেশ কিছু এনজিও সামরিক সরকারের সংস্থাগুলোর কোপানলে পড়ে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল খাসজমির অধিকার আন্দোলন, জলাবদ্ধতা নিরসন আন্দোলন, আদিবাসী অধিকার আন্দোলন ইত্যাদি। আশির দশকের সামরিক সরকাররা প্রাথমিকভাবে এনজিওগুলোর ব্যাপারে

উদার মনোভাব দেখালেও তাদের দেখতে চেয়েছে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক অঙ্গ হিসেবে। তাই ওইসব জনগণের আন্দোলনে এনজিওগুলোর প্রত্যক্ষ সহায়তা ও সহায়ক ভূমিকা পালনে বেশ ক্ষিপ্ত হয় তৎকালীন সামরিক সরকারের সংস্থাগুলো। সামরিক সরকারগুলোর বিভিন্ন বাহিনী নীতিনির্ধারকদের সামনে এনজিওগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অভিযোগ আনে। আর তাই অব্যক্তভাবে এনজিও নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে চলে আসে নিয়ন্ত্রণ-ভাবনা। অন্যদিকে নব্বইয়ের দশকে প্রকাশ পায় রাষ্ট্রবিরোধী বেশকিছু কাজ ও উগ্র ধর্মীয় চরমপন্থামূলক কাজে কয়েকটি এনজিওর অর্থায়নের বিষয়টি। ফলে যুক্তিসঙ্গতভাবে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো শক্ত করার কথা ভাবতে বাধ্য হয় গণতান্ত্রিক সরকারগুলো। এখন দেশি বা বিদেশি যে-কোনো অর্থে কাজ করতে হলেই এনজিও এবি থেকে এনজিওগুলোর রেজিস্ট্রেশন নেয়া বাধ্যতামূলক। এর মাঝে অবশ্য ১৯৯৬ সালে তৈরি গভর্নমেন্ট এনজিও কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল সরকার ও এনজিওগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং যৌথ কাজের একটি অনবদ্য বাতায়ন, যা এখনো চমৎকার ভূমিকা রাখছে। এনজিও এবি-র তথ্যমতে, বাংলাদেশে এখন কাজ করছে ২৬২১টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, যদিও তাদের নিবন্ধন নম্বরের তালিকাতে সবশেষ নম্বরটি আছে ৩১৩১। এদের মধ্যে ২৬৫টি হচ্ছে একেবারে আন্তর্জাতিক এনজিও।

এনজিওগুলোর ওপর যে নিয়ন্ত্রণ তার অনেক দায়ভার আছে তাদেরও। সুশাসন নিয়ে কাজ করেছে অনেক এনজিও, এখনো কেউ কেউ জোরেশোরে করছে। কিন্তু এদের অনেকের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে সুশাসন নেই বললেই চলে। অত্যন্ত একমুখী নেতৃত্ব, অর্থসঞ্চালনসহ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় অস্বচ্ছতা, কর্মী-হয়রানি, যৌন নিপীড়ন ইত্যাদি বহু ধরনের অভিযোগ রয়েছে অনেক এনজিওর বিরুদ্ধে। নেতৃত্বের ক্ষেত্রে একগুঁয়েমি, অগণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বাছাই, নেতৃত্ব তৈরি হতে না দেয়া, নেতৃত্বের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি, অদক্ষতা ইত্যাদির ফলে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে অনেক সংস্থায়। গণসাহায্য সংস্থা, প্রশিকা তার অন্যতম উদাহরণ। কর্মীদের অসন্তোষকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করা বা দাবিয়ে রাখার কৌশল নেবার ফলে এই দুটো এনজিও অনেক অসাধারণ অবদান রাখার পরেও একেবারে ধসে গেছে সাংগঠনিকভাবে। ভাই, বোন, নিজের বউ, ছেলে বা মেয়ে বা মেয়েজামাই বা ছেলের বউকে সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে, এমনকি সর্বোচ্চ পদে বসিয়ে দেবার ঘটনার নজির আছে প্রায় সব সংস্থায়, এবং তা এখনো বিদ্যমান। আবার অনেক এনজিওর বিরুদ্ধে উঠেছে সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হবার অভিযোগ। ফলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ফলে আরো অনেক এনজিও ক্ষতির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে একই কারণে এনজিওগুলোর একতাবদ্ধতার প্লাটফর্ম এডাব হয়ে পড়েছ

টার্গেট। বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে দুর্বল করে দেয়া হয়েছে এডাবকে। অবশ্য এর জন্য এনজিও জগতের নামকরা নেতাদের অন্তর্ষ্য কম ভূমিকা পালন করেনি। শুধু নিজের বা নিজের পছন্দের সংস্থার প্রভাববলয় তৈরি করার জন্য অনেক এনজিও নেতা বিভেদ ও শাসনের কৌশল বেছে নিয়েছেন। তাতে করে কিছু সংস্থা ক্রমশ বড় থেকে বৃহত্তম হয়েছে; কিন্তু এনজিওগুলোর স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রক্রিয়া শুধু ক্ষতিগ্রস্তই হয়নি, বরং সরকারি সংস্থাগুলোর অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

এসবের বাইরেও এনজিওগুলোর আরো নানাবিধ বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে। এদেশের সব এনজিও বিদেশি অর্থ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। তবে যারা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে এগিয়েছে তাদের কথা আলাদা। তারা ক্ষুদ্র ঋণকে কেন্দ্র করে নিজেদের সংস্থার জন্য বেশ ভালো রকমের সম্পদ তৈরি করতে পেরেছে। আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যবস্থার কারণে এই ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসা আরো বহু বছর লাভজনক থাকবে। ক্ষুদ্র ঋণের ধনাত্মক বা ঋণাত্মক দিক নিয়ে আজ আর আলোচনা না-ই বা করলাম। আমাদের আলোচনার আলোকপাত করি অন্য এনজিওর ওপর যারা ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসা করে না, শুধু বিদেশি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশীয় ক্ষেত্র থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কর্মকাণ্ড চালায়। নব্বই দশকের শেষের দিক থেকে বিদেশি অর্থ সহায়তা আসা কমতে থাকে বাংলাদেশে। এর প্রধান কারণ এশিয়ার চাইতে অন্যান্য মহাদেশে দাতা সংস্থাগুলোর দৃষ্টি এবং সেই সাথে অনেক বড় বড় আন্তর্জাতিক এনজিওর সেইসব দেশে কাজের পরিধি বিস্তার। একই সাথে বৈশ্বিক পর্যায়ে অর্থনীতির বেহাল অবস্থা ও ক্রমাগত মন্দার ফলে সহায়তার পরিমাণ বাংলাদেশে কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে এনজিওগুলোর ওপর প্রবলভাবে। কমছে তাদের অর্থ পাবার পথ, কমছে তাদের কাজের পরিধি – দেশি-বিদেশি দু-ধরনের এনজিওর জন্যই একই কথা প্রযোজ্য। এর পাশাপাশি দাতা সংস্থাগুলো এখন সরাসরি সরকারকেই অর্থ সহায়তা দিতে বেশি আগ্রহী, যা তাদের সুদূরপ্রসারী কৌশলের একটা অংশ, কারণ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে, রাষ্ট্রের অর্থ জোগাড় ও জোগানের পরিধি ও পরিমাণ দুটোই বেড়েছে। তাই ভবিষ্যতের ব্যবসার কথা ভেবে সরকারি খাতে অর্থ লগ্নি বা সহায়তা করা বেশি লাভজনক বলে মনে হচ্ছে দাতাদের, যারা একসময় এনজিওগুলোর মাধ্যমেই বেশি অর্থ সহায়তা করত।

বাংলাদেশের উন্নয়নে তথা দরিদ্রতা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এনজিওগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সিপিডির গবেষণায় উঠে এসেছে সেই তথ্য (সিপিডি, ২০১৮)। আগেই বলেছি যে, সেই সাথে খাদ্য নিরাপত্তা তৈরি, হতদরিদ্র মানুষের জন্য জীবিকা ও সম্পদ হস্তান্তরসহ অনেক ক্ষেত্রেই ভূমিকা রয়েছে এনজিওগুলোর। সেই সাথে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অনেক গবেষণাকে মাঠপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং সেগুলোর ব্যাপারে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেছে এনজিওগুলো নিরলসভাবে। এমনকি প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর রসদ সংগ্রহের (সাপ্লাই-চেইন) ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা ও উৎপাদনকারীদের সাথে তাদের যোগাযোগ তৈরির ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছে এনজিওগুলো। প্রাণ, একমি, এসিআই- এর মতো কোম্পানিগুলোর জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের উৎপাদনকারীদের কাছে পৌঁছানো বা সে-সব উৎপাদনকারীর বাজারের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেবার পেছনে বেশ বড় ভূমিকা আছে এনজিওগুলোর। বাংলাদেশে বৈদেশিক অর্থ সহায়তা নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও বেশ ভালো একটা অংশ আছে এনজিওগুলোর। এনজিও এবি-র তথ্যমতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫৭০০ কোটি টাকার বেশি বিদেশি সাহায্য নিয়ে এসেছিল এনজিওগুলো, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছিল ৮০০০ কোটি টাকার মতো (এনজিও এবি, ২০২০)। সুতরাং এনজিওগুলোর ভূমিকা খুব খাটো করে দেখাও সঠিক পন্থা নয়।

তবে একুশ শতকের শুরু থেকে দেখছি ক্রমশ এনজিওগুলোর কাঠামো বদলে যাবার ঘটনা। অনেক বেশি করপোরেট হয়ে ওঠার প্রবণতা, গণমানুষের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার প্রবণতা, টিকে থাকার নামে নানা ব্যবসামূলক কাজে ঝুঁকে পড়া। এনজিওগুলোর সবচেয়ে বড় বাধার জায়গা এখন তাদের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব। সেই সাথে আছে বাংলাদেশের দ্রুত পরিবর্তনশীল সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। এনজিওগুলোকে এখন তিনটি দিকে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে বা হবে একটি হচ্ছে বহির্বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, আরেকটি হচ্ছে দেশের ভেতর পরিবর্তন। আর তৃতীয়টি হচ্ছে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো। অনেক এনজিও এখন তাদের কাজের ধরন পাল্টে নিচ্ছে। তার মধ্যে আছে নেটওয়ার্ক গঠন করে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন এগিয়ে নেয়া, নতুন নতুন বিষয়ে মানুষকে ওয়াকিবহাল করা- সেটা জলবায়ু পরিবর্তন হোক আর খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত হোক আর জীবিকা উন্নয়ন ও হতদরিদ্রতা নিরসনের দিকে ঝুঁকে পড়া হোক। এর পাশাপাশি এনজিওগুলোকে নজর দিতে হবে সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্পগুলোতে, আর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরাসরি পার্টনার হিসেবে ভূমিকা রাখা অর্থাৎ অর্থ সংস্থান দেশের মধ্যে থেকেই বেশি করা। এর জন্য ফিলানথ্রোপিস্ট বা প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর সিএসআর ফান্ডগুলোকে টার্গেট করতে পারে তারা। আর ভাবতে হবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্রে কীভাবে মৌলিক ভূমিকা রাখতে পারে এনজিওগুলো। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উৎপাদনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাবে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে, পরিবর্তন ঘটাবে আর্থ-রাজনৈতিক সম্পর্কগুলোতে।

উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখতে পাই যে, এনজিওগুলোর ভূমিকা সেখানে শেষ তো হয়ইনি বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে। বাংলাদেশেও সেই একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে বলে অনুমান করা যায়। বাংলাদেশের ২০৪১ স্বপ্ন কৌশলে কী ভূমিকা রাখবে তারা সেটাও নির্ধারণ করা জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন গবেষণা খাতে নজর দেয়া এবং গণমানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ানো। সেই সাথে নারী-পুরুষের সমতার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তবে এনজিওগুলো অংশগ্রহণমূলক ও অংশীদারিত্বমূলক আদর্শ কতটুকু ধরে রাখতে পারবে বা আদৌ ধরে রাখতে পারবে কি না সেটাই ভাবার বিষয়।

বি.দ্র. এই লেখার বক্তব্য লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব। এই লেখার সাথে তাঁর কর্ম- সংগঠনের বা বইয়ের সম্পাদনা টিমের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং তাঁর কর্ম- সংগঠনের কোনো বক্তব্যকে প্রতিফলিত করে না।

রেফারেন্স

Abed, H. (2000). Microfinance NGOs in Bangladesh: Growth, impact and challenges. Dhaka: BRAC.

Π Ahsan, A. H. M. K. (2005). Role of NGO’s Micro-credit Programme in Poverty Reduction in Bangladesh: A Study on Some Selected NGOs Pakistan Journal of Social Sciences (Vol. 3).

Bagci, C. (2003). Historical evolution of NGOs: NGO proliferation in the post-Cold War era. Avrupa Gunlugu, 4.

Ball, C., & Dunn, L. L. (1995). Non-Governmental Organisations: Guidelines for good policy and practice: Commonwealth Foundation.

সামাজিক পরিবর্তন ও মুক্তি ৬৭

Bureau, N. http://www.ngoab.gov.bd. A. (2003). Retrieved from

0 Davis, JK (2006) NGOs and Development in Bangladesh: Whose sustainability counts?, in Global Poverty: Sustainable Solutions. Proceedings of the Anti-Poverty Academic Conference with International Participation, Institute for Sustainability and Technology Policy, Murdoch University, Perth.

Devine, J. (2006). NGOs, Politics and Grassroots Mobilisation Evidence from Bangladesh. Journal of South Asian Development, 1(1), 77-99.

Ferdous, T (2011). Study on The Role of NGO in the National Development Of Bangladesh: A Special Focus On Bangladesh Rural Advancement Committee (BRAC). Department Of Public Administration, University Of Dhaka, https://www.academia.edu/16517167/The_Role_of_NGO_in_the_

National Development_of_Bangladesh

Haider, S. K. U. (2011). Genesis and growth of the NGOs: Issues in Bangladesh perspective. International NGO Journal,

6(11), 240-247. Halim, M. A. (1993). Social welfare legislation in

Bangladesh: Oihik.

Haque, M. S. (2004). Governance based on partnership with NGOs: implications for development and empowerment in rural Bangladesh. International Review of Administrative Sciences, 70 (2), 271-290.

Π Haider, Sheikh Kabir Uddin. Genesis and growth of the NGOs: Issues in Bangladesh perspective, International NGO Journal Vol. 6(11), pp. 240-247, November 2011, Available online at http:// www.academicjournals.org/INGOJ, DOI: 10.5897/INGOJ11.025,

Islam, M. S., Ahmed, M. F., & Alam, M. S. (2014). The role of microcredit program on women empowerment: Empirical

evidence from rural Bangladesh. Developing Country Studies, 4(5), 90-97.

D Islam, Md. Shahidul, The NGOs Sector in Bangladesh: Emergence, contribution and Current Debate; January 2016; Advances in Asian Social Science (AASS) 1182 Vol. 7, No. 2, 2016, Pages: 1182-1188, ISSN: 2167-6429 Copyright © World

Science https://www.researchgate.net/publication/316700169. Publisher,

Karim, L. (2001). Politics of the poor? NGOs and grass-roots political mobilization in Bangladesh, PoLAR: Political and Legal Anthropology Review, 24(1), 92-107.

Lewis, D. (2010). Nongovernmental organizations, definition and history International Encyclopedia of Civil Society

(pp. 1056-1062): Springer. Petras, J. (1999). NGOs: In the service of imperialism.

Journal of Contemporary Asia, 29(4), 429-440. Rahman, A. T. R. (1993). Volunteerism and nation- building for Bangladesh: Academic Publishers.

Weisbrod, B. A. (2000). To profit or not to profit: The commercial transformation of the nonprofit sector: Cambridge

University Press.

Zohir, S. (2004). NGO sector in Bangladesh: An overview. Economic and Political Weekly, 4109-4113.

 

লেখক পরিচিতি: শশাঙ্ক সাদী

উন্নয়নকর্মী। বর্তমানে কাজ করছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়। দুই দশকের বেশি সময় ধরে কাজের মধ্যে দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন নিয়ে বিশেষ দক্ষতা তৈরি হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের বাইরে নেপাল, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, উগান্ডা, সিয়েরা লিয়ন, সাউথ সুদান, মিয়ানমারসহ বেশ কয়েকটি দেশে কাজ করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024