শিবলী আহম্মেদ সুজন
ছোটবেলা থেকেই ডায়েরিতে লেখালিখির অভ্যাস ছিল মেয়েটির।নিজের সাথে ঘটে যাওয়া মজার ঘটনাগুলো ডায়েরিতে লিখত সে।পড়ার টেবিলে বসে ডায়েরিতে লিখতে শুরু করল মেয়েটি, আর মাত্র কয়েকটাদিন বাকি এইচ এস সি পরীক্ষার, অথচ মনে হচ্ছে এইতো সেদিন হোস্টেলে এসে উঠলাম।
পরিবারের ছোট মেয়ে মীম। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার রাঘববাড়িয়া গ্রামে বসবাস করত। সে ছোটবেলা থেকেই খুবই শান্ত স্বভাবের একটি মেয়ে। মীম ২০২২ সালে এস এস সি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৪৪ পেয়েছিল।উল্লাপাড়ার এইচ.টি .ইমাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের মানবিক শাখায় ভর্তি হয় মীম। তার গ্রাম থেকে কলেজ দূরে হওয়ায় কলেজের পাশেই একটি হোস্টেলে এসে উঠেছিল মীম।
বাবা-মায়ের কাছে থেকে দূরে কখনই থাকেনি সে। হোস্টেলের রুমটিতে তিনটি চকি ও তিনটি পড়ার টেবিল রয়েছে। হোস্টেলের পরিবেশের সাথে একেবারেই নতুন মীম। কারণ মাকে ছাড়া কখনো একা থাকেনি সে। মীমের বাবা চাকুরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। বছর দু’এক আগে মীমের বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তাই মায়ের সাথে বাড়িতে থাকতো মীম।
শুরুর দিকে হোস্টেলে কারোর সাথে পরিচয় না থাকার কারণে চুপচাপ থাকত মেয়েটি।সবার থেকে আলাদা থাকত রুমের এক কোণে চুপটি করে বসে থাকত আর অন্য সবার কথা শুনতো -খুব একটা কথা বলত না কারো সাথে। মীমের জীবন বদলাতে শুরু করে যখন মীমের জীবনে কিছু খুব ভালো বন্ধু আসে। একা,শান্ত ও চুপচাপ থাকা মেয়েটি কখন যে চঞ্চল হয়ে উঠে সে নিজেও হয়তো জানে না। বন্ধুদের সাথে হাসিঠাট্টা ও দুষ্টমীতেই যেন কেটে যায় সারাটিদিন। জান্নাত ,সাফী ,তানিয়া, সায়লা মীমের খুব ভালো বন্ধু।
জান্নাত সবসময় বই নিয়েই পড়ার টেবিলে বসে থাকে। সাফী ফুরফুরা মেজারের একটি মেয়ে। তানিয়া চঞ্চল প্রকৃতির।সায়লা মায়ের মতই সবাইকে আগলে রাখে।মীমের এই বন্ধুগুলো থাকলে যেন মীমের এখন আর একাকিত্ব মনে হয়না।মীমের আরেকটা খুব ভাল বন্ধু হচ্ছে সূর্য। যে কিনা সবসময় দুষ্টুমি করেই থাকে। মীমকে না খেপালে যেন সূর্যের একটি দিনও পূর্ণ হয় না। সূর্য একটু দুষ্টু হলেও মনের দিক থেকে খুব ভাল। নিয়মিত মীমের ভালো মন্দের খোঁজ খবর রাখত।
সূর্য মীমকে মেহেক বলে ডাকত।সূর্য দুষ্টু হলেও মীমকে নিয়মিত বলত ভালমত পড়ালেখা কর।পড়লেই না তুই ভাল রেজাল্ট করবি রে পাগলি!! সূর্যের কথাটা মনে পড়তেই মীম ডায়েরিটা লেখা বন্ধ করে হঠাৎ করেই পড়ার টেবিলে বই নিয়ে পড়তে বসে পড়ল ………
Leave a Reply