জাফর আলম
কক্সবাজারের উখিয়ায় সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন (আরসা)’র শীর্ষ ৫ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র্যাব। এ সময় ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি দেশীয় তৈরী এলজি, ১টি ওয়ানশুটার গান, ১০ রাউন্ড কার্তুজ, ২ কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য, ৩ টি মোবাইল ফোন ও নগদ আড়াই হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
আটকরা হলেন, উখিয়ার ৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. শহিদুল ইসলাম প্রকাশ মৌলভী অলি আকিজ, ৬ নম্বর ক্যাম্পের মো. ফয়সাল প্রকাশ মাস্টার ফয়সেল, ২০ নম্বর ক্যাম্পের হাফেজ ফয়জুর রহমান, ৮ নম্বর ক্যাম্পের মো. সালাম প্রকাশ মাস্টার সালাম, ২২ নম্বর ক্যাম্পের মো. জুবায়ের। আটকদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. শহিদুল ইসলাম প্রকাশ মৌলভী অলি আকিজ বহুল আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ, সেভেন মার্ডার ও গোয়েন্দা সংস্থা’র কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জরিত। সে হত্যা, অস্ত্র, অপহরণ’সহ ২১টির অধিক মামলা আসামি বলে জানিয়েছেন র্যাব।
আজ দুপুরে র্যাব ১৫ এর কক্সবাজার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন। এর আগে রবিবার মধ্যরাতে উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি পরিত্যক্ত ঘরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে ৪ নম্বর ক্যাম্পের একটি পরিত্যাক্ত ঘরে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৌলভী আকিজ’সহ ৮/১০ জন আরসা সদস্য সেখানে গোপন বৈঠকে ছিলেন। অভিযানে অস্ত্রসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে ওস্তাদ খালেদের নির্দেশে মৌলভী আকিজ রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহকে নির্মমভাবে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল। তাছাড়া মতাদর্শিক দ্বন্দ্বে সংঘঠিত চাঞ্চল্যকর সেভেন মার্ডারেও আকিজ সরাসরি অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও ২০২২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় আরসা সন্ত্রাসীদের হামলায় গোয়েন্দা সংস্থার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিহত হন। উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও সে সরাসরি জড়িত ছিল।
তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় ১৩টি হত্যা, ১টি অস্ত্র, ২টি অপহরণ, ২টি এসল্ট, ১টি ডাকাতি এবং বিস্ফোরক আইনে ১টি মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে সর্বমোট ২১টি মামলা রয়েছে। আটক অপর ৪ জনও আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।আটকদের নামে মামলা দিয়ে তাদের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এই অধিনায়ক। এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে আরসা শীর্ষ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে ২০২৩ সালে ৬৪ জন এবং ২০২৪ সালে ২০ জন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
এর জের ধরে র্যাব অভিযান চালিয়ে ১১২ জন আরসা শীর্ষ সন্ত্রাসীকে আটক করতে সক্ষম হয়। র্যাবের অভিযানে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরী হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৪টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৬৮ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৪টি আইডি ও ৪৮টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।
Leave a Reply