সারাক্ষণ ডেস্ক
শীতের শেষে সব সময় বেশ ভালোই বৃষ্টি হয়। তবে এবার মাত্র এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। তাও বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল। আর এই বসন্তের শুরুতে কড়া রোদ থাকায় রাস্তায় ধুলোর উৎপাত অনেক বেড়েছে। এবার তো টানা কয়েক মাস তেমনভাবে বৃষ্টিও হয়নি। এই বৃষ্টি না হওয়াই ধুলোর উৎপাত বৃদ্ধির আসল কারণ।
আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ১৯৫ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আমাদের রাজধানী শহরটি।
এখনতো রাস্তায় একটা দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন ধূলিঝড় শুরু হয়ে যায়। এই ধুলো মানুষের কান, নাক, মুখ ও চুলে ঢুকেই ক্ষান্ত হয় না; বাসাবাড়ি, দোকানপাট, যানবাহনের দিকে তাকালেও ধুলোর যে স্তর দেখা যায়, যা অবিশ্বাস্য!
খুব সকালে উঠে আপনি ঢাকায় যে কুয়াশার আস্তরণ দেখতে পান; তাতে কুয়াশা কম, ধুলোর আস্তরণ বেশি- এটাই বলছে গবেষণা রিপোর্ট।
এখন রাজধানীতে ধুলোর উৎপাত যেন অসহনীয়। এ যেন ধুলোর শহর ঢাকা! সবসময় নতুন নতুন দালানকোঠা নির্মাণসহ নানা কারণেই বিভিন্ন বালিকণা বাতাসে মিশে ধুলোতে পরিণত হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, যানবাহনের চাকায় পৃষ্ঠ হয়ে বালিকণা মিহি ধুলোতে পরিণত হয়ে বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে। এসব ধুলো যে স্বাস্থ্যের জন্য কতটা মারাত্মক, তা শুধু বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষজনই উপলিব্ধ করতে পারছে।
রাজধানী ঢাকাতে চব্বিশ ঘণ্টাই মানুষ ও পরিবহন চলাচল করে। এ সময় অনিয়ন্ত্রিত ধুলো পথচারীদের শরীরে প্রবেশ করে নানা রকম রোগের জন্ম দিচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ কারণে হাসপাতালেও রোগির সংখ্যা বাড়ছে। শুধু চলাচলের রাস্তাতেই এসব ধুলো সীমাবদ্ধ থাকছে না। ধুলো তার অবস্থান কতটা জোরালোভাবে তৈরি করে ফেলেছে তা বাসাবাড়ি, অফিস-আদালতের ছাদ ও আসবাবপত্রের দিকে তাকালেও দেখা যায়। এক দিন আসবাবপত্র পরিষ্কার না করলে পরের দিন ধুলোর কারণে তা আর ব্যবহার উপযোগী থাকছে না।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ঢাকা শহরের পরেই আছে ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর। যথাক্রমে ২৭৩ ও ১৮৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে। ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫০ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
গত ২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
Leave a Reply