মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন

এশিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেপনাস্ত্র স্থাপনে চায়নার উদ্বেগ

  • Update Time : শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪, ২.৪২ পিএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

ফিলিপাইনে ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল লঞ্চার স্থাপনে চায়না গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপাইনে ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল দিয়ে সামরিক মহড়া দেয় ।

মিডিয়া জানায়, সম্প্রতি ফিলিপাইনের লুজনে যুক্তরাষ্ট্র টাইফুন মিসাইল লঞ্চার দিয়ে সামরিক মহড়া সম্পন্ন করেছে। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনে চায়নার কূটনীতিকের কাছে এর বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চাইনিজ কূটনীতিক মিডিয়াকে বলেছেন, “ইন্দো প্যাসিফিকে এই ধরনরে রকেট লঞ্চার স্থাপন কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়ে বেইজিং  অসস্তি  প্রকাশ করেছে।”

জিয়াওডন লিয়াং, সিনিয়র এনালিস্ট এট দ্য আর্মস কন্ট্রোল এসাসিয়েশন, বলেন,“আগস্ট ২০১৯ এ ইন্টারমিডিয়েট-রেন্জ সিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি উঠিয়ে নেয়ার পর এটাই বিদেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম গ্রাউন্ড-বেজড মিসাইল স্থাপন করার উদাহরণ।”

এটা এখনো পরিস্কার নয় যে, লুজনে সালাকনিব ২৪ মহড়ার পরে  কোথায় টাইফুন মিসাইল লঞ্চার স্থাপন হবে।  সম্প্রতি জাপান-যুক্তরাষ্ট্রের ২+২ পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে দুেই পক্ষ জাপানের সাউথ-ওয়েস্ট আইল্যান্ডে তাদের উভয়ের উপস্থিতি বাড়াবে বলে সম্মত হয়েছেন।

আরেক চাইনিজ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানান, জাপানে মধ্য পাল্লার মিসাইলও স্থাপন হতে পারে যা উদ্বেগের বহি:প্রকাশ। বাইডেন ও শি নভেম্বরে সানফ্রানিসসকোর ফিলোলিতে সাক্ষাতের পর দুই দেশ তাদের সম্পর্ক দৃঢ় করার আশা করেছিলেন। সামরিক কর্মকর্তা আরো বলেন,“ফিলিপাইনে মিসাইল স্থাপনের কারনে সেই আশা ভন্ডুল হয়। এর মানে, সম্পর্ক উন্নয়নে এটা একটা অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়”।

ফিলিপাইনের সেনা মুখপাত্র কর্নেল ডেমালা মিডিয়াকে বলেন, এটা আশা করা যায় টাইফুন সেপ্টেম্বরে ফেরত যাবে। কিন্তু লোকাল মিডিয়া জানায় সেটি দীর্ঘ সময় নেবার সম্ভাবনা আছে। ওয়াশিংটনে চাইনিজ এমবাসির মুখপাত্র লিউ পেংগিউ বলেন, “এশিয়া প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়াম রেন্জ মিসাইল স্থাপনকে চায়না গভীরভাবে বিরোধীতা করে এবং ফিলিপাইনকে এই মিসাইল স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্যে চাপ দেয়।”

তিনি আরো বলেন, ফিলিপাইনের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল স্থাপন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জন্যে উদ্বেগের কারন। পাশাপাশি এ্িধিরনের প্রতিযোগিতা ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়ায়।

টাইফুন , দুই ধরনের মিসাইল স্থাপন করে: একটি হলো ১,৬০০ কিমি পাল্লার টমাহক ক্রুজ আরেকটি হলো ৩৭০ কিমি পাল্লার বহুমুখী স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল-৬। লিয়াং বলেন, “ টমাহক মিসাইল ফিলিপাইন থেকে চাইনিজ মেইনল্যান্ড পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে । এছাড়া এটি বিভিন্ন যুদ্ধ জাহাজকেও লক্ষ্য করে আক্রমন করতে পারে। এসএম-৬ একটি স্বল্প পাল্লার বহুমুখী মিসাইল যা নেভি এবং এয়ারফোর্সকে টার্গেট করতে পারে।”

দুটোই তাইওয়ান প্রণালীতে চায়নার এয়ার ডিফেন্স এলাকায় আঘাত করার সামর্থ্য রাখে। ফলে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল উস্থিতির সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। সেনাবাহিনী ওয়াশিংটন স্টেট, জার্মানী এবং হাওয়াইয়ে মাল্টি ডোমেইন টাস্ক ফোর্স স্থাপন করেছে কিন্তু স্থায়ীভাবে এখনো ইন্দো প্যাসিফিকে সেটি সম্ভব হয়নি।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ডিরেক্টর অব দি মিসাইল ডিফেন্স প্রজেক্ট টমাস কারাকো বলেন, চায়না মিডরেন্জ ক্যাপাবিলিটি সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে যা এর কৌশলগত কাজের নিশ্চয়তা।”

১৯৮৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আইএনএফ (INF Treaty) চুক্তি সই হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র তার সকল মিডরেন্জ এবং ইন্টারমিডিয়েট –রেন্জ মিসাইল ধ্বংস করে দেয়।চায়না এই চুক্তির সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় সে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপরে আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবে ২০০০ এর ও বেশী মিসাইল সংগ্রহ করে।

২০২৫ সালের বাজেট প্রস্তাবনায়, সেনাবাহিনী আগামী ৫ বছরের মধ্যে তার মিডরেন্জ ক্যাপাবিলিটি ব্যাটারিজের জন্যে আরো ৩৩০ টি নতুন ব্লক ভি  ভ্যারিয়েন্টের টমাহক ক্রুজ মিসাইল কিনবে ।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024