শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এ ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মানুষের জন্য ব্র্যাক ও ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১০ কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা

  • Update Time : বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪, ১০.৫৮ পিএম

(মানবিক সঙ্কট মোকাবিলায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান)

সারাক্ষণ ডেস্ক

উপকূলীয় অঞ্চলে বিধ্বংসী চিহ্ন রেখে গেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে এবং আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ঘরবাড়ি। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে মৎস্য, গবাদি পশু এবং ফসলি জমি। খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ব্র্যাকের হিসাবে রেমাল-এর প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে আনুমানিক ১ হাজার ৫শ কোটি টাকা।


ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ত্রাণ সহায়তায় ‘ডাকছে আমার দেশ’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ব্র্যাক পরিবারের পক্ষ থেকে ৭ কোটি টাকা (নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ কোটি টাকা এবং ব্র্যাককর্মীদের ১ দিনের বেতন থেকে ৪ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া সহায়তা হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি ৩ কোটি টাকা প্রদান করেছে। এই ত্রাণ ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ, তাদের ঘরবাড়ি, নিরাপদ পানির উৎস, ল্যাট্রিন পুনর্নির্মাণ এবং জীবনজীবিকার পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, “ঘূর্ণিঝড় রেমাল লাখ লাখ পরিবারকে অসহনীয় দুর্দশায় ফেলেছে। তাদের বাড়িঘর, জমি এবং জীবিকার উৎসে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অবিলম্বে ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন এবং পুনর্নির্মাণ সহায়তা প্রয়োজন। ব্র্যাকের মাঠপর্যায়ের কর্মী, স্বাস্থ্যসেবিকা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করছেন এবং সহমর্মিতার সাথে দুর্গত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য আমাদের নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করছি। কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্রয়োজন অনেক বেশি এবং দরকার সম্মিলিত ও টেকসই প্রচেষ্টা। আমরা সমাজের সহৃদয় ব্যক্তি, বেসরকারি খাতের অংশীদার ও দাতা সংস্থাসহ সমাজের সকল অংশকে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”


বিকাশ-এর মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া যাবে 01730321765 নম্বরে (‘মেক পেমেন্ট’ অপশন ব্যবহার করুন)। ব্র্যাক ব্যাংক 150120-2316474001 অ্যাকাউন্ট, গুলশান-১, গুলশান এভিনিউ, ঢাকা-তেও অনুদানের অর্থ প্রদান করা যাবে। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনুদান প্রদানের অন্যান্য বিকল্প ব্যবস্থা এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত দেয়া আছে: https://www.brac.net/dakcheamardesh/.

ব্র্যাকের প্রাথমিক মূল্যায়নে, ২ হাজার টাকায় (১৭ মার্কিন ডলার সমতুল্য) ৪ জনের একটি পরিবার ২ সপ্তাহের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারবে, ৬০ হাজার টাকায় (৫০৮ মার্কিন ডলার সমতুল্য) একটি বাড়ি পুনর্নির্মাণ করা যাবে, একই পরিমাণ টাকায় (৬০ হাজার টাকা) একটি ক্ষতিগ্রস্ত নলকূপ মেরামত করা যাবে এবং ৪০ হাজার টাকায় (৩৩৯ মার্কিন ডলার সমতুল্য) একটি ল্যাট্রিন পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হুসেইন বলেন, “বিপদে মানুষের পাশে থাকা আমাদের অঙ্গীকার। ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যার্থে এই উদ্যোগ আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্বাসী। ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথভাবে দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকা আমাদের লক্ষ্য।”

ঘূর্ণিঝড় উৎপত্তির শুরু থেকেই ব্র্যাকের পক্ষ থেকে রেমাল-এর গতিপ্রকৃতি ও এর প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সহযোগী সংস্থার সমন্বয়ে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

ত্রাণ সহায়তার জন্য প্রত্যন্ত এলাকার নারী নেতৃত্বাধীন পরিবার, বয়স্ক মানুষ, গর্ভবতী নারী এবং শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ব্র্যাকের মাঠকর্মী, স্বাস্থ্যসেবিকা এবং স্বেচ্ছাসেবকসহ মোট ২৩ হাজার কর্মী ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাসমূহে জরুরি খাবার ও সহায়তা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকার ১ হাজার ৬শ মানুষের কাছে স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জরুরি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024