শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

নীলের বিশ্বায়ন – নীল ও ঔপনিবেশিক বাংলায় গোয়েন্দাগিরি (পর্ব-৩)

  • Update Time : শুক্রবার, ৩১ মে, ২০২৪, ১০.২২ পিএম

পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল

অনুবাদ : ফওজুল করিম

নীল দুনিয়া: বিশ্ব পণ্য হিসাবে নীল

প্রাকৃতিক নীল রঞ্জক পদার্থের স্বাভাবিক সৌন্দর্য মানুষ আবিষ্কার করে লিখিত ইতিহাসের আগো লতাগুল্ম ও বৃক্ষরাজির নীল রঞ্জক পদার্থ নিষ্কাষণের পদ্ধতি ইতিহাসের আগে মারাতারা জায়গায়। প্রাচীনকালে এই প্রক্রিয়ার বিস্তার ঘটে নানান দেশে। এর মধ্যে যুতসই রং হল এক ধরনের পাকা নীল, যা পাওয়া যায় বিভিন্ন উদ্ভিদের পাতায়। এই রঞ্জক পদার্থের নাম হল ইন্ডিগো।

নীলের গাছ বিভিন্ন রকম হলেও নীল রং কিন্তু একই। চীনা ও জাপানীরা ব্যবহার করে একটি বিশেষ বৃদ্ধ পরিবারের পাতা (চীনা ভাষায় একে বলে ‘লিয়াও-লান আর জাপানীরা বলে আই) ইউরোপীয়রা ব্যবহার করে অন্য রকম পাতা (ফরাসীতে বলে ‘ল্যাক্টোরা আর ইংরাজীতে ‘ওয়ার্ড) আবার পশ্চিম আফ্রিকার মানুষ ব্যবহার করে আরেক রকম পাতা (ইয়োরুবা ভাষায় যার নাম এলু) তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নীল রং নিষ্কাষণের জন্য যে যে বৃক্ষ পরিবারের পাতা ব্যবহার করা হয় তা কিন্তু এসব পাতা থেকে ভিন্ন রকম। এ গাছের নাম হল “ইন্ডিগোফেরা”।

এ গাছে উৎপন্ন হয় শুধু উষ্ণ মন্ডলে ও উম-উষ্ণ মন্ডলে। ব্যবসায়িক কাজে যে রকম নীল ব্যবহার হয় তা এই ধরনের গাছ। বিভিন্ন কায়দায় বিভিন্ন রকম গাছ থেকে নীল নিষ্কাষণ করা হলেও তা একই রং “নীল রং থুরিঙ্গীয় খামারের ওয়াড গাছ থেকে আসুক অথবা ভারতের ইন্ডি গোফেরা থেকেই আসুক, বিশেষজ্ঞরাও বলতে পারবেন না যে এ রং অভিন্ন। নীল রং এর সূত্র জাপানী দ্বীপের পলিগোনিয়াম টিংটোরিয়াম-ই হোক অথবা দূরপ্রাচ্যের গ্রামবাসীদের উৎপাদিত একটি বিশেষ বর্গের গাছ থেকেই হোক অথবা পশ্চিম আফ্রিকা থেকেই হোক এ রং এক ও অভিন্ন।”

নীল রং-এর জন্য বহুল ব্যবহৃত যে গাছ (উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের কাছে যা ইন্ডি গোফেরা টিংটোরিয়া এল নামে পরিচিত) সম্ভবতঃ তার জন্ম দক্ষিণ এশিয়াতে। তারপর প্রাচীনকালেই তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও সেখান থেকে আমেরিকায় বিস্তার লাভ করে। দক্ষিণ এশিয়ায় ইন্ডিগোর প্রতিশব্দ হল নীল। বিভিন্ন দেশে নীলের বিস্তার লাভের সঙ্গে সঙ্গে এই নীল শব্দটিও পরিচিত হয়। উদাহরণ স্বরূপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্ডিগো পরিচিত “নীলা” নামে; আরবীতে হল “আন্নীল” আর স্পেনীয় ভাষায় হল “আনীল”। ষোড়শ শতাব্দীর ল্যাটিন আমেরিকার সর্বত্রই শব্দটি এই নামেই পরিচিত হয়, ব্যবসার ক্ষেত্রেও এই একই নাম। ইন্ডিগো শব্দটিও দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024