শিবলী আহম্মেদ সুজন
ঢাকা শহরের মানুষ যখন রাতে ঘুমাচ্ছে। তখন নির্ঘুম চোখে জানালা দিয়ে আকাশের পানে তাঁকিয়ে মনে করছে ছেলেটি শৈশবের সেইদিনগুলোর কথা।স্কুলের বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি ও আড্ডা।বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়া। কতই না সুন্দর ছিল। ইস!আবার যদি ফিরে পাওয়া যেত সেদিনগুলি তাহলে কতই না ভালো হত।
সরকারী তিতুমীর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র রাব্বী। ২২ বছর বয়সী। ২০২১ সালে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় সরকারি তিতুমীর কলেজে মার্কেটিং বিভাগে পড়ালেখা করার জন্য এসেছিল রাব্বী।
সিরাজগঞ্জ সদরের মিরপুর গ্রামে বসবাস করত রাব্বী। পরিবারে তিন ভাই-বোনের মধ্য রাব্বী সবার বড়।গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে আসাটা রাব্বীর জন্য খুব একটা সহজ ছিল না। শুরুতে রাব্বীর বাবা-মা পরিবারের বড় ছেলেকে দূরে লেখাপড়া করার জন্য পাঠাতে রাজি না হলেও পরবর্তীতে ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা ঢাকা শহরে ছেলেকে পড়াশোনা করার জন্য পাঠিয়ে দেন।
ঢাকার শহরে আসবে লেখাপড়া করতে এই ভেবে রাব্বী মনে মনে খুব খুশি তো হয় কিন্তু ঢাকা শহরে টিকে থাকা যে কতটা কষ্টকর এটা হয়তো রাব্বীর জানা ছিল না। আর না জানাটাই স্বাভাবিক। রাব্বী লোকের মুখে শুনেছে ঢাকায় টাকা উড়ে। ঢাকার মানুষ অনেক সুন্দর জীবনযাপন করে।
এতোদিন রাব্বী ঢাকা নিয়ে যে চিন্তা-ভাবনা করত। ঢাকায় আসার পর তা যেন একনিমিষেই বদলে যায়। শহরের কোলাহল,যানযট,গাড়ির হর্ণের শব্দে রাব্বীর মনে হচ্ছিল এ কোন চিড়িয়াখানায় এসে আটকা পড়ে গেলাম।
ইট পাথরের নগরী ঢাকা।শহরের পরিবেশের সাথে রাব্বী মোটেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিল না।কারণ ঢাকা শহরের পরিবেশ ও গ্রামের পরিবেশ দুটোই আলাদা।গ্রাম গাছ-গাছালি দিয়ে ঘেরা।গ্রামে নেই কোন কোলাহল,নেই যানজট, নেই গাড়ির প্রচন্ড হর্ণের শব্দ।গ্রামের প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য দেখে যেন মন জুঁড়িয়ে যায়।
কাঁদিয়ানি মসজিদের পাশের বিল্ডিং এর ৫ তলার রুমের জানালা দিয়ে আকাশের পানে তাকিয়ে শৈশবের কথা ভাবতে গিয়ে কখন যে ভোর হয়ে গেছে রাব্বী বুঝতেই পারেনি।মসজিদে ফজরের আজানের আহ্বানে রাব্বীর ঘোর কেটেছে।
Leave a Reply